দখিনের সময় ডেক্স:
স্কুলপড়ুয়া কিশোরের লাশ যখন উদ্ধার করা হয়, তখন বন্ধুর জন্য কান্নাকাটি করতে থাকে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি কিশোর। শোকার্ত মনে সে তার বন্ধুর জানাজা ও দাফন-কাফনেও অংশ নেয়। বন্ধুর মৃত্যুতে বন্ধু কান্নাকাটি করবে, জানাজায় অংশ নেবে- এটিই স্বাভাবিক। কিন্তু দেখাগেলো, খুন হওয়া বন্ধুর জন্য অতি কান্নাকাটি করা কিশোরটি আসলে খুনি।
দুজনই কিশোর। একজন স্কুলছাত্র (১৩), আরেকজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি (১৫)। তারা বন্ধু। পাশাপাশি বাসা। সেই সুবাদে প্রায়ই আড্ডা দেয় তারা। কিছুদিন আগে একজনের সঙ্গে আরেকজনের কথা–কাটাকাটি হয়। কথা–কাটাকাটির জেরে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি কিশোর তার স্কুলপড়ুয়া বন্ধুকে খুনের ফন্দি আঁটে। সেই মতো একদিন স্কুলপড়ুয়া বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে ছুরি কেনে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি কিশোর। পরে স্কুলপড়ুয়া বন্ধুকে ডেকে পাহাড়ের চূড়ায় নিয়ে তাকে ছুরিকাঘাতে খুন করে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি কিশোর। পরে সে ফিরে এসে তার রক্তমাখা পোশাক পরিবর্তন করে ঘুমিয়ে পড়ে।
স্কুলছাত্র কিশোর খুনের রহস্য উদ্ঘাটন করে পুলিশ। চট্টগ্রাম নগরে স্কুলপড়ুয়া মো. রাসেল হত্যায় তার বন্ধু এক ইলেকট্রিক মিস্ত্রি কিশোরকে পুলিশ বৃহস্পতিবার(৬আগস্ট) গ্রেপ্তার করেছে । সন্ধ্যায় সে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে খুনের বর্ণনা দিয়েছে।
গত ৩ আগস্ট রাত সাড়ে আটটার দিকে নগরের খুলশী থানার পশ্চিম জালালাবাদ শাকবাজার–সংলগ্ন একটি পাহাড় থেকে মো. রাসেল ১৩ নামের এক স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয় কৃষ্ণচূড়া আদর্শ বিদ্যানিকেতনে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিলো রাসেল। রাসেল জালালাবাদ হাউজিং সোসাইটির বালুরপাড় প্রিন্সের কলোনির হুমায়ুন কবিরের ছেলে।
ইলেকট্রিক মিস্ত্রি কিশোর জবানবন্দিতে বলেছে, রাসেল বন্ধুদের মধ্যে কর্তৃত্ব করত। বিষয়টি পছন্দ করত না সে (ইলেকট্রিক মিস্ত্রি কিশোর)। কিছুদিন আগে তার সঙ্গে রাসেলের কথা–কাটাকাটি হয়। গত ৩১ জুলাই বিকেলে রাসেলকে সঙ্গে নিয়ে নগরের নিউমার্কেট থেকে সে একটি ছুরি কিনে নিয়ে আসে। এদিন সন্ধ্যায় সে রাসেলকে বলে, পাহাড়ে চার হাজার টাকা লুকিয়ে রেখেছে। টাকা আনার জন্য সে তার সঙ্গে রাসেলকে যেতে বলে। রাসেল বন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে পাহাড়ে যায়। যাওয়ার পর মাটি থেকে একটি প্যাকেট তুলতে বললে রাসেল একটু কাত হয়। এ সময় রাসেলকে মাটিতে ফেলে তার পেটে ছুরিকাঘাত করে সে। রাসেলের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর ইলেকট্রিক মিস্ত্রি কিশোর রক্তমাখা কাপড় নিয়ে বাসায় চলে আসে। কেউ যাতে সন্দেহ না করে, সে জন্য রাসেলের লাশ উদ্ধার হওয়ার পর তার জানাজা ও দাফনে সে অংশ নেয়।