• ১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নারীর ক্ষমতায়নের সাফল্যে বিশ্বে প্রসংশিত বাংলাদেশ

দখিনের সময়
প্রকাশিত মার্চ ৮, ২০২১, ০৮:৪৪ পূর্বাহ্ণ
নারীর ক্ষমতায়নের সাফল্যে বিশ্বে প্রসংশিত বাংলাদেশ
সংবাদটি শেয়ার করুন...

দখিনের সময় রিপোর্ট

বাংলাদেশের নারীরা নানা বাধা ভাঙছেন এবং পেশায় সফল হচ্ছেন। নারীর ক্ষমতায়নে সাফল্যের কারণে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী অনেক প্রশংসা অর্জন করেছে। বর্তমানে দেশের সংসদনেতা, সংসদীয় উপনেতা, বিরোধী দলীয় নেত্রী ও স্পিকার নারী। নারীরা এখন উচ্চ আদালতের বিচারক, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং আরো অনেক কিছু হয়ে উঠছেন।

আজ ২ কোটি নারী কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতে নিয়োজিত রয়েছেন এবং ৩৫ লাখেরও বেশি নারী তৈরি পোশাক খাতে কাজ করছেন, যা আমাদের বৃহত্তম রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্র। এ পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার নারী সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে দায়িত্ব পালন করেছেন। মেয়েরা এখন রেলগাড়ি চালাচ্ছেন আবার গাড়িও চালাচ্ছেন। এয়ারফোর্সে মেয়েরা ভালো করছেন।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন নারীরা। মুক্তিযুদ্ধে রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনী বা স্বার্থান্বেষী যুদ্ধবিরোধীরা ছাড়া সবাই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিলেন। ফলে নারীর অবদান অস্বীকার করার কোনো অবকাশ নেই। নারী মুক্তিযুদ্ধে দুইভাবে যুদ্ধ করেছেন—প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে।

নারীর যাত্রাপথ সরল নয়। হোক যুদ্ধদিনে বা স্বাভাবিক সময়ে। পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম ১৯৪৮ সাল থেকেই শুরু হয়েছিল। তখন থেকেই আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন নারী। করেছেন সাংগঠনিক কাজ, থেকেছেন রাজপথে। সেই বায়ান্নের ২১শে ফেব্রুয়ারিতে নারীই প্রথম পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ১৪৪ ধারা অমান্য করে মিছিল-সমাবেশ করেছিলেন। পুলিশের লাঠিচার্জ ও গুলিতে এদের অনেকেই গুরুতর আহত হয়েছিলেন। অনেক নারী গ্রেফতারও হয়েছিলেন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে ১৪ জন নারী আইন পরিষদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৬০ সাল থেকে সক্রিয় হতে শুরু করে গেন্ডারিয়া মহিলা সমিতি, ওয়ারী মহিলা সমিতি, আপওয়া, নিখিল পাকিস্তান সমাজকল্যাণ সমিতি।

১৯৬৪ সালে সুফিয়া কামাল, সনিজদা খাতুন, রোকেয়া রহমান কবীরের মতো নারী নেত্রীরা দাঙ্গাবিরোধী কার্যক্রমে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৬৬ সালে ছয় দফা আন্দোলনে ৫০০ ছাত্রী সক্রিয় অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৬৯-এর ২৪ জানুয়ারি সুফিয়া কামাল নিজের বাড়িতে সভা করেছিলেন এবং কারফিউ চলাকালীন শহিদ মিনারে হাজার হাজার নারী সমাবেশ করেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে অনেক নারী সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন।

১৯৭১ সালের মার্চ মাসে পূর্ব পাকিস্তান মহিলা পরিষদের উদ্যোগে নিয়মিত কুচকাওয়াজ ও প্রাথমিক চিকিৎসাবিষয়ক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ২৩ মার্চ স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল। সে সময় পল্টন ময়দানে ১০ প্লাটুন জয় বাংলা বাহিনীর এক প্লাটুন ছিলেন ছাত্রী। এই ছাত্রীদের হাতে ডামি রাইফেল ছিল। ২৩ মার্চ স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ বাহিনী ‘বাংলাদেশ ডে’ পালন করে। এখানে মেয়েদের মধ্যে শামসুন নাহার ইকু পতাকা হাতে সামনে চলেন। ফোরকান বেগম, সাকী, কাওসার ঝুনু নেতৃত্ব দেন। তাদের সঙ্গে অন্য মেয়েরাও ছিলেন। শুধু ঢাকাতেই নয়, বিভাগীয় শহরগুলোতেও নারীরা সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছিলেন।