Home মতামত ১৫ আগস্টের পিছনে ছিলো মহাপরিকল্পনা

১৫ আগস্টের পিছনে ছিলো মহাপরিকল্পনা

দীর্ঘ ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ১৫ আগস্ট ভোর সাড়ে ৪টায় ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের উত্তর প্রান্ত থেকে যে নারকীয় হত্যাযজ্ঞের অভিযান শুরু হয়েছিল, তা সূর্য ওঠার আগে ধানমন্ডী ৩২ নম্বর হয়ে বিকাল সাড়ে ৪টার মধ্যেই বঙ্গভবনে জেকে বসে সেই অভিযানের মূল লক্ষ্য অর্জন করে চক্রান্তকারীরা। সন্ধ্যা নামার আগেই বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রপতি, নতুন মন্ত্রিসভা ও নতুন প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করেছিল খন্দকার মোশতাক-রশীদ-ফারক চক্র। এই অপরাধের পিছনে মহাপরিকল্পনা ছিলো।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার আগে দেশে একধরনের গুমোট অবস্থা বিরাজ করছিল। এটি বিভিন্ন কৌশলে সৃষ্টি করা হয়েছে। পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল বাকশাল। এদিকে বেশ কিছু দিন ধরে এক ধরণের গুঞ্জন ছিল যে, ভয়ংকর কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি অধিকতর ঘোলাটে করার ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের প্রবক্তা জাসদের অবাস্তব ও রহস্যজনক রাজনীতি ভয়ানক প্রভাব বিস্তার করেছে।

অবাস্তব এই রাজনীতির ধারায় যুক্ত হয়ে কতো যুবকের জীবন নষ্ট হয়েছে, তার হিসেব মিলানো কঠিন। আর সদ্য স্বাধীন দেশের যে স্বর্বনাশ হয়েছে তা হয়তো পরিমাপযোগ্যই নয়। কেবল তাই নয়, হিমালয়সম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের উপর আঘাত হানার ক্ষেত্র প্রস্তুত করার জন্য যেসব শক্তিকেন্দ্র কাজ করেছে তার মধ্যে জাসদ অন্যতম। নেপথ্যের খেলার বিষয়টি এ দলের শীর্ষ নেতাদের হয়তো কারোকারো জানাছিলো। তবে জাসদের মাঠ পর্যায়ের নেতারা জানতেন না। ১৯৭৪ থেকে ৭৯ সাল পর্যন্ত বরিশালে আমার অর্জিত ধারণা এরকমই।

বরিশাল জেলা ছাত্র লীগের প্রচার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সরকার এবং বাংলাদেশের প্রথম সামরিক শাসক জেনারেল জিয়ার আমলে, ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত। আমাদের বিরোধিতার কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ থাকলেও, বঙ্গবন্ধু ছিলেন না। এটি অন্তত বরিশালের বাস্তবতা। বরং বঙ্গবন্ধুর জীবদ্দশায় আমাদের বলা হতো, বঙ্গবন্ধু এক সময় সমাজতন্ত্রের পতাকা তলে আসবেন। এ জন্য ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে হবে, চাপ প্রয়োগ করা প্রয়োজন। এ কথা কেন্দ্রে বলা হতো কিনা তা সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারবো না। তবে বরিশালে বলা হতো।

একই কথা ৭৪ সালে বরিশাল এসে বিএম কলেজের ক্যান্টিনে বৈঠকে প্রকারন্তরে বলেছিলেন জাসদ কেন্দ্রীয় নেতা শরীফ নুরুল আম্বিয়া। তখন তো মাঠের নেতা-কর্মীরা জানি না, আসলে কোন ক্ষেত্র প্রস্তুত হচ্ছে। কে বাড়ছে গোকুলে! হয়তো কেন্দ্রে কেউ কেউ জানতেন। অথবা জানতেন না। যেমন, তখনও আমরা জানতাম না, জাসদের নিউক্লিয়াস সৃষ্টি হয়েছিলো ভারতে, মুক্তিযুদ্ধের চুড়ান্ত পর্বে। উদ্দেশ্য ছিলো বঙ্গবন্ধু সরকারকে চাপে রাখা। পরে এই উদ্দেশ্যকে আরো জটিল রূপ দেয়া হয়েছিলো কিনা তা গভীর গবেষণার বিষয়।

