• ৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইউনূস-তারেক বৈঠক টার্নিং পয়েন্ট, নির্বাচন হতে পারে ফেব্রুয়ারিতে

দখিনের সময়
প্রকাশিত জুন ১১, ২০২৫, ১০:২৬ পূর্বাহ্ণ
ইউনূস-তারেক বৈঠক টার্নিং পয়েন্ট, নির্বাচন হতে পারে ফেব্রুয়ারিতে
সংবাদটি শেয়ার করুন...

আলম রায়হান:

যুক্তরাজ্য সফররত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক হতে যাচ্ছে ১৩ই জুন শুক্রবার লন্ডনের স্থানীয় সময় সকালে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা অবশ্য এই বৈঠকটিকে দেখছে দুইটি পক্ষের মধ্যে আস্থার সংকট কাটানোর উদ্যোগ হিসেবে। এমন এক সময়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের সাথে বিএনপির শীর্ষ নেতা তারেক রহমানের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে যখন আগামী জাতীয় নির্বাচনসহ বেশ কিছু ইস্যুতে বিএনপি ও সরকারের টানাপোড়েন বেশ স্পষ্ট।
প্রসঙ্গত, প্রকাশিত খবর অনুসারে এ বৈঠকের বিষয়ে সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ ও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে যোগাযোগও করা হয়েছে। এদিকে বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত খবরে সূত্রগুলো বলা হয়েছে, ‘প্রথম দিকে বিএনপির পক্ষ থেকে তারেক রহমান ও প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের ব্যাপারে অতটা আগ্রহ ছিল না। তবে নির্বাচন সময়ের প্রশ্নে আলোচনা হতে পারে, সেই প্রশ্ন থেকে শেষ পর্যন্ত দলটি এই বৈঠকে সম্মতি দিয়েছে।’
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ‘টার্নিং পয়েন্ট’ হিসবে বিবেচিত ইউনূস-তারেক বৈঠককে কী ফল বয়ে আনবে? বাংলাদেশের কোনও কোনও গণমাধ্যমের খবরে দাবি করা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার সাথে তারেক রহমানের এই বৈঠকে আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনের দাবি করা হতে পারে। অনেকে মনে করেন, অধ্যাপক ইউনূসের সাথে বিএনপির শীর্ষ নেতা তারেক রহমানের উল্লেখিত বৈঠক জাতীয়ভাবে এবং আন্তর্জাতিকভাবেও গুরুত্ববহ। এই মিটিংটা হলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যেতে পারে এবং অনেক কিছু সহজ হয়ে যেতে পারে, নতুন ডাইমেনশন সৃষ্টির সম্ভাবনা অনেক। এখন এটা নির্ভর করবে দুই নেতাদের মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমান কীভাবে পরিস্থিতি সম্ভাবনার দিকে নিয়ে যান।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও অধ্যাপক ইউনূস ও তারেক রহমান বৈঠকটিকে একটি মাইলফলক মনে করছেন। তারা বলছেন, গত কয়েক মাসে নানা ইস্যুতে সরকারের সাথে বিএনপির যে সম্পর্কের তিক্ততা তৈরি হয়েছে সেটি কাটতে পারে এই বৈঠকের মাধ্যমে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক কাজী মারুফুল ইসলামের মতে “বর্তমানে সরকারের সাথে বিএনপির যে আস্থার সংকট চলছে সেটা নিরসন হওয়া দরকার। তা দলের চেয়ে দেশের স্বার্থেই বেশি জরুরী”।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক মাসে ডিসেম্বরের মধ্যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিল বিএনপি। সর্বশেষ গত মাসে ঢাকায় এক সমাবেশ থেকে বিএনপি নেতা তারেক রহমান স্পষ্টভাবেই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বলেন, ‘ডিসেম্বরেই নির্বাচন হতে হবে’। বিএনপির এমন অনড় অবস্থানের মধ্যেই গত ছয়ই জুন কোরবানির ঈদের আগের দিন সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এ ভাষণে তিনি ঘোষণা করেন, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধের যে কোনো দিন।
প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণের পর ওই রাতেই স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডেকে সরকারের এই ঘোষণার কড়া প্রতিক্রিয়া জানায় বিএনপি। সেখানে দলটির পক্ষ থেকে এপ্রিলে নির্বাচনের বিষয়ে দলের আপত্তির কথা জানানো হয়। আগামী নির্বাচন নিয়ে বিএনপির এমন অবস্থানের মধ্যেই লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠকে বসছেন তারেক রহমান। প্রশ্ন উঠছে এই বৈঠকের পর কী সরকার ও বিএনপি আগামী নির্বাচন নিয়ে তাদের অনড় অবস্থান থেকে সরে আসবে?