• ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জামায়াতের কৌশলে মার খাচ্ছে বিএনপি?

দখিনের সময়
প্রকাশিত নভেম্বর ৩, ২০২৫, ০৮:০১ পূর্বাহ্ণ
জামায়াতের কৌশলে মার খাচ্ছে বিএনপি?
সংবাদটি শেয়ার করুন...

# বিএনপির কাছে জামায়াত হঠাৎকরে যেনো ধুতরা ফুল হয়েগেলো! এর শানেনজুল কী?
# ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের বাস্তবতা অনুধাবনে চরম ভুল করলেও পরে আর ভুলের ‘ভ’-এর ধারকাছে যায়নি জামায়াত।
# অনেকেই বলছেন, নিজের নাককেটে হলেও বিএনপির সর্বনাশ করে ছাড়বেন শেখ হাসিনা।
# ক্ষমতার বেশ কয়েকটি কেন্দ্রও খেলছে রাজনীতির চোরাবালিতে আটকা পড়া বিএনপিকে নিয়ে।
# তারেকের কন্ঠে হতাশার সুর

আলম রায়হান:
হাবিল-কাবিল অথবা আলাল-দুলালের মতো হয়ে গিয়েছিলো জামায়াত-বিএনপি। যেনো দুই ভাই। এমনকি এই ন্যারেটিভ তারেক রহমানও ধারণ করতেন। বলা হতো, জামায়াত ও বিএনপি এক বৃন্তে দুটি ফুল। কিন্তু বিএনপির কাছে জামায়াত হঠাৎকরে যেনো ধুতরা ফুল হয়েগেলো! এর শানেনজুল কী? এ প্রশ্ন রাজনীতির ঘোরপ্যাচের সীমানা ছাপিয়ে সাধারণের মনে নাড়া দিচ্ছে। সঙ্গে আরো একটি প্রশ্ন প্রধান হয়ে বেশ অনেকটাই সামনে চলে এসেছে, চাপাবাজির রাজনীতি দিয়ে কী বাংলাদেশে বিরাজমান বাস্তবতায় জামায়াতের নানানমুখি কৌশলী রাজনীতি পরাজিত করা যাবে? রাজনীতর অঙ্গনে এটি মিলিয়ন ডলার প্রশ্ন।
নির্বাচন
হবে
চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পর নানা চড়াই-উৎড়াই পেরিয়ে দেশ নির্বাচনমুখী হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সরকার বারবার বলছে, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন। নির্বাচন কমিশন বলেছে, ডিসেম্বরে সিডিউল। এ অবস্থায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ১ নভেম্বর রাতে তিন বাহিনী প্রধানরা বৈঠক করেছেন। এ বৈঠকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন। আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিতব্য ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেন নিশ্চিছিদ্র নিরাপত্তা বজায় থাকে এবং নির্বাচন যেন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয় সে বিষয়ে সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে তিন বাহিনীর প্রধানকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রকাশিত খবর অনুসারে, নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ৯০ হাজার সেনাসদস্য, আড়াই হাজারের বেশি নৌ-বাহিনীর সদস্য এবং কিছু বিমানবাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবেন। প্রতিটি উপজেলায় মোতায়েন থাকবে এক কোম্পানি সেনা।
তারেকের কন্ঠে
হতাশার সুর
রোববার (২ নভেম্বর) রাজধানীর বনানীতে প্রবাসে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহের অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিশেষ বার্তা দেন তারেক রহমান বলেছেন, যথাসময়ে নির্বাচন হবে কিনা, জনমনে এমন সংশয় ও সন্দেহ তৈরি হয়েছে। এমন হবার কথা ছিল না। আগামীর জাতীয় নির্বাচন নিয়ে জনগণের সংশয় সন্দেহ গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সংকটাপন্ন করে তুলতে পারে। কৌশল ও অপকৌশলের পার্থক্য বুঝতে ব্যর্থ হলে অগণতান্ত্রিক বা অপশক্তির কাছে শেষ পর্যন্ত বিনাশর্তে আত্মসমর্পনের পথে হাটতে হয় কিনা এমন বিপদের কথাও সব রাজনৈতিক দলগুলোকে স্মরণ রাখার বিনীত অনুরোধ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। একই দিন তিনি আরো বলেছেন, সংঘবদ্ধভাবে বিএনপির বিজয় ঠেকানোর চেষ্টা চলছে। প্রতিনিয়ত একের পর এক শর্ত জুড়ে দিয়ে গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে কঠিন করে তোলা হচ্ছে। এর পরিণতি সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক থাকা প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। আর নির্বাচন নিয়ে জনমনে সৃষ্ট এসব সংশয় একটি সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন তারেক রহমান।
