কালো কোট পরে ভাড়ায় বাইক চালানোর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করার পর থেকে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মাসুদ রানাকে নিয়ে আইনাঙ্গনে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
ভাড়ার বাইকচালক হিসেবে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর হয়ে আলোচনায় আসা সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাসুদ রানাকে সতর্ক করেছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (১৯ জুলাই) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে সতর্ক করেন। এ সময় আদালত বলেছেন, ‘ভালো হয়ে যান মিস্টার মাসুদ রানা।’
আইনজীবী মাসুদ রানার দুটি মামলায় জামিনের আবেদন ছিল এই বেঞ্চে। সকালে মামলা দুটি শুনানি করতে গেলে আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারক তাকে দেখেন বলেন, ‘মিস্টার মাসুদ আপনি বিখ্যাত হয়ে গেছেন উবার চালাইয়া। এগুলো করবেন না। আপনি ভালো হয়ে যান।’
গত ১৬ জুলাই বাইক রাইডিংয়ের একটি ছবি শেয়ার করে এডভোকেট মাসুদ রানা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আবেগঘন একটি পোস্ট দেন। ‘মাননীয় প্রধান বিচারপতি, আপনার কোর্ট অফিসার এখন বাইক রাইডার’ এ শিরোনামে দেওয়া পোস্টে তিনি লিখেন, আইনপেশা লকডাউনে সম্পূর্ণ বন্ধ। লকডাউন ব্যতীত সময়ে সীমিত পরিসরে ভার্চ্যুয়াল কোর্ট ছিল। কিন্তু এখন লকডাউন স্থগিত হলেও কোর্ট বন্ধ। সব পেশার মানুষ কাজ করতে পারছেন, শুধু আইনজীবীরাই কর্মহীন।
তিনি আরও লিখেন, দীর্ঘ এক বছর চারমাস উপার্জনহীন থাকলেও বাড়িভাড়া, চেম্বার ভাড়া, বার কাউন্সিল, বার অ্যাসোসিয়েশনসহ জীবন-যাপন ব্যয় থেমে নেই। কোর্ট অফিসারদের (আইনজীবী) চরম দুর্দিন চলছে। আইনজীবীদের চিফ অথোরিটি মাননীয় প্রধান বিচারপতি, কিন্তু তাকে কিছু বলা যাবে না। আদালত অবমাননার অভিযোগে সনদ চলে যায়। অনেকেই আপদকালীন ভিন্ন পেশা গ্রহণ করলেও সংখ্যাগরিষ্ঠরা কোর্ট খোলার আশায় আছেন। কিন্তু আমি অতি সাধারণ, তাই এত কিছু না ভেবে কর্ম এবং উপার্জনের লক্ষ্যে আপদকালীন এ বাইক রাইডিং পেশা শুরু করলাম। সবার নিকট দোয়া চাই। সবাই ভাল থাকবেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন।
তিনি দীর্ঘদিন ধরেই উচ্চ আদালতে প্র্যাকটিস করেন। তিনি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেনের জুনিয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এই পোস্টের পর দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তাকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।