কেঁচো নিয়ে নিজের ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কয়েক দিন পর কুমিল্লার মডেলে ‘বর্ষার জলে মৎস্য চাষ’ প্রচেষ্টার আলে গিয়ে অনেক শামুকের খোসা দেখলাম। আনন্দের অনুভূতি হলো, কেঁচো না থাকলেও শামুক এখনো আছে! না হলে খোসা এলো কোথা থেকে? কিন্তু কিছু পরেই আতঙ্কিত হয়েছি। কারণ ভরাবর্ষায় শামুক মরার তো কথা নয়। আর মৃত শামুকের খোসাগুলো ছিল ছোট শামুকের। খবর নিয়ে জানা গেল, কাছাকাছি জমিতে আগাছা দমনের জন্য বালাইনাশক নামের বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে। হয়তো এতে আক্রান্ত হয়ে শামুকগুলো পানি ছেড়ে কোনোরকম আলে উঠেছে। কিন্তু বাঁচেনি। ভাবলাম, কী সর্বনাশ!
এ ভাবনায় তাড়িত থাকা অবস্থায় বরিশাল সদর উপজেলার কৃষকদের এক কর্মশালায় যোগ দিয়েছিলাম কৃষক হিসেবে। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বরিশাল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন নানান প্রসঙ্গ টেনে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা পুলিশ সুপার মো. শরিফ উদ্দীন কৃষির ক্ষেত্রে পরিবেশ রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘আমরা আমাদের পরিবেশ নষ্ট করছি।’ উল্লেখ্য, মো. শরিফ উদ্দীন কৃষিবিজ্ঞানের মেধাবী ছাত্র।
হালের কৃষক হিসেবে আমার স্বল্প সময়ের অভিজ্ঞতা এবং বরিশাল জেলার প্রধান দুই কোতোয়ালের বক্তব্য এক সরল রেখায় দাঁড় করালে উদ্বেগজনক চিত্র ফুটে উঠবে। কারণ, আমরা নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন করছি না এবং কৃষির ক্ষেত্রে ভয়াবহ মাত্রায় পরিবেশ নষ্ট করেই চলেছি। আর এর মূলে রয়েছে কথিত ‘বালাইনাশক’, যা আসলে ভয়ানক বিষ।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
# দৈনিককালবেলায়প্রকাশিত, ২৮/৭/২০২৫, শিরোনাম, “আমরা কি শকুনের পথে হাঁটছি!”