২৪-এ বিজয়ের
সিড়িতে জামায়াত
সূর্যের খড় তাপে দিবালোকের মতো স্পষ্ট, ৭১ মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিলো জামায়াত। শুধু বিরোধিতা নয়, মনে-প্রাণে হানাদার বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে অংশ নিয়েছে রাজাকার-আল বদর-আল শামস বাহিনীর ব্যানারে। সেই যুদ্ধে পরাজিত হয়েছে পাকিস্তানী বাহিনী। ধারণা করা হয়েছিলো, জামায়াত শেষ! কিন্তু জামায়াত কী শেষ হয়েছে? হয়নি। বরং কখনো আওয়ামী লীগ, আবার কখনো বিএনপি’র খয়ের খা হয়ে রাজনীতিতে এগিয়েছে। তবে বেশী ঝোক ছিলো মাজুল বিএনপির দিকে। এমনকি, বিএনপি সরকারের মন্ত্রীও হয়েছেন জামায়াতের সেই সময়ের আমীর ও সেক্রেটারী জেনারেল। এর পর ফেসিস্ট শেখ হাসিনার বেপরোয়া রাজত্বে বিচারের নামে নিজামী-মুজাহিদসহ দলটির শীর্ষ কয়েক নেতাকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে। অনেকেই ধারনা করেছিলেন, জামায়াত আর মাজা সোজা করে দাড়াতে পারবে না। কিন্তু এই ধারণা কি বাস্তবে প্রতিফলিত হয়েছে? না। বরং জামায়াত এগিয়েছে। শুধু তাই নয়। ঢাকসুসহ চারটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ফলাফল অনেকেরই মাথা ঘুরিয়ে দিয়েছে।
বলা হয়, জামায়াত খেলা দেখিয়েছে। এবং ৭১-এ পরাজিত জামায়ত ২৪-এ বিজয়ের সিড়িতে অবস্থানের বিষয়টি স্পষ্টভাবে জানান দিয়েছে জামায়াত। অনেকের বিবেচনায়, বিজয়ের এই ধারা অব্যাহত থাকলে খুব বেশি বিস্মিত হবার কিছু থাকবে না। কারো মতে চলমান ধারায় রাজনীতিতে জামায়াতের জন্য ‘স্কাই ইজ দ্যা লিমিট’!
৭১-এর পর জামায়াত
আর ভুল করেনি
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের বাস্তবতা অনুধাবনে চরম ভুল করলেও পরে আর ভুলের ‘ভ’-এর ধারকাছে যায়নি জামায়াত। বরং নানান কৌশলে এগিয়েছে। সঙ্গে নানান ছদ্মবেশ তো ছিলোই। যা হাসিনার মতো ঘুঘু রাজনীতিকের দৃষ্টিতেও ততটা স্পষ্টভাবে ধরা পড়েনি বলে অনেকেই মনে করেন। শুধু তাই নয়, জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার রাজপথের বিক্ষোভ বিজয়ের সোপানে নিয়ে যাবার ক্ষেত্রে সাংগঠনিক দায়িত্ব জামায়াতই পালন করেছে। যা অনেকের মাথায় ঢোকেনি বলে এখন বেশ জোরের সঙ্গে বলা হচ্ছে। আর বিএনপির মাথায় তো ঢোকেইনি। বলা হয়, বিএনপির যত লোক তত মাথা নেই!
খেলছে জামায়াত
ধোয়াশায় বিএনপি
ধারণা করা হয়, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে। তবে কোন্ নির্বাচন- তা নিয়ে কিন্তু ধোয়াশা রয়েই গেছে! একই সঙ্গে ধোয়াশা আছে বিএনপি‘র নির্বাচনী রাজনীতি নিয়েও। বিপরীতে বিভিন্ন স্তরের রাজনীতি করেই যাচ্ছে জামায়াত। কখনো ডালে, কখনো পাতায় আবার কখনো মূলে। আর প্রতিপক্ষকে রিড করতে দিচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে জামায়াত হয়তো কীর্তনের সেই চরণ অনুসরণ করছে, ‘বলিবে উত্তরে যাইবে দক্ষিণে, পূর্বে করিবে ঘোরাফেরা।/সাপের মুখে ভেকের নাচাবে/ তা হলে হবে খেলা।’
