প্রকল্প বিষয়ে রচনা লিখতে বললে কেউ ইতিবাচক কিছু লিখতে পারবেন বলে মনে হয় না। আর প্রকল্প বিষয়ে বাণীসম কথা বলেছেন বর্তমান সরকারের পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। পরিচ্ছন্ন এ উপদেষ্টার ২১ জুনের উচ্চারণ, ‘প্রকল্পে দুর্নীতি ও অযাচিত খরচ কমানো গেলে বাজেটে পরিচালন ব্যয় অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। আগের সরকারের সময়ে টেন্ডার যোগসাজশেই প্রকল্পে ১০ শতাংশ দুর্নীতি হতো। সামাজিক নিরাপত্তা খাতে উপকারভোগীর মধ্যে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশই ভূতুড়ে ও রাজনৈতিক বিবেচনায় তালিকায় ঢুকেছে।’
বিস্ময়কর বিষয় হচ্ছে, দেশীয় প্রজাতির মাছ এবং শামুক সংরক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য গৃহীত উল্লিখিত প্রকল্পের মেয়াদ ও আওতা বাড়লেও ব্যয় কমেছে অন্তত ১২ কোটি টাকা। হতে পারে অভূতপূর্ব এ ঘটনার পেছনে কারও নীরব মনিটরিং রয়েছে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, উল্লিখিত প্রকল্প দিয়ে দেশি প্রজাতির মাছ ও শামুক ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা যাবে। কারণ, ধ্বংস প্রক্রিয়া সর্বগ্রাসী এবং নেপথ্যের গভীর ষড়যন্ত্র সুদূরপ্রসারী। দেশি মাছ ধ্বংসের যে মচ্ছপ চলছে, সেই তুলনায় উল্লিখিত প্রকল্প এবং তাবৎ উদ্যোগের অবদান সমুদ্রে এক ঘটি জলের বেশি কিছু নয়! প্রকৃতির দেশি মাছ ধ্বংস ধারা অব্যাহত রেখে চাষের মাছ দিয়ে শেষরক্ষা হওয়ার নয়। প্রবচনই তো আছে, ‘তোলাজলে পোলা বাঁচে না।’ তেমনই চাষের মাছে দেশ বাঁচবে না, প্রয়োজন প্রাকৃতিক পরিবেশের দেশি মাছের সুরক্ষা।
প্রসঙ্গত, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে একাধিক মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে গত ২০ মে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেছেন, ‘সম্প্রতি বালাইনাশকের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার এবং নিষিদ্ধ বালাইনাশকের সহজলভ্যতার কারণে বিভিন্ন স্থানে মাছ ও গবাদি পশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। শুধু মাছ ও পশু নয়, মানবস্বাস্থ্য এবং পরিবেশের জন্যও সমান ক্ষতিকর।’