র্যাব প্রসঙ্গে একটু পেছনে ফেরা যাক। প্রায় দুই যুগ আগে ২০০১ সালের অক্টোবরের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন হয় বিএনপি। এ বিএনপি-জামায়াত সরকারকে বিব্রত করার নেপথ্য খেলা ছিল সূচনালগ্ন থেকেই। ফলে শুরুতেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকে। খোদ রাজধানীর রাজপথে ঘটতে থাকে একের পর এক হত্যাকাণ্ড। এদের মধ্যে কয়েকজন ওয়ার্ড কমিশনারও ছিলেন।
একের পর এক খুনের ঘটনায় পরিস্থিতির দ্রুত অধিকতর অবনতি ঘটলে ২০০৩ সালের অক্টোবর মাসে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ‘অপারেশন ক্লিনহার্ট’ শুরু হয়। এতে প্রত্যাশিত মাত্রারও চেয়েও বেশি সুফল পাওয়া যায়। তিন মাসের মাথায় ২০০৪ সালের জানুয়ারি মাসে সেনাবাহিনী ফিরিয়ে নেওয়া হয় ব্যারাকে। পরিস্থিতি আবার অবনতির দিকে যেতে থাকে। এদিকে আগের সিদ্ধান্ত অনুসারে গঠিত র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ২০০৪ সালের ২৬ মার্চ কার্যক্রম শুরু করে।
এ সংস্থার কার্যক্রম শুরু হলে আইনশৃঙ্খলার বেশ উন্নতি হতে থাকে। জনমনে ফিরে আসে অভূতপূর্ব স্বস্তি। কিন্তু এ ধারায় ছন্দপতন ঘটে ক্রসফায়ারের পথ ধরে। র্যাবের বন্দুকযুদ্ধের সূচনা হয় শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হান্নানের কথিত ‘ক্রসফায়ারের’ মধ্য দিয়ে। সে সময় অনেক কুখ্যাত সন্ত্রাসী র্যাবের সঙ্গে ‘ক্রসফায়ারে’ নিহত হয়। এতে র্যাবের জনপ্রিয়তা আরও বেড়ে যায়। কোনো কোনো ‘ক্রসফায়ারের’ পর মিষ্টি বিতরণও করা হয়েছে। কিন্তু এ জনপ্রিয়তা একপর্যায়ে কুকর্মের আঁতুড়ঘর হয়ে ওঠে। এবং ‘ক্রসফায়ার’ কাণ্ড ঘিরে র্যাবের দানবীয় ইমেজ প্রতিষ্ঠিত। যে পথে জনপ্রিয়তা সেই পথেই সর্বনাশ!
# দৈনিক কালবেলায় প্রকাশিত, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, শিরোনাম, ‘র্যাব যদি বিলুপ্ত হয়’
আগামী কাল, ‘সরকার ও ব্যক্তির লালশায় দানব হয়ে ওঠে র্যাব’