জাসদের রহস্যজনক জন্ম, অকল্পনীয় দ্রুততায় উত্থান, স্বাধীনতা বিরোধীদের অভারণ্যে পরিনত হওয়া  এবং বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর দলটির বিনাশ- পুরো বিষয়টি অনেকের মতোই আমার ধারণায়ও বেশ ধোয়াসা রয়েছে।  আর একটি বিষয় এখনো আমার কাছে বড় একটি প্রশ্নবোধক হয়ে আছে। তা হচ্ছে, বিএম কলেজের জাসদ ছাত্রলীগ নেতা নজরুল-সদরুল-সমরেশ গুম হয়েছিলো, তাদের লাশও পাওয়া যায়নি। সে সময় কেউ এ নিয়ে টুশব্দটি করার সাহস পায়নি। কেবল কলেজের তৎকালীন প্রিন্সিপাল এমদামুল হক মজুমদার অঝোরে কান্নারত অবস্থায় বারবার বলছিলেন, ‘আমার ছেলেদের ফেরত দাও।

অধ্যাপক গোলাম রব্বানীর কাছে এ তথ্য জেনেছি সম্প্রতি। বাম ধারার এই শিক্ষাবিদ ছিলেন বিএম কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান(সম্মান)-এর ছাত্র। তখন বিএম কলেজের অবস্থা ছিলো অনেকটা মৃত্যুপুরির মতো। সেই বিএম কলেজ ক্যান্টিনে কোন ভরসায় শরীফ নূরুল আম্বিয়া আমাদের নিয়ে গোপন বৈঠক করলেন, তা বলা কঠিন! তাঁকে কে বা কারা ভরসা দিয়েছিলো, জানি না। তবে আমরা কয়েকজন মোটেই ভরসা পাচ্ছিলাম না। আরো পরিস্কার করে বলাচলে, আমরা চরম আতংকে ছিলাম। এই আতংক বহুগুণ বেড়ে যায় আ স ম ফিরোজ ক্যান্টিনে প্রবেশ করায়। তিনি ছিলেন সর্বোচ্চ মিনিট খানেক। আমাদের দিকে সরাসরি তাকিয়েছেন বলেও মনে হলো না। কারো সাথে কোন কথাও বলেননি। কেবল সুজির হালুয়ার মান নিয়ে টেবিল বয়ের সঙ্গে মৃদু উষ্মা প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘এতো রুগীর খাবার!’

এরপর আ স ম ফিরোজ দ্রুত ক্যান্টিন ত্যাগ করেন। তাহলে তিনি কি আমাদের নিয়ে এক ধরনের ভয়ে ছিলেন, নাকি অভয় দিতে এসেছিলেন। এটি জানা যায়নি। তবে এটি সবাই জানেন, ১৫ আগস্ট কাকডাকা ভোরে বরিশালে যে বিশাল ‘আনন্দ মিছিল’ বের হয়েছিলো তার উদ্যোক্তা নেতা ছিলেন নূরুল ইসলাম মঞ্জু, মহিউদ্দিন আহমেদ(পিস্তল মহিউদ্দিন) ও আ স ম ফিরোজ। কলংকের এই তিন নেতার মধ্যে নূরুল ইসলাম মঞ্জু খুনী মোশতাক সরকারের মন্ত্রী হলেও মহিউদ্দিন আহমেদের কপালে তা জোটেনি। যদিও তিনি ‘মোশতাক কোট’ বানিয়ে তড়িঘড়ি করে ঢাকা গিয়েছিলেন। অবশ্য, পরে তিনি আওয়ামী লীগের টিকিটে একাধিকবার এমপি হয়েছেন। আ স ম ফিরোজও একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং আওয়ামী লীগের টিকিটে। শুধু তাই নয়, অনেকের কল্পনার সীমা ছাড়িয়ে জাতীয় সংসদের চীফ হুইপও হয়েছেন আ স ম ফিরোজ।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সূর্য ওঠার ঠিক আগে বাংলাদেশের সূর্যকে নিভিয়ে দেবার পর বরিশালে নূরুল ইসলাম মঞ্জু, মহিউদ্দিন আহমেদ(পিস্তল মহিউদিন) ও আ স ম ফিরোজসহ আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকে উল্লাশ করতে দেখেছে শহরবাসী। দেখেছি আমিও। আমি তখন বিএম কলেজের আইএসসি’র ছাত্র এবং সদর উপজেলার গ্রামের বাড়িতে থাকি। গ্রামের নাম, ধর্মাদী।

