ভাষার মাসের শেষদিন আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশকারী নতুন দলটির নামের সঙ্গে মিল আছে জেনারেল এরশাদের জাতীয় পার্টি এবং ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময় আঁতুড়ঘরেই অন্তরালে যাওয়া ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাগরিক শক্তির। এ ছাড়া বাংলাদেশের অন্যান্য দলের সঙ্গেও অনেক ক্ষেত্রেই মিল রয়েছে। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, প্রচলিত দলগুলোর সঙ্গে কোনো অমিল নেই নতুন দলের। অমিলও আছে, যা অনেক ক্ষেত্রেই বেশ মৌলিক এবং গভীরের। এর সঙ্গে আরও অনেক বিষয় যুক্ত হয়ে প্রচলিত অনেক রাজনৈতিক দলের মাথাব্যথার কারণ হয়েছে আঁতুড়ঘর থেকে সদ্য বের হয়ে হামাগুড়ি দেওয়া জাতীয় নাগরিক পার্টির।
এই দলটিকে ঘিরে লক্ষণীয় মাত্রায় জনআকাঙ্ক্ষা-কৌতূহল সৃষ্টি হওয়া বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। সবমিলিয়ে এই দল এরই মধ্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। কিন্তু এটি কি শান্ত কাজলদিঘির জলে ক্ষণিকের কম্পন, নাকি কচু পাতায় টলমল স্বচ্ছ জল? নাকি বাংলাদেশের রাজনীতিতে মৌলিক এক মাইলফলকের সূচনা পর্ব? রাজনৈতিক অঙ্গনে এসব আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গভীরের বাস্তবতা হচ্ছে, নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টিকে কেবল ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ এবং ক্ষমতার বাসনার বিভোর বিএনপির সঙ্গে লড়াই করে জিততে হবে—কেবল এমনটি নয়। নতুন দলের নেতাদের লড়তে হবে প্রচলিত ধারার রাষ্ট্র প্রবণতা এবং কাঠামোর বিরুদ্ধেও। বোধগম্য কারণেই গভীরে আরও অনেক কিছু আছে। এদিকে বিশ্ব রাজনীতি বহুলাংশে মাফিয়া প্রভাবিত। বাংলাদেশকে এর বাইরে বিবেচনা করার কোনো কারণ নেই। ফলে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের বিপরীতে দাঁড়িয়ে কাঙ্ক্ষিত বিজয় অর্জন পাহাড় হেলানোর মতোই অসাধ্য বিষয় হিসেবে বিবেচনা করছেন কেউ কেউ। মনে করা হয়, এই কাজে রাষ্ট্র কাঠামোর কোনো কোনো কেন্দ্র থেকে সহায়তা পাওয়া যেতে পারে।
# দৈনিক কালবেলায় প্রকাশিত, ২০ মার্চ ২০২৫। শিরোনাম, ‘নতুন দল ও দন্তের অদৃশ্য অংশ’