শক্তিকেন্দ্রগুলো অধুনা ভূমিষ্ঠ জাতীয় নাগরিক পার্টির পাশে কতটা থাকবে, তা বহুলাংশে নির্ভর করবে এ দলের দৃশ্যমান সক্ষমতা ও গ্রহণযোগ্যতার ওপর। নতুন দলের পালে বাতাসের চাপের প্রবলতা ও স্থায়িত্ব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে মোটামুটি নিশ্চিতভাবে ধরে নেওয়া যায়, কিছুটা বাতেনে এবং খানিকটা জাহেরে ম্যাসেল পাওয়ার হিসেবে পাশে থাকবে জামায়াত; কিন্তু জামায়াতের পাবলিক ইমেজ এবং সাংগঠনিক শক্তি ও ভিত্তি উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাড়লেও আলোচিত সময়সীমার মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তা ভোটে কতটা প্রতিফলিত, তা নিয়ে সংশয় কিন্তু রয়েই গেছে।
প্রসঙ্গক্রমে বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন, ৫ আগস্টের সাফল্যে ভিত্তি ছিল অন্তত ৮০ শতাংশ মানুষের সক্রিয় সমর্থন। আর সরাসরি অংশগ্রহণ ছিল অভূতপূর্ব। পাশাপাশি শক্তিকেন্দ্রগুলোর বেশ কয়েকটি পাশে ছিল শুরুতেই। কোনোটি আবার শেষ মুহূর্তে যুক্ত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে জাতিসংঘের ভূমিকার বিষয়ে বিবৃতি এসেছে সাত মাসের মাথায়। আর জানা কথা, জাতিসংঘ মানে কোনো না কোনো মাত্রায় আমেরিকার ইচ্ছা পূরণের ফোরাম। এদিকে বিরাজমান সামগ্রিক বাস্তবতায় কেউ কেউ মনে করেন, নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টির এখন পর্যন্ত যা কিছু দৃশ্যমান, তা হচ্ছে দন্তের ওপরের অংশ, ক্রাউন। আর দন্তের নিচের অদৃশ্য অংশ অন্তত দ্বিগুণ লম্বা ও গভীরে প্রথিত। অবশ্য যা কিছু চাপ তা দন্তের ওপরের অংশকেই সামলাতে হয়। যে কারণে এই অংশ অধিকতর শক্ত হয়। আর ওপর-নিচ নিরাপদ ও কার্যকর রাখতে হলে ওপরের অংশেরই বেশি পরিচর্যা করা ও পরিচ্ছন্ন রাখা প্রয়োজন। প্রকৃতির নিয়মকানুন যথাযথভাবে মানা না হলে দন্তের ক্ষয় মূলত ওপরের অংশ দিয়েই শুরু হয়। আর দ্রুত নিচের দিকে নামে। আবার ইনফেকশন অদৃশ্য অংশেও শুরু হতে পারে। দাঁত অন্তত দুইশ ধরনের রোগে আক্রান্ত হতে পারে। দন্তের দৃশ্যমান ও অদৃশ্য অংশের রসায়নের সঙ্গে রাজনৈতিক দলকেও কিন্তু মেলানো যায়। ফলে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির বিপুল সম্ভাবনার কথা যেমন বলা হচ্ছে, তেমনি বিবেচনায় রাখা হচ্ছে নানান আশঙ্কার বিষয়ও।
# দৈনিক কালবেলায় প্রকাশিত, ২০ মার্চ ২০২৫। শিরোনাম, ‘নতুন দল ও দন্তের অদৃশ্য অংশ’