• ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খালেদা জিয়ার লন্ডনযাত্রা পিছিয়ে যাচ্ছে

দখিনের সময়
প্রকাশিত ডিসেম্বর ৫, ২০২৫, ১৩:৫৯ অপরাহ্ণ
খালেদা জিয়ার লন্ডনযাত্রা পিছিয়ে যাচ্ছে
সংবাদটি শেয়ার করুন...
দখিনের সময় ডেস্ক:
কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স না পৌঁছানোয় খালেদা জিয়ার লন্ডন যাওয়া পিছিয়ে যাচ্ছে। এ তথ্য বিএনপির অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ থেকে দেওয়া এক পোস্টে জানানো হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্ধৃতি দিয়ে এতে জানানো হয়, কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স শুক্রবার আসছে না। সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে এটি শনিবার পৌঁছাতে পারে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা যদি যাত্রার জন্য উপযুক্ত থাকে এবং মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত দিলে, তাহলে ইনশাআল্লাহ ৭ তারিখ (রোববার) তিনি লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেবেন। এর আগে, বৃহস্পতিবার দুপুরে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানিয়েছিলেন, শুক্রবার মধ্যরাত বা ভোরের দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিয়ে যাওয়া হবে।
পরে এদিন রাতে বিএনপির প্রেস উইং জানায়, কাতারের আমিরের যে বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়ার কথা রয়েছে সেটিতে কারিগরি সমস্যার কারণে এই যাত্রা দেরি হবে। এদিকে, খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান আজ শুক্রবার(৫ ডিসেম্বর) সকাল ১১টার দিকে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন। তিনি খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিতে এসেছেন বলে দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
এদিকে খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঢাকার বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে উপস্থিত আছেন।
উল্লেখ্য, বহু বছর ধরেই খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস এবং চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। ঢাকায় নিজের বাসায় থাকা অবস্থাতেই ২০২১ সালের মে মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নেন তিনি। তখনো শ্বাসকষ্টে ভোগার কারণে তাকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে থেকে চিকিৎসা নিতে হয়েছিল। এরপর ২০২৪ সালের জুনে তার হৃদপিণ্ডে পেসমেকার বসানো হয়। তখনো তিনি মূলত হার্ট, কিডনি ও লিভারসহ বিভিন্ন ধরনের রোগে ভুগছিলেন, যা তার শারীরিক অবস্থাকে জটিল করে তুলেছিলো।
এর আগে থেকেই তার হার্টে তিনটি ব্লক ছিল। আগে একটা রিংও পরানো হয়েছিল। এছাড়া ২০২৪ সালের জুনে পোর্টো সিস্টেমেটিক অ্যানেসটোমেসির মাধ্যমে খালেদা জিয়ার লিভারের চিকিৎসাও দেয়া হয়েছে বিদেশ থেকে ডাক্তার এনে। আওয়ামী লীগ আমলে ২০১৮ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলো আদালত, তারপর থেকে প্রথমে কারাগারে বিশেষ ব্যবস্থায় ও পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। দুর্নীতির আরেকটি মামলাতেও তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে হাসপাতালে থাকা অবস্থাতেই নির্বাহী আদেশে বিশেষ শর্তে মুক্তির পর তিনি গুলশানের বাসায় উঠেন। ২০২৪ সালে অগাস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ছয়ই অগাস্ট রাষ্ট্রপতির নির্বাহী আদেশে তাকে সব দণ্ড থেকে পুরোপুরি মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারিতেই তিনি চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান। সবশেষ ২১শে নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর তিনি আরও অসুস্থ হয়ে যান ও তার শ্বাসকষ্ট তীব্র হয়ে ওঠে বলে জানা যায়। এ অবস্থায় গত ২৩শে নভেম্বর তাকে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে নেওয়ার পর জানা যায় যে তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।