ঝলসে যাওয়া মানুষের আর্তনাদ, স্বজনদের আহাজারি: ভারি বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগ
দখিনের সময়
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ৫, ২০২০, ১৪:৪৩ অপরাহ্ণ
সংবাদটি শেয়ার করুন...
দাখিনের সময় ডেক্স:
ঝলসে যাওয়া মানুষের আর্তনাদ আর তাদের অপেক্ষায় থাকা স্বজনদের আহাজারিতে ভারি ঢাকা মেডিক্যাল শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। ফিকে হয়ে আসছে আপনজনকে জীবিত ঘরে নেয়ার আশাও। আর মরদেহ পেতে স্বজনদের গুনতে হচ্ছে অপেক্ষার প্রহর।
শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে নারায়নগঞ্জের মসজিদে বিস্ফোরণে আহতদের আনা হয় ঢাকা মেডিক্যালে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে। আপনজনের খোঁজে তাই রাত থেকেই অপেক্ষায় স্বজনরা। প্রিয়জন হারানোর বেদনা বুকে নিয়ে অনেকেই অপেক্ষায় আছেন মৃতদেহের। নারায়ণগঞ্জের তল্লায় মসজিদে এসি বিস্ফোরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত ১ শিশু ও মুয়াজ্জিনসহ ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও দগ্ধ আরও ২৩ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।
হাসপাতালের ভিতরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন স্বামী কাঞ্চন হাওলাদার। বাইরে তারই সুস্থতা কামনায় আহাজারি স্ত্রী শেফালি বেগমের। খুলনা থেকে স্বামীর খবরে ঢাকা মেডিক্যালে এলেও জানেন না কেমন আছেন তার প্রিয়জন। তিনি বলেন, ‘আমাকে ভিতরে যেতে দিচ্ছেনা, আমি একটু দেখবো।’
স্বজনদের এই বেদনায় সান্তনা হয় না। সন্তান হারা রহিমা বেগমের অশ্রু শুকিয়ে গেছে। বাবার সঙ্গে নামাজ আদায় করতে গিয়ে ঝলসে গিয়েছিল রহিমার একমাত্র সন্তান ৭ বছরের জুবায়ের। ছোট্ট শরীর এই ধকল সইতে না পারায় শনিবার সকালেই কোল খালি হয়েছে তার। এখন অপেক্ষা স্বামীর খবরের। রহিমা বেগম বলেন, ‘ও তো মারা গেছে। ওর বাবার অবস্থা অনেক খারাপ। আমার একটাই মাত্র ছেলে। আল্লাহ’র কাছে তো বহু প্রার্থনা করলাম, কোন লাভ হলো না। সবই তো হারিয়ে ফেললাম।’
স্বজনের খোঁজে থাকা একজন বলেন, ‘৩৭ জনের নাম আছে, উপরে নাকি ৪৫ জনের নাম পেয়েছে। কিন্তু আমার রোগীকে আমি পাচ্ছিনা।’ আরেকজন বলেন, ‘এতটুকু শুধু জানি বেঁচে আছে। দেখতে দিচ্ছেনা। বাকিটা আল্লাহ জানে।’