দখিনের সময় ডেক্স:
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রস্তুতকারী ব্যক্তির নাম, পদবি, মোবাইল ফোন নম্বরসহ সিল ও তার সংক্ষিপ্ত স্বাক্ষর ব্যবহার করাসহ ৭ দফা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রোগ্রাম অফিসার আওলাদ হোসেনকে ভুয়া পরোয়ানায় আটকের বৈধতা নিয়ে তার স্ত্রীর করা এক রিটের প্রেক্ষিতে এসব নির্দেশনা সংবলিত সিদ্ধান্ত দিয়েছে উচ্চ আদালত।
বুধবার (১৪ অক্টোবর) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব নির্দেশনা দেন। আদালত তার অপর নির্দেশনায় এ আদেশ বাস্তবায়নের জন্য আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব এবং আইজিপি ও আইজি প্রিজন্সসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দিয়েছেন।
গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রোগ্রাম অভিসার আওলাদ হোসেনকে একের পর এক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেখিয়ে এক কারাগার থেকে আরেক কারাগারে এবং এক আদালত থেকে অন্য আদালতে হাজির করা হচ্ছে, এমন অভিযোগ তোলেন আওলাদের স্ত্রী। আওলাদকে বেআইনিভাবে আটক রাখা নিয়ে তাকে হাইকোর্টে হাজির করার জন্য নির্দেশনা চেয়ে রিট করেন তিনি। পরে ভুয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কারণে হয়রানি বন্ধে সাত দফা নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট।
আদালত যে সব নির্দেশনা দিয়েছেন তার মধ্যে: গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যুর সময় পরোয়ানা প্রস্তুতকারী ব্যক্তিকে ফৌজদারি কারাবিধির নির্ধারিত ফরমে সুস্পষ্টভাবে সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে। এসব তথ্যের মধ্যে থাকবে যে ব্যক্তি পরোয়ানা কার্যকর করবেন, তাদের নাম, পদবি ও ঠিকানা। যার প্রতি পরোয়ানা ইস্যু করা হচ্ছে তার নাম ও ঠিকানা এবং সংশ্লিষ্ট মামলার নম্বর ও ধারা। সংশ্লিষ্ট বিচারকের নাম ও পদবির সিল
সাত দফা নির্শনার অন্যগুলো হচ্ছে:
১. যে ব্যক্তি পরোয়ানা কার্যকর করবেন, তার নাম, পদবী ও ঠিকানা সুনির্দিষ্টভাবে পরোয়ানায় উল্লেখ করতে হবে। (খ) যার প্রতি পরোয়ানা জারি করা হচ্ছে তার নাম ও ঠিকানা, মামলার নম্বর ও ধারা (জি আর/নালিশী মামলার নম্বর) সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। (গ) সংশ্লিষ্ট জজ (বিচারক)/ম্যাজিস্ট্রেটের স্বাক্ষরের নিচে নাম ও পদবীর সীল থাকতে হবে। (ঘ) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রস্তুতকারী ব্যক্তির (অফিস স্টাফ) নাম, পদবী ও মোবাইল ফোন নম্বরসহ সীল ও তার সংক্ষিপ্ত স্বাক্ষর ব্যবহার করতে হবে।
২. গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রস্তুত করা হলে পিয়নবইতে এন্ট্রি করে বার্তা বাহকের মাধ্যমে তা পুলিশ সুপারের কার্যালয় কিংবা সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠাতে হবে। এক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করা যেতে পারে।
৩. স্থানীয় অধিক্ষেত্র বাইরের জেলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করার ক্ষেত্রে পরোয়ানা সিলমোহর ছাপ দিয়ে সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পাঠাবেন।
৪. সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিলমোহরকৃত খাম খুলে প্রাপ্ত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পরীক্ষা করে এর সত্যতা নিশ্চিত করবে। সন্দেহের উদ্রেক হলে মোবাইল ফোনে সত্যতা নিশ্চিত হতে হবে।
৫. গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করার জন্য পরোয়ানা গ্রহণকারী কর্মকর্তা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাওয়ার পর তা কার্যকর করার আগে আবার পরীক্ষা করে যদি কোনও সন্দেহের উদ্রেক হয়, পরোয়ানা প্রস্তুতকারীর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে এর সঠিকতা নিশ্চিত হতে হবে।
৬. গ্রেপ্তারি পরোয়ানা অনুসারে গ্রেপ্তারের পর সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাকে আসামিদের আইন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আদালতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাসহ উপস্থাপন করতে হবে। আদালত আসামিদের জামিন না দিলে আদেশের কপিসহ হেফাজতি পরোয়ানা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠাতে হবে।
৭. সংশ্লিষ্ট জেল সুপার কিংবা অন্য কোনও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেফাজতি পরোয়ানামূলে প্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট আসামিদের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যুকারী আদালতে এই মর্মে অবিলম্বে অবহিত করবেন যে, কোন থানার কোন মামলার সূত্রে বা কোন আদালতে কোন মামলায় বর্ণিত আসামিদের ওই আদালতের ইস্যুকৃত পরোয়ানামূলে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।