দখিনের সময় ডেস্ক:
পিরোজপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একমাত্র নারী চেয়ারম্যান প্রার্থী সালমা রহমান হ্যাপী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে তাকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক ও জেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান।
উল্লেখ্য, নিজের রাজনৈতিক পরিচয়ের বাইরে বড় পরিচয় হচ্ছে, সালমা রহমান সাহসী বাবার সন্তান এবং বীর মুক্তিযোদ্ধার বোন। এবারের জেলাপরিষদ নির্বাচনে সালমা রহমান আওয়ামী লীগ মনোনীত একমাত্র নারী প্রার্থী। তিনি পিরোজপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমানের স্ত্রী এবং জাতীয় মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য। সবচেয়ে বড় কথা তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ওমর ফারুকের বোন।
উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধে টগবগে তরুণ ওমর ফারুক ঘর থেকে বের হবার সময় মাকে বলেছিলো, মা তুমি ভাত রাধো, আমি ফিরে এসে খাবে। কিন্ত তার আর ফেরা হয়নি। ধরা পড়েন হানাদার পাকবাহিনীর হাতে। এ সময় তার কাছে বাংলাদেশের পতাকা ছিলো। তাকে ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ বলতে বলা হয়েছে। কিন্তু তিনি বলেছেন, ‘জয় বাংলা।’ বহু অত্যাচার করেও তাকে দিয়ে পাকিস্তান জিন্দাবাদ বলাতে পারেনি হানাদার কবাহিনী। এ অবস্থায় তারা উপর অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যায়। এমনকি তার মাথায় লোহার রড ঢুকিয়ে তাতে পাকিস্তানের পতাকা লাগিয়ে রাস্তায় দাড় করিয়ে রাথা হয়েছে। তবু ‘পকিস্তান জিন্দাবাদ’ বলেননি বীর মুক্তিযোদ্ধা ওমর ফারুক। হানাবাহিনী তাকে দিনের পর দিন অত্যাচার করে মেরে ফেলে। এই অসম সাহসী মুক্তিযোদ্দার বোন সালমা রহমান। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু নিহত হবার ঘটনায় রাগেক্ষোভে সরকারী চাকুরী ছেড়ে দিয়েছেন সালমা রহমানের বাবা।
এদিকে ওমর ফারুক ফিরে আসবে- এই আশায় সন্তানহারা মা আমৃত্যু দুমুঠো চাল বেশী রেঁধেছেন। আর সেই মাকে মায়া মমতা দিয়ে আগলে রেখেছেন তার আরএক সন্তান সালমা রহমান। তিনি দলে সক্রিয়তার পাশাপাশি জেলা মহিলা পরিষদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এখন তিনি নেতৃত্ব দেবেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হিসেবে।