আমাদের একটি ফিলিপস রেডিও ছিলো। খুব ভোরে বাবার খেয়াল শোনার আভ্যাসের কারণেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভয়ংকর দু:সংবাদ: ‘আমি মেজর ডালিম বলছি, শেখ মুজিবকে হত্যা করা হয়েছে’। রেডিও থেকে এ ঘোষণা সারা দেশে ত্রাস ছড়িয়ে দেয়। মানুষের মনে অজানা ভয় ও আতঙ্ক জেকে বসে।

শুনেছিলাম সম্ভবত শুরুর দিকেই। এক ঝটকায় বিছানা ছাড়লাম। আমাদের বাড়ি থেকে খানিকটা পূর্ব দিকে ছিলো মোল্লার দোকান। সেটি এখন মোল্লার বাজার হিসেবে পরিচিত। তখন এখানে একটি মাত্র দোকান ছিলো। এখন অনেক। দেখলাম দোকানটি বন্ধ। নামাজ পড়ে কেউ কেউ বাড়ির দিকে যাচ্ছেন। মনে হলো, কেউ কিছু জানে না। বাড়ি ফিরে গেলাম। ঢুকতেই পড়লাম বাবার সামনে। তার চোখ লাল। বললেন, খবরদার বাড়ির বাইরে যাবি না। কিন্তু আমি ঠিকই বাড়ির বাইরে গিয়েছি। শহরে। নতুল্লাহবাদ হয়ে সোজা সদর রোডে। লক্ষ্য ছিলো বিপ্লবী বাংলাদেশ অফিস। এ পত্রিকার মালিক সম্পাদক নূরুল আলম ফরিদ, জাসদ ছাত্রলীগ নেতা এবং  নূরুল ইসলাম মঞ্জুর ছোট ভাই।

শহরের সদর রোডের গুলবাগ হোটেলের উল্টো দিকে ছিলো আওয়ামী লীগ অফিস। পাশে শান্তি শাল রিপেয়ারিং হাউজ। এ দোকানের সামনে দাড়ানো ছিলেন মহিউদ্দিন আহমেদ, তিনি পিস্তল মহিউদ্দিন নামে সমধিক পরিচিত। সেখানে তিনটি ট্রাক ছিলো। ট্রাকে মূলত ছিলো ঘাট-শ্রমিকরা। সবাই উল্লশিত। কিছু ক্ষণের মধ্যে আ স ম ফিরোজ এসে একটি ট্রাকে উঠে গেলেন। তিনি তখন উল্টো দিকের একটি টিনের ঘরে থাকতেন। ঘাট-শ্রমিকদের নেতৃত্ব নিয়ে নিলেন আ স ম ফিরোজ। আওয়ামী লীগ অফিস থেকে তিনি জাতির পিতার ছবি নামিয়ে সড়কে প্রকাশ্যে অবমানা করলেন। এর আগে পিস্তল মহিউদ্দিন বক্তৃতায় বললেন, ‘চিন্তার কিছু নেই, এখনো আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায়।’

