প্রচলিত রাজনীতির ধারায় জাতীয় নাগরিক পার্টি যদি কখনো বড় হয়, অথবা দলটি ব্যাপক কোনো উদ্যোগ নেয়, তখন ভেতরে হতে পারে অন্যরকম তৎপরতা। সে ক্ষেত্রে অন্য দল থেকে আগতদের এক সরল রেখায় রাখা কঠিন হতে পারে। শুধু তাই নয়, নানান মতের নানান ঘরানার লোকজনকে নতুন দলের ব্যানারে রাখা স্বাভাবিক সময়ও নানান মাত্রার চ্যালেঞ্জ হয়ে পড়তে পারে। আর সংকটের সময় পরিস্থিতি আরও জটিল হবে, বলাই বাহুল্য। এদিকে নতুন দল থেকে কয়েক নেতার পদত্যাগের খবর এমন বার্তাই দেয়। পাশাপাশি অন্যরকম বার্তাও পাওয়া যাচ্ছে।
পিরোজপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে পাঁচটি বাস রিক্যুইজিশন কাণ্ড বেশ আলোচনায় এসেছে। বাসের জন্য ডিসির কাছে যেতে হলো কেন? নাকি এ ক্ষেত্রে প্রশাসনে প্রভাব দেখানোর প্রবণতা কাজ করেছে! বলা কঠিন। আর এটি যে কেবল একটি জেলায়ই হয়েছে, তা ভাবার কোনো কারণ নেই। এদিকে সারজিস আলমের ঘোষণা অনুসারে বাসনা ছিল ‘অন্তত দুই লাখ লোকের সমাগম ঘটিয়ে নতুন দল এবং শীর্ষ নেতাদের নাম ঘোষণা।’ কিন্তু কত লাখ বা হাজার লোকের সমাগম ঘটানো গেছে, তা নিয়ে কিন্তু নানান প্রশ্ন আছে। কারও কারও মতে দলের আনুষ্ঠানিক নাম ঘোষণার আয়োজন তেমন কোনো প্রভাব সৃষ্টি করতে পারেনি। বরং ‘পর্বতের মূষিক প্রসবের’ মতো ঘটনাই ঘটেছে বলে ধারণা অনেকেরই।
তবে দলকে গণমানুষের কাছাকাছি রাখার প্রবণতা বেশ স্পষ্ট। আমাদের দেশে সাধারণত হোটেল অথবা কোনো অডিটোরিয়ামের হলে সংবাদ সম্মেলন ডেকে দল ঘোষণা এবং অন্যান্য বিষয়ে আড়ম্বরপূর্ণ জানান দেওয়া হয়। এ ধারার বিপরীতে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ আগের যুগে গোয়াল ঘরে হিন্দু রমণীর সন্তান প্রসব করার ধারার মতো অন্যরকম দ্যোতনা দেয়। এদিকে প্রভু যিশুরও জন্ম হয়েছিল গোয়াল ঘরে।
# দৈনিক কালবেলায় প্রকাশিত, ২০ মার্চ ২০২৫। শিরোনাম, ‘নতুন দল ও দন্তের অদৃশ্য অংশ’