মুক্তি পেয়েছেন বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলার ৩৫ আসামি। সোমবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে তারা গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পর্যায়ক্রমে বের হন। এ সময় কারা ফটকের সামনে তাদের আত্মীয়-স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার তাদের জামিন মঞ্জুর করেছিলেন আদালত।
কারাগার সূত্রে জানা যায়, জামিনের কাগজপত্র সোমবার দুপুরে কারাগারে এসে পৌঁছালে যাচাই-বাছাই শেষে সন্ধ্যায় কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে একজন, কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১ থেকে দুজন এবং পার্ট-২ থেকে ৩২ জন। তাদের মুক্তি দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট কারাগারের জেল সুপাররা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিডিআরের (বর্তমানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি) সদর দফতর ঢাকার পিলখানায় বিদ্রোহ হয়। সেদিন বিডিআরের কয়েক শ সদস্য পিলখানায় নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালান। প্রায় দুই দিনব্যাপী চলা বিদ্রোহে বিডিআরের তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। সব মিলিয়ে ৭৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পিলখানায় বিডিআরের বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালনরত সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যরাও সেদিন নৃশংসতার শিকার হন। পিলখানায় হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় ২০০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়। হত্যার ঘটনায় করা মামলায় আসামি করা হয় ৮৫০ জনকে।
দেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে আসামির সংখ্যার দিক থেকে এটিই সবচেয়ে বড় মামলা। বিচারিক আদালত ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর এই মামলার রায় দেন। রায়ে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রায়ে খালাস পান ২৭৮ জন। রায় ঘোষণার আগে চার আসামি মারা যান।