মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার বিষয়টি চেপে যান অনেকেই

বিশেষ প্রতিনিধি:

এখনও অনেকেই মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে পেশাদার চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে চান না। সমস্যার শুরুতে নিজে যেমন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়ার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেননা, স্বজনরাও বিষটি এড়িযেন যান। কেউ আবার প্রকাশ্যেই বলেন, ‘এমনটা সবারই হয়, মানসিক রোগ বলে কিছু নেই।’ অনেকের সমস্যা শরু হয় টিন-এইজ থেকেই। এ সময় বিষণ্ণ থাকে, মেজাজ খিটখিটে থাকে, সবাই মনে করে, জেদি-বদমেজাজি। কিন্তু আসলে তা নয়, এটি মানসিক রোগ।

সবশেষ ২০১৮-১৯ সালের মানসিক স্বাস্থ্য জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার ১৭% বা ২ কোটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ নানা ধরনের মানসিক রোগে আক্রান্ত। এবং ১০০ জনের মধ্যে ৭ জন ভুগছেন বিষণ্ণতায়। অথচ অবাক করা বিষয় হল, এর ৯২%-ই রয়েছেন চিকিৎসার আওতার বাইরে। অন্যদিকে ১৩.৬% শিশুও মানসিক রোগে ভুগছে বলে জরিপে উঠে এসেছে, যাদের ৯৪% কোন চিকিৎসা পাচ্ছে না।এছাড়া চিকিৎসাবিদ্যার স্নাতক পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি উপেক্ষিত থাকায় অন্যান্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদেরও এ বিষয়ে জানার ঘাটতি রয়েছে।

মানসিক সমস্যা প্রকট আকার না নেয়া পর্যন্ত বেশিরভাগই চিকিৎসকের কাছে আসতে চান না। যেকোনো শারীরিক রোগকে স্বাভাবিক দৃষ্টিতে দেখলেও মানসিক সমস্যাকে বাংলাদেশে এখনও ঠাট্টা, বিদ্রূপ বা হালকা বিষয় হিসেবে গণ্য করা হয়। মানুষ তখনই ডাক্তারের কাছে যায় যখন পরিস্থিতি অনেক গুরুতর হয়। কেউ আছেন কুসংস্কারের কারণে ডাক্তারের কাছে যেতে চান না। আবার অনেকে জানেনই না যে তিনি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন।

মানসিক রোগের অনেক শারীরিক প্রভাব আছে। সেইসব শারীরিক লক্ষণ দেখা দিলেই মানুষ ডাক্তারের কাছে যান। এই সমস্যার মূল কারণ যে মানসিক স্বাস্থ্য-এটা রোগীরা জানবেন না স্বাভাবিক। কিন্তু চিকিৎসকরাও এটা বুঝতে পারেন না। কারণ এমবিবিএস পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি পড়ানো হয় না। ফলে এমবিবিএস ডাক্তাররা রোগীর মূল সমস্যা বুঝে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে রেফার করতে পারেন না।

(আগামী কাল পড়ুন, “সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে মানসিক সমস্যা গুরুতর হতে পারে”)