Home অন্যান্য গণমাধ্যম দৃষ্টান্ত হতে পারেন সাংবাদিক আনিসুর রহমান স্বপন

দৃষ্টান্ত হতে পারেন সাংবাদিক আনিসুর রহমান স্বপন

দখিনের সময় ডেস্ক:

একজন সাংবাদিককে সব বিষয়ে প্রচুর পড়ালেখা করতে হয়। এ ব্যাপারে দৃষ্টান্ত হতে পারেন আনিসুর রহমান খান স্বপন। তিনি ইংরেজি দৈনিক নিউ এজ এবং ঢাকা ট্রিবিউন’র সিনিয়র রিপোর্টার। তিনি কাজ করেন বরিশালে থেকে।

প্রচার বিমুখ, অন্তর্মুখী, বইপোকা ব্যক্তি আ.ব.ম. আনিসুর রহমান খান স্বপন ১৯৫৭ সালের ৩০ জানুয়ারি ঢাকার ১৩ নম্বর নয়া পল্টনে নানা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ক্ষিরাকাঠি গ্রামে হলেও বেড়ে ওঠা বরিশাল শহরে। বাবা মো: ইসমাইল খান আইনজীবী ছিলেন এবং মা আয়েশা বেগম (হেলেন)।

বরিশালের সিস্টার্স ডে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে আনিসুর রহমান খান স্বপনের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা জীবনের শুরু। এরপর বরিশাল ব্রজমোহন বিদ্যালয় থেকে ১৯৭১ সালে (১৯৭২ সালে অনুষ্ঠিত) এসএসসি, বরিশাল ব্রজমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে ১৯৭৩ সালে এইচএসসি, একই প্রতিষ্ঠান থেকে ১৯৭৬ সালে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক (সম্মান ) এবং ১৯৭৭ এ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী দীন মুহম্মদের তত্ত্বাবধানে কথা সাহিত্যিক আবুল মনসুর আহমদের ভাষা চিন্তার উপর কিছুদিন এম ফিল এবং পশ্চিম বঙ্গের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. পবিত্র সরকারের তত্ত্বাবধানে বরিশালের আঞ্চলিক ভাষার উপর পিএইচডি পর্যায়ে গবেষণা করেন। তবে তা অসমাপ্ত থেকেছে।

আনিসুর রহমান খান স্বপন ১৯৮৬ সালে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের তেহরানে চলে যান এবং ১৯৯৬ পর্যন্ত সেখানে ছিলেন।তখন তিনি ইসলামিক প্রপাগেশন অর্গানাইজেশনে অনুবাদক, রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগে ঘোষক, সংবাদ পাঠক, সম্পাদক ও ভারপ্রাপ্ত পরিচালকের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ‘ডেইলি তেহরান টাইমস’ পত্রিকায় কাজ করেন। এ ছাড়া পশ্চিমবঙ্গের পত্রিকা ‘প্রতিক্ষণ’, ‘বিভাব,’ ও ‘সাঙ্কৃতিক খবর’এ লেখালেখি করেছেন। ১৯৭০ সালে ঢাকা ডাইজেস্ট পত্রিকায় ‘সুইজারল্যান্ডের ঘড়ি শিল্প’ এবং ‘ হযরত মুসা ( আ:) এর সমুদ্র অতিক্রম ও ফেরাউনের শলিল সমাধি শিরোনামে দু’ টি অনুবাদ কর্মের মাধ্যমে তার লেখক জীবনের আত্মপ্রকাশ ঘটে।

তৎকালীন’ পাকিস্তানি খবর’ পত্রিকার লেখক ও বামপন্থী ( মার্ক্সবাদী) চিন্তা ধারায় বিশ্বাসী ( পরবর্তীতে পীরের খলিফা) ছোটচাচা বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুর রহমান খানের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণায় ছোটবেলা থেকেই আনিসুর রহমান খান স্বপনের লেখালেখি ও পাঠের অভ্যাস গড়ে ওঠে এবং তখন থেকেই বই সংগ্রহ করা তার প্রিয় শখে পরিণত হয়। বর্তমানে তার গ্রন্থাগারে বহু দুর্লভ বই রয়েছে।

