Home বরিশাল মেম্বারকে রামদা নিয়ে ধাওয়া করলেন চেয়ারম্যান

মেম্বারকে রামদা নিয়ে ধাওয়া করলেন চেয়ারম্যান

দখিনের সময় ডেস্ক:
বরিশালে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারি চাল আত্মসাতসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে প্রশাসনের কাছে আবেদন করায় ক্ষিপ্ত হয়ে বাচ্চু দেওয়ান নামে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্যকে (মেম্বার) রামদা নিয়ে ধাওয়া করেছেন চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা রাঢ়ী।
আজ শুক্রবার সকাল ৭টায় বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ১২ নম্বর দঁড়িচর খাজুরিয়া ইউনিয়নের স্টিমারঘাট বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।ভিডিওতে দেখা যায়, চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা রাঢ়ী বড় একটি রামদা হাতে নিয়ে মেম্বার মো. বাচ্চু দেওয়ানের দিকে তেড়ে আসেন। এ সময় বাচ্চুর ছেলেরা চেয়ারম্যানকে ধারাল অস্ত্রসহ জাপটে ধরেন।
মো. বাচ্চু দেওয়ান গণমাধ্যমকে জানান, আজ সকাল ৭টায় বাড়ির পাশের স্টিমারঘাট বাজারে চা খেতে যান তিনি। এ সময় সেখানে অবস্থান করছিলেন চেয়ারম্যান মোস্তফা। তিনি তাকে দেখেই গালিগালাজ করতে থাকেন। একপর্যায়ে তার সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হলে চেয়ারম্যান দৌড়ে বাড়ি থেকে একটি রামদা নিয়ে বাজারের মাঠে তাকে কোপাতে তেড়ে আসেন। রামদাসহ তার ছেলে কলেজছাত্র তুহিন ও আকবর চেয়ারম্যানকে জাপটে ধরলে রামদা ফেলে সটকে পড়েন চেয়ারম্যান।
তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি চেয়ারম্যানের অনিয়মের বিরুদ্ধে আমরা দশ মেম্বার অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছি। আর তা নিয়ে আগামীকাল শনিবার আমাদের সংবাদ সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে। চেয়ারম্যানের অনিয়ম-দুর্নীতি যাতে গণমাধ্যমে প্রকাশ করতে না পারি এই জন্যই মূলত আমাকে মেরে ফেলার জন্য হামলা চালিয়েছে।’প্রত্যক্ষদর্শী স্টিমারঘাট বাজারের চা-দোকানি তোফায়েল রাঢ়ী বলেন, বাজারে মেম্বারকে দেখেই গালাগালি করেন চেয়ারম্যান। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এ সময় চেয়ারম্যানের হাতে রামদা ছিল।
এ ঘটনায় চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা রাঢ়ী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আজ সকালে বাজারের মাঠে আমাকে বাচ্চু দেওয়ান মারধর করেছেন। আমি এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়েছি।’রামদা হাতে তেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ওই রামদা আমার নয়, বাচ্চু মেম্বারের। এর আগেও আমি বাচ্চু মেম্বারের অবৈধ জাল পুড়িয়ে দেওয়ার কারণে হামলার শিকার হয়েছি।’
মেহেন্দীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, সম্প্রতি মোস্তফা রাঢ়ীর বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছেন মেম্বাররা। ওই ঘটনার জেরে মোস্তফার সঙ্গে মেম্বার বাচ্চুর তর্কাতর্কি হয়। পরে চেয়ারম্যান রামদা নিয়ে মেম্বারের দিকে তেড়ে যান। ভিডিও ছড়িয়ে পড়া প্রসঙ্গে ওসি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের নেতারা জনগণের প্রতিনিধি। তাই এ বিষয়ে মন্তব্য করা যাবে না। দুই পক্ষের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, চেয়ারম্যান মোস্তফা রাঢ়ী কয়েকবছর আগে স্থানীয় এক মসজিদের ইমামকে আটকিয়ে গলায় জুতার মালা পড়িয়ে ভিডিও করে ভাইরাল করে। ওই ঘটনায় চেয়ারম্যান কারাগারেও ছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

নিজের চেয়ার ঠিক রাখতেই ব্যস্ত পুলিশ কর্মকর্তারা

দখিনের সময় ডেস্ক: জুলাই ২৪-এর আন্দোলনে গণহত্যার জন্য একক বাহিনী হিসেবে পুলিশকে দায়ী করা হয়। মানুষের ক্ষোভের আগুনে পুড়েছে বাহিনীটির শতশত থানা, যানবাহন। জীবন গেছে...

সংস্কারের আগে নির্বাচন করলে কখনোই সংস্কার হবে না: তোফায়েল

দখিনের সময় ডেস্ক: সংস্কারের আগে নির্বাচন করলে আর কখনোই সংস্কার হবে না। জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন সদস্য...

না ভোট ফিরিয়ে আনার সুপারিশ সংস্কার কমিশনের

দখিনের সময় ডেস্ক: সরাসরি রাষ্ট্রপতির নির্বাচন, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কোনো প্রার্থী নির্বাচিত না হওয়া, না ভোট ফিরিয়ে আনা ও অর্থের উৎসের স্বচ্ছতা নিশ্চিতসহ বেশ কয়েকটি সুপারিশ...

সুযোগ পেলে গলা চেপে ধরবে আ.লীগ: রিজভী

দখিনের সময় ডেস্ক: গণহত্যার জন্য বর্তমানে আওয়ামী লীগ ক্ষমা চাওয়ার কথা বললেও, সুযোগ পেলে আবারও তারা মানুষের গলা চেপে ধরবে। এমনটাই মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র...

Recent Comments