বিপরীতে বিএনপি কী করছে? প্রশ্ন আছে তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়েও। যদিও এ প্রশ্ন বহু পুরনো। বিশেষকরে, গত বছরের পাঁচই অগস্ট ফেসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর এ প্রশ্ন বারবার উঠে এসেছে। মনে করা হচ্ছে, ফেব্রুয়ারির নির্বাচন কেন্দ্রিক কোন অঘটন না ঘটলে চলতি নভেম্বরে দেশে ফিরতে পারেন তারেক রহমান। তখন তাকে ঘিরেই আবর্তিত হবে বিএনপির নির্বাচনী পথচলা। তিনিই কান্ডারী। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তাঁকে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এরমধ্যে প্রধান হচ্ছে ‘হাওয়া ভবন মেমোরি’।
প্রসঙ্গত, বিগত দিনে বেগম খালেদা জিয়ার ইমেজে ভোট প্রভাবিত হয়েছে। কিন্তু তিনি বহু দিন ধরে গুরুতর অসুস্থ্য। এখন তারেক রহমান আসবেন, নেতা-কর্মী-জনগণের মধ্যে অধিকতর স্বতস্ফূর্ততা আসবে। সুতরাং তারও একটা প্রভাব ভোটের উপর পড়বে- এটিই প্রত্যাশিত। তবে সবকিছু প্রত্যাশা মতো নাও হতে পারে। এমন বিশ্লেষণও আছে রাজনীতিতে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সাব্বির আহমেদের মতে, বিএনপি এবং তারেক রহমানকে নিয়ে ভোটারদের অতীত অভিজ্ঞতা রয়েছে। ফলে এখানেও বিএনপির জন্য চ্যালেঞ্জ আছে। তিনি বলেন, মানুষ বিএনপির শাসন আমলটাকে দেখেছে। মানুষের কাছে মোটামুটি তারেক জিয়ার মেমোরি এখনও স্পষ্ট। বিএনপির বিজয় তারেক রহমানকে কেন্দ্র করেই হবে- এরকমটা যদি বিএনপি চিন্তা করে তাহলে তাকে ঐ লিগ্যাসি থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
অবশ্য বিগত ১৫ বছরে তারেক রহমান রাজনীতিতে অনেকটাই প্রাজ্ঞ হয়েছেন। তিনি এখন পরিপূর্ন একজন রাজনীতিক। কিন্তু জামায়াতের নানান মুখী খেলা অতিক্রম করে তারেক রহমানের ‘সুশীল রাজনীতি’ শেষতক ভোটের মাঠে কতটা প্রভাব বিস্তার করতে পারবে সে প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। সঙ্গে গোদের উপর বিষ ফোড়া হয়ে আছে ৫ আগস্টের পর বিএনপির অসংখ্য নেতা-কর্মীর চাঁদাবাজী এবং দখলবাজী। এই দোষ থেকে জামায়াত খুব একটা দূরে নয়। তবে বেশ কৌশলী। জামায়াত দখল করেছে বড়বড় প্রতিষ্ঠান। যার একএকটি থেকে অনেক কিছু নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আর জামায়াত হাদিয়ার নামে চাঁদাবাজীকে পরিণত করেছে মানুষকে দলের সঙ্গে মানসিকভাবে সম্পৃক্ত করার নান্দনিক শিল্পে। এদিকে ঘরে ঘরে তালিমের নামে বহু বছর যে ধারা চলে আসছে তা এরই মধ্যে জামায়াতী রাজনীতিতে রূপান্তরিত হয়ে দাঁড়িয়েগেছে শক্ত ভিত্তির উপর।
প্রসঙ্গত, বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্র দল ঢাকসু নির্বাচন নিয়ে অহম ও ধোয়াশার মধ্যে ছিলো। যার ফলাফল একেবারে হাতেহাতে পেয়েগেছে। যার প্রভাব পড়েছে পরবর্তীতে অনুষ্ঠিত ছাত্র সংসদ নির্বাচনেও। এখন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ধোয়াশায় থাকা বিএনপির জন্য কোন পরিণতি অপেক্ষা করছে? এটিই হচ্ছে দেখার বিষয়।
হার্ডলাইনে যেতে
পারছে না বিএনপি
অনেকেই বলছেন যে, সংসদ নির্বাচনকে যে কোনো মূল্যে সফলের জন্যই দলটিকে কৌশলে এগুতে হচ্ছে। কারণ দলটির এ মুহূর্তে একমাত্র অগ্রাধিকার হচ্ছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। যদিও বিএনপি আগেই জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেছে। তখনো দলটি বলেছিলো যে, তাদের কিছু বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট রয়েছে, যা এই সনদ বাস্তবায়ন সুপারিশে উল্লেখ থাকবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেগুলো সুপারিশমালায় রাখেনি ঐকমত্য কমিশন, যা বিএনপিকে ক্ষুব্ধ করলেও দলটি আলোচনার মাধ্যমেই সংকটের সমাধান চাইছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিএনপির এমন অবস্থানের মূল কারণ হলো তারা নিজেদের সংস্কার বিরোধী সীল খেতে চায় না।