দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. নাসিম উদ্দিন আকনের দলীয় পদ সম্প্রতী স্থগিত করেছে জেলা বিএনপি। আওয়মী লীগ শাসনামলের শেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে রাজাপুরে চেয়ারম্যন প্রার্থী হন ফ্যসিষ্ট সরকারের নারীনেত্রী রাজাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আফরোজা আক্তার লাইজু। ঐ নির্বাচন চলাকালে রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক মো. নাসিম উদ্দিন আকন আ’লীগ নেত্রী লাইজুর পালে হাওয়া দিতে শুরু করেন। রাজাপুর উপজেলা বিএনপির দায়িত্বশীল পদে থেকে এমন কর্মকাণ্ডে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন অনেকে।
রাজাপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মিলন মাহমুদ বাচ্চু লাইজুর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও ঐ সময়ের ঝালকাঠি-২ আসনের সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু লাইজুকে সমর্থন দেয়। এমপি আমুর দেয়া প্রার্থী হওয়ায় লাইজুর পক্ষে ষোষনা দিয়ে কাজ করেন নাসিম আকন। অর্থাৎ আওয়ামীরীগের তাবেদারী করে ঠিকাদারী কাজ বাগিয়ে নেয়াই ছিলো নাসিম আকনের মুল লক্ষ্য। পরবর্তীতে ২০২৪ সালের পাঁচ আগষ্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে হাসিনা সরকারের পতন ঘটার পর দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের আমুল পরিবর্তন হয়। কিন্তু নাসিম আকন আর লাইজুর সম্পর্কের বাধন ছোটেনি।
গত ৬ মাসে রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক নাসিম উদ্দিন আকন আ’লীগ নেত্রী আফরোজা আক্তার লাইজুকে সব ধরনের সুবিধা দিয়ে আসছে বলে এলাকায় প্রকাশ্যে রুপ নিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে উপজেলা নির্বাচনে লাইজুর প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী মিলন মাহদুদ বাচ্চুর পক্ষে যারা ভোট চেয়েছে তাদেরকে বর্তমানকালে রাজনৈতিক মামলায় ঢুকিয়ে দিচ্ছে। আর আওয়ামীলীগ পন্থী যারা লাইজুর জন্য ভোট চেয়েছে তাদের কাউকেই মামলায় জড়ানো হয়নি। নাসিম আকন আর আফরোজা লাইজু দুজনে মিলে নিরীহ অনেককে মামলায় আসামী করেছে। অন্যদিকে প্রকৃত অপরাধীরা রয়েছে তাদেরই সু-দৃষ্টিতে। এমন ঘটনায় ত্যগী বিএনপির নেতা কর্মীদের বুকে সৃষ্টি হয়েছে চাপা ক্ষোভ।
অন্যদিকে গত ১ ডিসেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আফরোজা আক্তার লাইজুসহ ১৮৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ২৫০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলার বাদি শহীদ আল-আমিনের চাচা রহমান মামলা নং-৬৯৫। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ভাটারা থানার ওসিকে এজাহার হিসেবে গ্রহন করার আদেশ প্রদান করেন। আদালত থেকে মামলাটি থানায় পৌছলে ভাটার থানার ওসি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করেন। (যার এফ আই আর নং-৩২(১২)/২৪)।
মামলার এজাহার ভুক্ত আসামী হওয়া সত্ত্বেও আফরোজা আক্তার লাইজু গ্রেপ্তার না হওয়ায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তাহলেকি আওয়ামীলীগ নেত্রীকে নাসিম উদ্দিন আকন পুনর্বাসিত করবে? এমন প্রশ্ন রাজাপুরবাসীর। এরই মধ্যে গত শনিবার দুপুরে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ হোসেন ও সদস্যসচিব শাহাদাৎ হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নাসিম আকনের দলীয় পদ স্থগিত করা হয়। এর আগে ৮ জানুয়ারি চাঁদা দাবি ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে নাসিম উদ্দিন আকনকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেয় দলটি।