মেডিকেলে চান্স পেয়েও মেয়ের ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরিবার

0
176

দখিনের সময় ডেস্ক ||

দিনমজুর বাবার মেয়ে মোসাম্মৎ শাবনূর সুযোগ পেয়েছেন মেডিকেল কলেজে লেখাপড়া করার। এ খবরে খুশিতে আত্মহারা হয়েছিল শাবনূরের পরিবার। তবে তাদের এ খুশি চাপা পরেছে আর্থিক অস্বচ্ছলতায়।

পড়ালেখার খরচ চলবে কিভাবে আর ভর্তিই বা হবে কিভাবে এমন দুশ্চিন্তায় এখন দিশেহারা শাবনূরের বাবা দিনমজুর বাবুল মোল্লা ও মা সাবিনা বেগম।

বাবুল মোল্লা বলেন, ‘মাইয়াডা মেডিকেলে চান্স পাইছে। ক্যামনে যে অরে ভর্তি করমু আর ক্যামনে পড়ামু আল্লায় জানে’।

পিরোজপুরের স্বরূপকাঠী উপজেলার দক্ষিণ কামারকাঠী গ্রামের দিনমজুর বাবুল মোল্লার মেয়ে শাবনূর এ বছর জামালপুর শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। তার এ সাফল্যে এলাকাবাসীসহ পরিবারের সবাই খুশি।

শাবনূরের মা সাবিনা বেগম চোখের আনন্দাশ্রু মুছতে মুছতে বলেন, ‘এমন দিনও গ্যাছে ঘরে খাওন না থাহায় মাইয়াডা না খাইয়া  কলেজে গ্যাছে। অভাবের লইগ্যা মাইয়াড্যারে কলেজে আওয়া-যাওয়ার খরচও দেতে পারি নাই। রোজ এক ঘণ্টা হাইট্টা কলেজ করতো। এহন ক্যামনে যে পড়ামু বুঝি না।’

শিক্ষার্থী শাবনূর বলেন, ‘আমার বাবা একজন দিনমজুর। সে অনেক কষ্টে আমাদের সংসার চালান। আমি প্রাথমিক শিক্ষা জীবন থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত আসতে শিক্ষক-সহপাঠীদের অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতা পেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ‘ আমার কলেজের শিক্ষকরা প্রাইভেটেও টাকা নিতেন না। মেডিকেল কলেজে পড়াশুনার সুযোগ পেয়ে এখন ভর্তির জন্য অনেকটা দুশ্চিন্তায় আছি। মা-বাবা এ নিয়ে মন খারাপ করে আছে। আমি যদি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে পারি ডাক্তার হয়ে আমার বাবা-মায়ের মুখ উজ্জ্বল করব।’

শাবনূর কামারকাঠি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং স্বরূপকাঠী শহীদ স্মৃতি ডিগ্রি  কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ- ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে শাবনুর। জেএসসি ও পিএসসি পরীক্ষায়ও বৃত্তিসহ জিপিএ- ৫ পেয়েছিল।

এদিকে স্বরূপকাঠী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসেন সোমবার দুপুরে শাবনূরের বাড়ি গিয়ে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

নেছারাবাদ  উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোশারেফ হোসেন জানান, যারা উচ্চ শিক্ষায় আগ্রহী, সরকার সব সময় তাদের পাশে আছে। শাবনূর অত্যন্ত দরিদ্র পরিবার থেকে সংগ্রাম করে মেডিকেলে চান্স পেয়েছে শুনে আমরা আনন্দিত। শাবনূরকে ভর্তি হতে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন ইউএনও।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here