তাছাড়া বিএনপি পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখালে তার জের ধরে রাজনৈতিক অচলাবস্থার মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে নির্বাচন বিলম্বিত হবার আশংকাও দেখা দিতে পারে- এ বিষয়টিও বিএনপির নীতিনির্ধারকদের বিবেচনায় আছে। “বিএনপির সঙ্গে এক ধরনের প্রতারণাই হয়েছে। তারা শকড হয়েছে। কিন্তু এ মুহূর্তে এটি নিয়ে টাফলাইনে গেলে নির্বাচন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এটা দলটির নেতাদের না বোঝার কারণ নেই। আবার নির্বাচনী প্রস্তুতির বদলে এসব বিষয় নিরয়ে বিএনপিকে ব্যস্ত রাখার জন্য, এগুলো কোন কেন্দ্র থেকে ইচ্ছে করেই করা হচ্ছে। এ অভিমত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক সাব্বীর আহমেদের। যদিও কেউ কেউ আবার মনে করেন, বিএনপি এ মুহূর্তের বৃহত্তম দল হওয়ায় দলটিকে এক ধরনের চাপে রাখার জন্য সরকার বা সরকার ঘনিষ্ঠরা নানা কৌশল নিচ্ছে এবং কমিশনের সুপারিশমালা তারই একটি অংশ হতে পারে বলে মনে করছেন তারা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক শামসুল আলমের মতে, পর্দার অন্তরালে দরকষাকষির জন্যই কখনো গণভোট বা কখনো সনদ সুপারিশমালা—এসব এভাবে সামনে আনা হচ্ছে। মনে হয় জোট করা কিংবা আসন সমঝোতা-এগুলোই কারও কারও উদ্দেশ্যে। তিনি বলেন, কোনো কোনো গোষ্ঠী বিএনপিকে বিপাকে ফেলতে চায় কারণ তারা নির্বাচনটাই পেছাতে চায়।
প্রসঙ্গত, বিএনপির সঙ্গে জোট গঠনের বিষয়ে এনসিপির একটি আলোচনার খবর সংবাদ মাধ্যমে এসেছে। জোট করার বিষয়টি স্বীকার না করলেও দলটির সঙ্গে আলোচনার কথা স্বীকার করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদও। এনসিপির আহবায়ক নাহিদ ইসলাম অবশ্য ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির বিরুদ্ধে সংস্কার ভেস্তে দেয়া আর জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে নির্বাচন পেছানোর চেষ্টার অভিযোগ এনেছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলছেন, সরকার ও কমিশন জনগণ ও জাতির সাথে প্রতারণা করেছে তাই তাদেরই উচিত এগুলো সংশোধন করে নির্বাচনে মনোনিবেশ করা। এদিকে দলীয় সূত্রগুলো বলছে, এ বিষয়টি নিয়ে শিগগিরই সরকারের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপির নীতিনির্ধারকরা। তাদের আশা, আলোচনার মাধ্যমেই এই সংকটের নিষ্পত্তি হবে।
শেখ হাসিনা নিজের
নাক কেটে হলেও…
এদিকে অনেকেই বলছেন, নিজের নাককেটে হলেও বিএনপির সর্বনাশ করে ছাড়বেন শেখ হাসিনা। কারোমতে, নিজের মগজের জোরে অথবা অন্য কোন শক্তির বুদ্ধিতেই হোক, রাজনীতির সুদূর প্রসারী খেলার অংশ হিসেবেই ক্ষমতায় থাকাকালে জাতীয় পার্টিকে ধ্বংস করেছেন শেখ হাসিনা। প্রথমে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এবং পরে নাজিউর রহমান মঞ্জুরকে ব্যবহার করে সামরিক শাসক এরশাদের জাতীয় পার্টির ভিত ধ্বসিয়ে দিয়েছেন। পরে মন্ত্রিত্বের নামের দাসত্ব এবং হাড্ডি ছুড়ে দিয়ে জাতীয় পার্টির পুরো সর্বনাশ করে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। যে ধকল থেকে জেনারেল এরশাদের দল জাতীয় পার্টি উঠে দাড়াতে পারেনি। হয়তো আর পারবেও না। মহল বিশেষ বলছেন, ক্ষমতাচ্যূত ফেসিস্ট শেখ হাসিনার এখন নানানমুখি খেলার মধ্যে বিএনপিকে বিবেচনায় রেখেছেন। এ খেলার প্রভাবে কোন্ পরিণতি অপেক্ষা করছে জেনারেল জিয়ার দল বিএনপি‘র জন্য- এটিই এখন দেখার বিষয়। আর খেলা তো কেবল শেখ হাসিনার নয়, ক্ষমতার বেশ কয়েকটি কেন্দ্রও খেলছে রাজনীতির চোরাবালিতে আটকে পড়া বিএনপিকে নিয়ে। এমন জোর গুঞ্জন আছে রাজনীতির বাজারে।