শেখ হাসিনার সরকারের সময়কালের উচ্চ প্রবৃদ্ধির গল্পকে ‘ভুয়া’ আখ্যা দিয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সুইজারল্যান্ডে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের সম্মেলনে রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “হাসিনা দাভোসে এসে উন্নয়নের গল্প শোনাতেন, কিন্তু কেউ তা যাচাই করত না। এটি একটি ভুয়া প্রবৃদ্ধি।” ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেন ড. ইউনূস। তার দাবি, হাসিনার শাসনামলে দেশে দুর্নীতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং অর্থপাচারের মতো অপরাধ হয়েছে।
হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগের তালিকা দীর্ঘ। গণহত্যা, গুম, দুর্নীতি এবং বাকস্বাধীনতা দমনের মতো অভিযোগে তদন্ত চলছে। ড. ইউনূস বলেন, “তার (হাসিনার) শাসনামলের উন্নয়নের গল্প সম্পদ বৈষম্যকেই বাড়িয়েছে। আমি এমন একটি অর্থনীতির পক্ষে, যা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ঘটাবে এবং সম্পদের কেন্দ্রীকরণ এড়াবে।” ২০০৯ সালে ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে যাত্রা শুরু করে ২০১৭-১৮ সালে তা ৮ শতাংশে উন্নীত হওয়ার দাবি করা হলেও ড. ইউনূস এসব পরিসংখ্যানকে বিশ্বাসযোগ্য মনে করেন না।
হাসিনার পতনের পর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে ড. ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশ ছাড়া ভারতের মানচিত্র অসম্পূর্ণ। কিন্তু নয়াদিল্লি হাসিনার প্রতি অন্ধ সমর্থন দেখিয়ে ভুল করেছে।” ভারতে আশ্রিত হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “তার অপরাধের বিচার হওয়া প্রয়োজন।” চীনকে বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদী বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে তিনি ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক আরও মজবুত করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।