খালিদ হাসান নাঈম:
দলিল লেখক রেজাউল করিম রিয়াজ হত্যা মামলায় গোয়েন্দা পুলিশের তদন্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী মনিরুল ইসলাম রিপন। তিনি হত্যা মামলার সুষ্ঠ তদন্ত ও হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
উল্লেখ্য, বরিশাল সদর উপজেলা চরমোনাই ইউনিয়নে দলিল লেখক রেজাউল করিম রিয়াজকে ২০১৯ সালের ১৮ই এপ্রিল গভীর রাতে শয়ন কক্ষে গলা কেটে হত্যা করা হয়। হত্যাকান্ডের পর থেকে দলিল লেখক রিয়াজের দুই সহকারী মাসুম ও হাবীব ওরফে হাবু পুলিশের ধরাছোয়ার বাহিরে রয়েছে।
গতকাল সোমবার দুপুর ১২ টায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন হত্যা মামলার বাদী নিহত রিয়াজের বড় ভাই মনিরুল ইসলাম রিপন ও তার পরিবারের সদস্যরা। লিখিত বক্তব্যে মনিরুল ইসলাম রিপন বলেন, রিয়াজের স্ত্রী আমিনা আক্তার লিজার পরকিয়া প্রেমিক মূল হোতা মাসুম হোসেন দফাদারকে এখন পর্যন্ত পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। ২০১৯ সালে ১৮ই এপ্রিল মধ্য রাতে দলিল লেখক রেজাউল করিম রিয়াজ ও তার স্ত্রী লিজার নিজ ঘরের শয়ন কক্ষে রিয়াজকে গলা কেটে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ পরদিন ১৯ই এপ্রিল রিয়াজের মরদেহ উদ্ধার করা এবং আমিনা আক্তার লিজাকে গ্রেফতার করে। ১৬৪ ধারায় জবান বন্দিতে লিজা জানায় তার পরকিয়া প্রেমিক ও ভিকটিম রেজাউল করিম রিয়াজের সহকারী মাসুম ও অন্য আরেকজন মিলে দলিল লেখক রিয়াজকে হত্যা করে। হত্যা সংঘটিত হওয়ার পর থেকে দলিল লেখক রিয়াজের দুই সহকারী মাসুম ও হাবীব ওরফে হাবু পুলিশের ধরাছোয়ার বাহিরে রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে মনিরুল ইসলাম রিপন বলেন, ডিবি এতদিনেও আমিনা আক্তার লিজার জবান বন্দিকৃত আসামি মাসুমকে ধরতে সক্ষম হয়নি। কিন্তু হঠাৎ করে কয়েকদিন আগে ৩ ছিচকে মোবাইল চোর আটক করে এবং ৩ জনেরই ১৬৪ ধারায় জবান বন্দি নেয় এবং তারা তিনজনই খুনের দায় স্বীকার করে। কিন্তু তিনজনের জবান বন্দি তিন ধরনের, কারো কথার সাথে কারো কথার মিল নাই, তাই পুরো ব্যাপারটা আমার কাছে রহস্য জনক বলে মনে হচ্ছে।
মনিরুল ইসলাম রিপন অভিযোগ করেন, মামলাটি ভিন্ন খাতে নেয়ার পায়তারা চলছে। তাই আমার দাবি অচিরেই মাসুমকে গ্রেফতার করা হলে এই খুনের মূল রহস্য বেরিয়ে আসবে। যে মোবাইলের কারনে তিন ছিচকে চোরকে আটক করা হয়েছে তা আদৌ আমার ভাই রিয়াজের কিনা তা আমি জানি না। এসময় মনিরুল ইসলাম বলেন, আমিনা আক্তার লিজা সন্তানের দোহাই দিয়ে ৮ মাস আগে জামিন নেয়, জামিন নেয়ার পর এই ৮ মাসেও আমিনা আক্তার লিজা বলেনি যে, পুলিশের নির্যাতনের মুখে তিনি ১৬৪ ধারা জবান বন্ধি দিয়ে ছিল। কিন্তু হঠাৎ ৩ ছিচকে মোবাইল চোর আটক হবার পর পরই আমিনা আক্তার লিজা বলে যে, পুলিশের নির্যাতনের কারনে তিনি ১৬৪ ধারা জবান বন্দি দিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে মনিরুল ইসলাম রিপন বলেন, আমি মনে করি এখানে কোন গভীর ষড়যন্ত্র লুকিয়ে আছে ।
এসময় তিনি আরেও বলেন, আমি বর্তমানে নিরাপত্তা হীনতায় ভূগছি, আমিনা আক্তার লিজা জামিনে মুক্ত হওয়ার পরথেকেই আমাকে এবং আমার পরিবারকে বিভিন্ন রকম হুমকি দামকি দিয়ে আসছে, যা আমি বিভিন্ন মহল থেকে শুনতে পাই। এই মামলার সুষ্ঠ বিচার নিয়ে আমি সন্ধিহান। তাই আমি আবারো বলছি অচিরেই মাসুমকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করে আসামীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাই।