আমরা অনেক সময় মানুষকে বলতে শুনি-ইশ! লোকটা হঠাৎ করে মরে গেল! অনেক সময় আমরা শুনি যে কেউ হয়তো ঘুমের মাঝেই হঠাৎ করে মারা গেছেন। কোনও প্রকার পূর্বসংকেত না থাকায় এগুলোকে আমাদের কাছে ‘হঠাৎ করে মারা যাওয়া’ মনে হলেও চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুযায়ী এর সুনির্দিষ্ট কিছু কারণ আছে।
মানুষ এভাবে মারা যায় মূলত কিছু শারীরবৃত্তীয় ব্যর্থতার কারণে। বিশেষজ্ঞদের মতে, হৃদপিণ্ড, মস্তিষ্ক আর শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যাগুলো হঠাৎ মৃত্যুর পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে। মানুষের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় অঙ্গ হৃৎপিণ্ড। হৃদপিণ্ডের চেয়ে হার্ট শব্দটিই আমাদের কাছে চেনা এখন। হার্ট বা হৃদযন্ত্রের কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালিত হওয়ার জন্য হার্টে পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহ দরকার হয়।
হার্টে রক্ত সরবরাহকারী রক্তনালী যদি বন্ধ হয়ে যায় এবং এর ফলে যদি রক্ত হার্টে পৌঁছাতে না পারে, তাহলে হার্টের মাংসপেশিতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছায় না। আর তখনই হয় হার্ট অ্যাটাক। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. খান আবুল কালাম আজাদ বলেন, “হয় কার্ডিয়াক ফেইলিউরে, অথবা রেস্পিরেটরি ফেইলিউরে মারা যাবে।” অর্থাৎ, হঠাৎ মৃত্যুর পিছনে ওই দু’টোর যে কোনও একটি কারণ থাকবেই। ডা. আজাদ বলছিলেন, হার্টের পেশীগুলো অকার্যকর হয়ে গেলে হঠাৎ মৃত্যু হতে পারে। অথবা, হৃদস্পন্দন কমে গেলে কিংবা ধমনী ব্লক হয়ে গেলেও মানুষ তৎক্ষণাৎ মারা যেতে পারে। তিনি জানান, হার্ট অ্যাটাক বা কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হওয়ার কয়েক মিনিটের মাঝে যদি রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া না হয়, তাহলে তা নিশ্চিত মৃত্যু ডেকে আনতে পারে।
ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের তথ্য অনুযায়ী, হার্ট অ্যাটাকের মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে সিপিআর বা কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন দিলে রোগীর বেঁচে যাওয়ার কিছুটা হলেও সম্ভাবনা থাকে। সিপিআর বিশ্ব জুড়ে বহুল প্রচলিত এক জরুরি চিকিৎসা পদ্ধতি। কেউ অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারালে, তার হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে গেলে বা শ্বাস প্রশ্বাস চালু না থাকলে, সেই ব্যক্তিকে সিপিআর দিতে হয়। হার্ট অ্যাটাকের কিছু লক্ষণ রয়েছে যেগুলো দেখা দিলে দেরি না করে দ্রুত হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এসব লক্ষণগুলো হচ্ছে– বুকের মাঝ বরাবর ব্যথা, বুকের মাঝ বরাবর ব্যথা, কাশি ও শ্বাসকষ্ট, এবং বমি বমি ভাব ও বমি।