খুনীচক্রের দোসর হিসেবে বরিশাল আওয়ামী লীগের বিশাল এই উল্লাশের বিপরিত অবস্থানে বরিশালের আওয়ামী লীগের কিছু নেতা ছিলেন। তবে তাদের মধ্যে যারা সদর রোড পর্যন্ত আসার সাহস দেখিয়েছিলেন তাদের সংখ্যা ১০/১২ জনের বেশি নয়। এদের মধ্যে ছিলেন খান আলতাফ হোসের ভুলু, ডা. পিজুসসহ আরো কয়েকজন। এই ১০/১২ জন মৃগয়া ত্রস্ত প্রতিবাদ মিছিল বের করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বিবির পুস্কনির পাড়ে খুনীচক্রের বিশাল মিছিলের সামনে পড়ে তারা বাটার গলিতে আশ্রয় নিয়েছেন। অবশ্য মিছিল বের করার এই দৃশ্য আমি দেখিনি। খান আলতাফ হোসেন ভুলুর কাছে শুনেছি। যদিও নূরুল আলম ফরিদ দাবি করেছেন, ১৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পক্ষে বরিশালে কোন মিছিল বের হয়নি।

তবে এটি অনেকেই বলেছেন, ইতিহাসের নৃশংসতম দিনে বরিশাল শহরের বগুরা রোডের পেশকার বাড়িতে খিচুড়ি রান্না করা হয়েছে। আনন্দে উলঙ্গ নৃত্য করেছেন কেউকেউ। এরা সবাই ছিলো আওয়ামী লীগের। শুধু শহরে নয়। দুপুরের দিকে এই রকম বিভৎস উল্লাশ দেখেছি আমাদের গ্রাম ধর্মাদীতেও। এরাও ছিলো আওয়ামী লীগের। এদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন বিহারী হুজুর নামে পরিচিত একজন অবাঙ্গালী মাওলানা। ’৭০ এর নির্বাচনের সময় রাস্তা জুড়ে নৌকার প্রতীক থাকায় তোড়নের নীচ থেকে না গিয়ে রাস্তার কিনার দিয়ে যেতেন। তিনি হয়ে উঠলেন বিভৎস উল্লাশের মধ্যমনি। আমি সোজা বাড়ি চলেগেলাম। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ঘটনায় বরিশাল আওয়ামী লীগের বিশাল অংশ যখন উল্লশিত তখন জাসদের অবস্থা ছিলো ভিন্ন। এতো দিন বঙ্গবন্ধু সরকারের বিরোধী শক্তি জাসদের নেতা-কর্মীরা ৭৫-এর ১৫ আগস্ট নিমজ্জিত হন অজানা এক আতংকে। আবারও বলি, এ দৃশ্যপট বরিশালের।

সে সময় বরিশাল জাসদের প্রধান নেতা ছিলেন আবদুল বারেক। অনেকের মতো তিনিও মহা অঘটনের খবর পেয়ে সদর রোডে এসেছিলেন। বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ দুলালের ভাষ্যমতে আবদুল বারেককে দেখা গেছে তাঁর মালিকানার গুলবাগ হোটেলের দোতলার ব্যলকনিতে। কিছুক্ষণ পর তিনি নি:শব্দে ভিতরে চলে গেছেন। হয়তো প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উল্লাশ দেখে ব্যথিত বা বিরক্ত হয়েছিলেন। আতংকগ্রস্থও হয়ে থাকতে পারেন। অথবা অন্য কোন কারণ থাকতে পারে। এ নিয়ে বারেক ভাইর সঙ্গে কখনো কথা হয়নি। কোন মিটিং-এ বিষয়ে তাঁকে কোন বক্তব্য দিতে শুনিনি। তবে এ প্রসঙ্গে কথা বলেছেন জেড আই খান পান্না। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের রাজনীতির সাথে ১৫ আগস্ট সমান্তরালে যায় না। এর ফল শুভ হবে না।’ এর উদাহরন দিতে গিয়ে পিলারের সাইজ অনুসারে নির্দিষ্ট মাপের রড ব্যবহারের অনিবার্যতা উল্লেখ করে জেড আই খান পান্না বলেছিলেন, ‘হিসেবের বাইরে রডের মাপ কম-বেশী হলে বিল্ডিং টেকে না!’ তিনি ছিলে বরিশাল জাসদের প্রধান তাত্ত্বিক। পান্না ভাইকে আমরা বলতাম, বরিশালর সিরাজুল আলম খান।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার লক্ষ্যে ছাত্রলীগের ভেতরে যে নিউক্লিয়াস কাজ করছিলো ১৯৬২ সাল থেকে এই নিউক্লিয়াসের কেন্দ্রে ছিলেন সিরাজুল আলম খান। বিভিন্ন জেলার দায়িত্বে ছিলেন অই এলাকার নেতারা। বরিশাল জেলার দায়িত্বে ছিলেন জেড আই খান পান্না। সে সময় বরিশাল জেলাই এখনকার ছয় জেলা বিশিষ্ট বরিশাল বিভাগ। আওয়ামী লীগ শাসনামলের শেষ দিকে জেড আইখান পান্না জাসদের সমাজতান্ত্রিক ধারায় যুক্ত হন।

