Home শীর্ষ খবর আবদুল গাফফার চৌধুরী আর নেই

আবদুল গাফফার চৌধুরী আর নেই

দখিনের সময় ডেস্ক:

‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানের রচয়িতা বিশিষ্ট সাংবাদিক, গীতিকার, কলামিস্ট ও সাহিত্যিক আবদুল গাফফার চৌধুরী আর নেই। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে লন্ডনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)

বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের উলানিয়ার চৌধুরীবাড়িতে ১৯৩৪ সালের ১২ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন আবদুল গাফফার চৌধুরী। তার বাবা হাজী ওয়াহিদ রেজা চৌধুরী ও মা জহুরা খাতুন। ১৯৫০ সালে গাফফার চৌধুরী পরিপূর্ণভাবে কর্মজীবন শুরু করেন। এ সময়ে তিনি ‘দৈনিক ইনসাফ’ পত্রিকায় সাংবাদিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। মহিউদ্দিন আহমদ ও কাজী আফসার উদ্দিন আহমদ তখন ‍‘দৈনিক ইনসাফ’ পরিচালনা করতেন। ১৯৫১ সালে ‘দৈনিক সংবাদ’ প্রকাশ হলে গাফফার চৌধুরী সেখানে অনুবাদকের কাজ নেন। এরপর তিনি বহু পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত হন। আবদুল গাফফার চৌধুরীর সাংবাদিকতা জীবন শুরু হয় বরিশালে। তখন বরিশালে দুটি পত্রিকা ছিলো, নকিব ও হিতৈষী। নকিবে এক সময় কবিতা লিখতেন কাজী নজরুল ইসলাম।

মাসিক সওগাত, দিলরুবা, মেঘনা, ইত্তেফাক, আজাদ, জেহাদ ও পূর্বদেশসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেন বরেণ্য এই সাংবাদিক। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে সপরিবারে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আগরতলা হয়ে কলকাতা পৌঁছান। সেখানে মুজিবনগর সরকারের মুখপত্র সাপ্তাহিক জয়বাংলায় লেখালেখি করেন। এ সময় তিনি কলকাতায় দৈনিক আনন্দবাজার ও যুগান্তর পত্রিকায় কলামিস্ট হিসেবেও কাজ করেন। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর দৈনিক জনপদ বের করেন।

১৯৭৩ সালে তিনি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলজিয়ার্সে ৭২ জাতি জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনে যান তিনি। দেশে ফেরার পর তার স্ত্রী গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে কলকাতা নিয়ে যান। সেখানে সুস্থ না হওয়ায় তাকে নিয়ে ১৯৭৪ সালের অক্টোবর মাসে লন্ডনে যান। এরপর তার প্রবাসজীবনের ইতিহাস শুরু হয়।

সাংবাদিকতার পাশাপাশি গল্প, উপন্যাস, স্মৃতিকথা, ছোটদের উপন্যাসও লিখেছেন তিনি। ‘চন্দ্রদ্বীপের উপাখ্যান’, ‘সম্রাটের ছবি’, ‘ধীরে বহে বুড়িগঙ্গা’, ‘বাঙালি না বাংলাদেশী’সহ তার প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা প্রায় ৩০। এছাড়া তিনি কয়েকটি পূর্ণাঙ্গ নাটক লিখেছেন। এর মধ্যে আছে ‘পলাশী থেকে ধানমন্ডি’, ‘একজন তাহমিনা’ ও ‘রক্তাক্ত আগস্ট’।

কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন গাফফার চৌধুরী। ১৯৬৩ সালে ইউনেস্কো পুরস্কার পান তিনি। এছাড়া বাংলা একাডেমি পদক, একুশে পদক, শেরেবাংলা পদক, বঙ্গবন্ধু পদকসহ আরও অনেক পদকে ভূষিত হয়েছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

রিকশাচালকদের ছাতা, স্যালাইন ও পানির কন্টেইনার দিলেন মেয়র আতিক

দখিনের সময় ডেস্ক: তীব্র দাবদাহে রিকশা চালকদের পাশে দাঁড়াতে বিনামূল্যে ছাতা বিতরণ করলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। তিনি আজ রবিবার বেলা...

‘গরমে’ অসুস্থ হয়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু

দখিনের সময় ডেস্ক: যশোরে অসুস্থ হয়ে আহসান হাবীব নামের এক স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। আজ রবিবার সকাল ৯টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। তবে পরিবারের সদস্যরা দাবি...

তিন দিনের হিট অ্যালার্ট আজ থেকে শুরু

দখিনের সময় ডেস্ক: তীব্র হতে অতিতীব্র তাপদাহে জনজীবন কাহিল। পুড়ছে পুরো দেশ, বিপর্যস্ত জনজীবন। চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকায় পঞ্চম দফায় হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।...

বাবর-শাহিনের নৈপুণ্যে সিরিজ হার এড়াল পাকিস্তান

দখিনের সময় ডেস্ক: ঘরের মাঠে তুলনামূলক দুর্বল স্কোয়াড নিয়ে আসা নিউজিল্যান্ডের কাছে প্রায় সিরিজ হারতে বসেছিল পাকিস্তান। সেখান থেকে দুর্দান্ত বোলিংয়ে পাকিস্তানকে কক্ষপথে ফিরিয়েছেন শাহিন...

Recent Comments