দখিনের সময় ডেস্ক
চীনের ওপর নির্ভরশীলতা সৃষ্টি না করার জন্য পশ্চিমা দেশগুলোকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ন্যাটো মহাসচিব জেন্স স্টোলটেনবার্গ। গত সোমবার তিনি এই মন্তব্য করেন। এমন সময় তিনি এই মন্তব্য করলেন যখন ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে পশ্চিমারা রুশ জ্বালানিনির্ভরতা কমাতে চাইছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
স্পেন সফরে থাকা ন্যাটো মহাসচিব বলেন, আমরা দেখছি আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো, সাপ্লাই চেইন ও গুরুত্বপূর্ণ শিল্প খাত নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা জোরদার করছে চীন। জোট মিত্রদের তাদের সমাজ ও অবকাঠামো নিয়ে সতর্কতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন স্টোলটেনবার্গ। তিনি বলেন, চীনের বিরল খনিজ সব জায়গায় রয়েছে। এগুলো রয়েছে আমাদের ফোন, গাড়ি ও সামরিক সরঞ্জামে। স্বৈরাচারী শাসকদের আমরা এমন কোনো সুযোগ দিতে চাই না, যাতে করে তারা আমাদের দুর্বলতার সুযোগ নেয় এবং গোপনে ক্ষতিসাধন করতে পারে।
জুন মাসে গৃহীত ন্যাটোর একটি কৌশলপত্রে চীনকে জোটটির ‘স্বার্থ, নিরাপত্তা ও মূল্যবোধের’ জন্য একটি হুমকি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। চীনকে একটি অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তি, যে নিজের কৌশল, উদ্দেশ্য এবং সামরিক গঠন সম্পর্কে অস্বচ্ছতা বজায় রাখছে। এই কৌশলপত্র ন্যাটোর অবস্থানের প্রতিফলন। ২০১০ সালে গৃহীত জোটের কৌশলপত্রে চীনের কথা উল্লেখ করা হয়নি। তখন চীনকে পশ্চিমারা একটি বাণিজ্যিক অংশীদার ও উৎপাদন ঘাঁটি হিসেবে বিবেচনা করত।
এর আগে জুনে ন্যাটোর ভবিষ্যৎ কৌশলপত্রে চীনকে ‘মারাত্মক হুমকি’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে একমত হয় সামরিক জোটটির সদস্য দেশগুলো। স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে ন্যাটোর শীর্ষ সম্মেলনে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলেনবার্গ তখন বলেছিলেন, ‘আমরা এখন কৌশলগত প্রতিযোগিতার একটি যুগের মুখোমুখি। পারমাণবিক অস্ত্রসহ চীন তার বাহিনীগুলোকে উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী করে তুলছে। তাইওয়ানসহ প্রতিবেশীদের উসকানি দিচ্ছে দেশটি। চীন আমাদের শত্রু নয়। তবে যে মারাত্মক হুমকি দেশটি তৈরি করছে, সে বিষয়টি অবশ্যই আমাদের ভালোভাবে নজরে রাখতে হবে।’ ওই সময় ন্যাটোর এ হুশিয়ারিকে ‘একেবারেই অনর্থক’ বলে মন্তব্য করেছিল বেইজিং।
ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে চীন গোপনে মদদ দিচ্ছে বলে মনে করে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো। অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, চীন ও ইরান পেছনে না থাকলে এ যুদ্ধে রাশিয়া সেভাবে পেরে উঠত না।