দখিনের সময় ডেক্স:
দুর্বৃত্তের হামলায় আহত দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের অবস্থা যথেষ্ট সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালের চিকিৎসকেরা। তাঁকে বৃহস্পতিবার (৩সেট্পেম্বর) দুপুর তিনটার দিকে তাকে রাজধানীর এই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অস্ত্রোপচার কক্ষে নিয়ে গেলেও প্রথম দফায় অস্ত্রোপচার করার মতো পরিস্থিতিতে তিনি ছিলৈন না বলে চিকিৎসকেরা জানান।
প্রহরীকে আটকে সরকারি বাসার ভেন্টিলেটর ভেঙে প্রবেশ করে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবাকে হাড়ুড়ি দিয়ে পিটিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় সংসদ সদস্য বলছেন, ইউএনওকে হত্যার উদ্দেশ্যই পরিকল্পিতভাবে এ হামলা হয়েছে। তিন বছর বয়সী মেয়ে নিয়ে ঘোড়াঘাটে থাকতেন ইউএনও ওয়াহিদা। মাঝে মাঝে তার বাবা এসে থাকতেন। ওয়াহিদার স্বামী রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার ইউএনও।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইউএনও’র বাবা ওমর আলী জানান,আমি মেয়ের চিৎকার শুনেই পাশের ঘরে যাই। তখন কাপড় দিয়ে মুখ ঢাকা এক হামলাকারী আমাকেও আঘাত করে । তার সাথে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে সে আমার ঘাড়ের মধ্যে আঘাত করে। স্থানীয় সংসদ সদস্যের শিবলী সাদিকের ধারণা, হত্যার উদ্দেশ্যেই পরিকল্পিতভাবে ইউএনওর ওপর হামলা হয়েছে। তিনি বলেন, আমি তার বাসা দেখে মনে হচ্ছে এটা কোন ডাকাতি বা চুরি না, তাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই হামলা করা হয়েছে।
ইউএনওর বাসভবনে থাকা সিসিক্যামের ফুটেজ দেখে দুর্বৃত্তদের শনাক্তের চেষ্টা করছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। র্যাব-১২ এর অধিনায়ক রেজা আহমেদ বলেন, এটি তদন্ত সাপেক্ষ বিষয়। এটি আরও বিস্তারিতভাবে তদন্ত করেই এ বিষয়ে বলা যাবে। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানান, সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ওয়াহিদা খানমের ওপর সন্ত্রাসী হামলার তদন্ত করা হচ্ছে। দুর্বৃত্তরা ডাকাতি নাকি শত্রুতার জেরে এই ঘটনা কিনা তারও তদন্ত চলছে। ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যেই দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার করা হবে। তার চিকিৎসায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
অস্ত্রোপচার সম্পন্ন
বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। তাঁর শরীরের ডানপাশ পুরোপুরি অবশ হয়ে গেছে। আড়াই ঘণ্টার জটিল অস্ত্রোপচার শেষে জাতীয় নিউরোসায়েন্স ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের যুগ্ম পরিচালক বদরুল আলম বলেন, ওয়াহিদার শারীরিক অবস্থার উন্নতি কতটা সেটা বলার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তবে অন্য যেসব লক্ষণ দেখে শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলা হয়, সে লক্ষণগুলো কিছুটা ভালোর দিকে। তাঁর শরীরের রক্তচাপ, অক্সিজেনের স্তর ভালো আছে। ওয়াহিদা কোনো কথা বলেছেন কি না জানতে চাইলে বদরুল আলম বলেন, হাসপাতালে ভর্তির পর তিনি সাড়া দিয়েছেন। তবে তিনি কোথায় আছেন, কীভাবে এলেন- তা এখনো বুঝতে পারছেন না।