এই জেড আই খান পান্নার কাছে শুনেছি, একদিনের ব্যবধানে ঢাকা থেকে ১৬ আগস্ট বরিশালের পৌছে দেখেছেন, পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। সে এক অচেনা শহর! একদিন আগেও যাদেরকে দেখেছেন আওয়ামী লীগের জন্য জানকোরবান এবং জেহাদী চেতনায় রিরোধীদের সংহারে রণচন্ডি- তারাই হয়েগেছেন আওয়ামী বিরোধী। তাদের মধ্যে একধরনের উল্লাশ-উম্মাদনা, হৈ-হৈ রই-রই, আওয়ামী লীগ গেলো কই। আওয়ামী লীগারদের এই জার্সি বদলের দক্ষতা দেখে অনেকের মতো বিস্মিত হয়েছিলেন জেড আই খান পান্নাও। তিনি অনেকটা নীরবে দেখেছেন সাবেক মহা আওয়ামী লীগারদের কর্মকান্ড। জার্সি বদলকারীরা আবদুর রব সেরিনিয়াবাত ও আমির হোসেন আমুর বাড়িতে হামলার জন্য মুখিয়ে উঠলে আর নীরব থাকেননি তিনি। বাঁধা দিলেন। নব্য আওয়ামী বিরোধী সাবেক আওয়ামী লীগারা আগের মতোই তাঁকে ভয় করতো। অনেকেই মনে করেন, সেদিন জেড আই খান পান্নার বাধার কারণেই আবদুর রব সেরিনিয়াবাত ও আমির হোসেন আমুর বাড়িতে হামলা হয়নি। হয়তো এই অপরাধেই ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। সেবার তিনি জেল খেটেছেন টানা দুই বছর এক মাস। আর সেই সময় জেল খাটা মানে কেবল অন্তরিণ থাকা নয়, সাথে ছিলো নানান ধরনের নির্যাতন।

১৯৭১ সালে পরাজিত শক্তি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বরিবারের হত্যা করে খান্ত হয়নি। অন্তরিণ করা হয়েছিলো বাংলাদেশকে। যা থেকে মুক্ত হতে লেগেছে ২১ বছর, ঝড়েছে অনেক রক্ত, অনেক প্রাণ। প্রশ্ন হচ্ছে, সেই স্বাধীনতা বিরোধী চক্র কী সন্যাস গ্রহণ করেছে? আমার কিন্তু তা মনে হয় না!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্র নেতাদের সাক্ষাৎ

দখিনের সময় ডেস্ক: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সশস্ত্র বাহিনীর দিবস উপলক্ষ্যে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত অনুষ্ঠান...

স্কলারশিপ-এ পাকিস্তানে পড়ার সুযোগ ১০০ বাংলাদেশি, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন

দখিনের সময় ডেস্ক: বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপের অনুমোদন দিয়েছে পাকিস্তান। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ স্কলারশিপে ১০০ বাংলাদেশিকে পাকিস্তানে পড়ার সুযোগ দেওয়ার বিষয়টির অনুমোদন দিয়েছেন। সংবাদমাধ্যম...

জনসমর্থন ধরে রাখার চ্যালেঞ্জে বিএনপি

দখিনের সময় ডেস্ক: বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর মধ্যে নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এক-এগারোর সরকারের মতো দুই নেত্রীকে মাইনাস করার কোনো কৌশল এ সরকারের...

নতুন সিইসি সাবেক সচিব নাসির উদ্দীন, নিয়োগ পেলেন চার কমিশনারও

দখিনের সময় ডেস্ক: সাবেক সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ বিষয়ে...

Recent Comments