দখিনের সময় ডেস্ক:
একের পর এক চমক দেখানো মরক্কো কাতার বিশ্বকাপে ইতিহাসই গড়ল। গ্রুপ পর্বে দুর্দান্ত সাফল্যের পর শেষ ষোলোতেও বিস্ময়ের জন্ম দিল আফ্রিকার দেশটি। নকআউপ পর্বের ম্যাচে শক্তিশালী স্পেনকে টাইব্রেকারে ৩-০ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে মরক্কো। নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের শেষ আটে উঠল দেশটি। ম্যাচের নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ে গোলশূন্য থাকার পর টাইব্রেকারের বাঁশি বাজান রেফারি। আর টাইব্রেকারেই বাজিমাত করেন মরক্কো গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনো। তিনি স্পেনের তিনটি শটই ঠেকিয়ে নায়ক বনে যান। শট তিনটি করেন যথাক্রমে পাবলো সারাবিয়া, কার্লোস সোলের ও সার্জিও বুসকেতস।
অন্যদিকে মরক্কো নিজেদের প্রথম দুটি শট থেকে গোল আদায় করে নেয়। গোল দুটি করেন আবদেলহামিদ সাবিরি ও হাকিম জিয়াস। তবে বাদর বেনউনের তৃতীয় শটটি রুখে দেন স্পেন গোলরক্ষক উনাই সিমোন। কিন্ত তারকা ফুটবলার আশরাফ হাকিমি দলের চুতুর্থ শটে গোল করলে ইতিহাস গড়ার উদযাপনে মাতে মরক্কো। মঙ্গলবার এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে খেলতে নামে দুদল। যদিও প্রথমার্ধে আক্রমণের বিবর্ণতা ঝেড়ে বিরতির পর তুলনামূলক ভালো খেলল স্পেন। সুযোগও পেল তারা, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা মিলল না। ‘ডেডলক’ ভাঙতে পারল না মরক্কোও। এরপর অতিরিক্ত সময়ে দুটি ভালো সুযোগ পায় মরক্কো। আর একেবারে অন্তিম মুহূর্তে গোল প্রায় পেয়িই গিয়েছিল স্পেন।
ম্যাচের ১১তম মিনিটে ফ্রি-কিক পায় মরক্কো। তবে আশরাফ হাকিমির শট গোলপোস্টের ওপর দিয়ে চলে যায়। তবে ২৭তম মিনিটে জর্দি আলবার ক্রস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দুরূহ কোণ থেকে পাশের জালে বল মারেন মার্কো আসেনসিও। দুই মিনিট আগে তাদের আরও একটি ভালো সুযোগ ছিল, কিন্তু অফসাইডের বাঁশি বাজানো হয়। বক্সের বাইরে থেকে খেলার ৩৩তম মিনিটে জোরাল শটে চেষ্টা করেন মরক্কোর মাসাওয়ি, কিন্তু রুখে দেন স্পেনের গোলরক্ষক উনাই সিমোন। বিরতির আগে সোফিয়ান বুফালের ক্রসে কাছ থেকে নায়েফ আগের্দের হেড উড়ে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে। স্পেন লক্ষ্যে প্রথম শট নিতে পারে ৫৫তম মিনিটে। বক্সের বাইরে বাঁ দিকে ফ্রি-কিকে ছোট করে পাস দেন আসেনসিও, আর ওলমোর সোজাসুজি শট ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনো।
বিরতির পর ৮০তম মিনিটে ডান দিক থেকে নিকো উইলিয়ামস দারুণ ক্রস বাড়ান বক্সে, প্রতিপক্ষের চ্যালেঞ্জে শট নিতে পারেননি ওলমো। ৬ মিনিট পর মরক্কো সুযোগ পায়। তবে ডান দিক থেকে হাকিম জিয়াশ ক্রসে দেন বক্সে, কিন্তু ওয়ালিদ ছেদদিরার শটে ছিল না জোর। নির্ধারিত সমযের পর যোগ করা প্রথম মিনিটে সলেরের ক্রসে ডি-বক্সে মোরাতার হেড লক্ষ্যে থাকেনি। শেষ মুহূর্তে স্পেন গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল। ওলমোর ফ্রি-কিকে বল যাচ্ছিল জালের দিকে, ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন গোলরক্ষক। এরপরই অতিরিক্ত সময়ের বাঁশি বাজে।
অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের শেষ দিকে বড় সুযোগ পায় মরক্কো। বলা চলে পুরো ম্যাচেরই সেরা সুযোগ। কাছ থেকে ছেদদিরার সোজাসুজি শট পা দিয়ে ফিরিয়ে স্পেনকে বাঁচান সিমোন। এরপর ছেদদিরা ১১৫তম মিনিটে আরেকটি সুযোগ পান ছেদদিরা। বল নিয়ে অনেকটা দৌড়ে বক্সে ঢুকে পড়েন তিনি, কিন্তু প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের চ্যালেঞ্জে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি। স্পেন দুই মিনিট পর পাল্টা আক্রমণে সুযোগ তৈরি করে। আনসু ফাতির উদ্দেশ্যে মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে এগিয়ে বক্সের সামনে থেকে শট না নিয়ে ভেতরে পাস দেন মোরাতা। তবে বল চলে যায় বাইরে। একেবারে শেষ গোল প্রায় পেয়েই গিয়েছিল স্পেন। পাবলো সারাবিয়ার ভলি পোস্ট ঘেঁসে বাইরে চলে যায়।