১৯৭৩ সালে বরিশাল থেকে প্রকাশিত ‘সাপ্তাহিক গণডাক’ পত্রিকার মাধ্যমে আনিসুর রহমান খান স্বপনের সাংবাদিক জীবনের শুরু। এরপর ১৯৮২-১৯৮৪ পর্যন্ত জাতীয় দৈনিক আজাদ, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিদেশে পাড়ি জমানোর আগ পর্যন্ত স্থানীয় সাপ্তাহিক লোকবাণী, দেশে ফিরে এসে জাতীয় দৈনিক ভোরের কাগজ ও বাংলা ট্রিবিউন এ কাজ করেন। বর্তমানে ইংরেজি দৈনিক নিউ এজ এবং ঢাকা ট্রিবিউন-এর সাথে বরিশাল প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন। তিনি বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। আনিসুর রহমান খান স্বপন বাংলা একাডেমি, বরিশাল পাবলিক লাইব্রেরি ও এফপিএবি বরিশাল-এর আজীবন সদস্য।

প্রকাশিত গ্রন্থ ফার্সী ভাষার ব্যাকরণ (১৯৯০), পারস্যে রবীন্দ্র চর্চা (১৯৯৩), বাংলাদেশে ফার্সী ভাষা ও সাহিত্য (১৯৯৫), পারস্যে রবীন্দ্রনাথ (২০১৭), একটি মোরগের কাহিনী ( অনুবাদ,১৯৮৬), পারলৌকিক জীবন ( অনুবাদ: ১৯৮৭) এবং তাহেরেহ সফরজাদেহ: স্বনির্বাচিত কবিতা (অনুবাদ: ১৯৯১)

প্রকাশিতব্য গ্রন্থ মাহাদী সহেলির কবিতা (অনুবাদ), দারাশুকোর অনূদিত উপনিষদ, নাজিম হেকমতের কবিতা (অনুবাদ), কাহলিল জীব্রানের সুভাষিত সুবচন  ( অনুবাদ), জরথ্রুস্টের আবেস্তা এবং মওলানা রুমির নেই ও শ্রী কৃষ্ণের বাঁশি। পারস্যে রবীন্দ্রনাথ বইটির জন্য কলিকাতার ‘সাঙ্কৃতিক খবর’ গোষ্ঠী তাকে ভূমেন্দ্র গুহ স্মৃতি পুরস্কারে সম্মানিত করে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

গরমও আসে ভারত থেকে

দখিনের সময় ডেস্ক: বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে এখন বেশি তাপমাত্রা বিরাজ করছে। এর কারণ হিসেবে আবহাওয়াবিদরা জানান, বাংলাদেশের...

বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা, আর বাড়বে না তাপমাত্রা

দখিনের সময় ডেস্ক: নতুন করে তিন দিনের হিল অ্যালার্ট জারি হলেও চলতি সপ্তাহের শেষ থেকেই উত্তর পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে। আগামী মাসের শুরুতে মোটামুটি...

আমার লাশটি কাদের ভাইকে উৎসর্গ করে গেলাম

কলামের শিরোনাম দেখে যে কারও মনে একাধিক প্রশ্ন দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে দুটি প্রধান। এক. যেখানে সরকারি দফাদারকেও ‘স্যার’ বলার অঘোষিত বাধ্যবাধকতা দাঁড়িয়ে...

প্রতি বছর বিশ্বে সাপের কামড়ে মারা যায় দেড় লাখ মানুষ

দখিনের সময় ডেস্ক: প্রতি বছর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ৪৫ থেকে ৫৫ লাখ মানুষ সাপের কামড়ের শিকার হয়। এর মধ্যে ৮০ হাজার থেকে ১লাখ ৪০ হাজারের...

Recent Comments