• ৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আগুন দেখেও চলে ‘মেহবুবা মেহবুবা’ গানে উদ্দাম নাচ, নাইটক্লাবে পুড়ে মরলো ২৫ জন

দখিনের সময়
প্রকাশিত ডিসেম্বর ৮, ২০২৫, ১০:৪২ পূর্বাহ্ণ
আগুন দেখেও চলে ‘মেহবুবা মেহবুবা’ গানে উদ্দাম নাচ, নাইটক্লাবে পুড়ে মরলো ২৫ জন
সংবাদটি শেয়ার করুন...
দখিনের সময় ডেস্ক:
ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গোয়ার ‘বার্চ বাই রোমিও লেন’ নাইটক্লাবে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় ২৫ জন নিহত ও ৬ জন আহত হয়েছেন। রোববার (৭ ডিসেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, আগুন লাগার সেই মুহূর্তটিতে প্রায় ১০০ পর্যটক ক্লাবের ঘোষিত ‘বলিউড ব্যাঞ্জার নাইট’ উপভোগ করছিলেন। একটি ভিডিওতে দেখা যায়-নির্ধারিত মঞ্চে একজন নৃত্যশিল্পী বলিউডের বিখ্যাত গান ‘মেহবুবা ও মেহবুবা’–র তালে নাচছেন। গানের সুর, নাচ, ভিড়ের উল্লাস, আর সংগীতশিল্পীদের বাদ্যযন্ত্রে একাকার হয়ে যায় অনুষ্ঠানের স্থানটি।
হঠাৎই মঞ্চের পেছনে থাকা কনসোলের ওপর আগুনের শিখা দেখা যায়। এই আগুন দেখে দর্শকেরা প্রথমে কোনো গুরুত্বই দেননি, বরং তাঁদের উচ্ছ্বাস আরও নতুন মাত্রা পায়। নৃত্যশিল্পীকে উদ্দেশ্য করে কেউ কেউ তো মজা করে বলেও ফেলেন-‘আগুন লাগিয়ে দিলেন আপনি!’ আগুন যখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে শুরু করে তখনই টনক নড়ে শিল্পী ও দর্শকদের। আগুনের শিখা বড় হতে থাকলে সংগীতশিল্পী, নৃত্যশিল্পী এবং দর্শকেরা আতঙ্কে চারদিকে সরে যেতে থাকেন। মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই আগুন ক্লাবের ছাদজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। অল্প সময়ের মধ্যেই এই অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারান ২৫ জন এবং আহত হন আরও ৬ জন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, ক্লাবের সংকীর্ণ প্রবেশপথ ও নির্গমন পথ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে। অনেকে বাইরে বের হতে পারলেও কিছু পর্যটক ক্লাবটির রান্নাঘরে গিয়ে আশ্রয় নেন এবং সেখানে আটকে যান। দমকল কর্মকর্তারা জানান, ক্লাব পর্যন্ত সরাসরি ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি পৌঁছানো সম্ভব হয়নি, কারণ রাস্তা খুবই সরু ছিল। ফলে প্রায় ৪০০ মিটার দূরে গাড়ি থামিয়ে পাইপ ও যন্ত্রপাতি নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে হয়-যা উদ্ধারকাজকে আরও বিলম্বিত করে। গোয়ায় এই ধরনের ঘটনা এই প্রথম বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে আগুন ওপরের তলায় শুরু হয়। সংকীর্ণ দরজা এবং বায়ু চলাচলের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায় অনেকে বের হতে পারেননি এবং দমবন্ধ হয়ে মারা গেছেন।’ ঘটনার পর ইতিমধ্যে ক্লাবের মালিক ও ব্যবস্থাপকদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে এবং তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি অগ্নি নিরাপত্তা বিধি লঙ্ঘনের বিষয়েও তদন্ত চলছে।