দখিনের সময় ডেস্ক:
বাংলাদেশের জুয়েলারি শিল্পে অনন্য অবদানের জন্য বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরকে সম্মাননা প্রদান করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। গতকাল হোটেল ওয়েস্টিনে গুণীজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বাজুস সভাপতি এনামুল হক খান দোলন তাঁর হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন। এ সময় ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেছেন, জুয়েলারি খাতে বিপ্লব আনবে বসুন্ধরা গ্রুপের বিনিয়োগ। তিনি বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ যে গোল্ড রিফাইনারি নিয়ে আসছে তাতে দেশের জুয়েলারি ব্যবসার আরও প্রসার ঘটবে। আমাদের বাজার অনেক বড় হবে। মানুষ কেনাকাটা বেশি করবে। স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করতে পারলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে জুয়েলারি পণ্য রপ্তানি হবে।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, এফবিসিসিআইর ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. আমিন হেলালী, এফবিসিসিআইর পরিচালক ও বাজুস সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা এবং রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআইর সহসভাপতি আমিন হেলালী, রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল। স্বাগত বক্তব্য দেন বাজুস সভাপতি এনামুল হক খান দোলন, ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা।
জুয়েলারি শিল্পের বিদ্যমান সমস্যাগুলোর সমাধান করে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীর এ খাতকে আরও উন্নত করবেন। তার হাত ধরে বিশাল একটা পরিবর্তন আসবে জুয়েলারি খাতে। বসুন্ধরা গ্রুপ জুয়েলারি খাতে অনেক বড় বিনিয়োগ নিয়ে এসেছে, এটা দরকার ছিল। বিদেশে কেনাকাটা করতে গিয়ে দেখেছি তারা কীভাবে ডিজাইনের পরিবর্তন এনেছেন, বিদেশে রপ্তানি করছেন। গতকাল রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) আয়োজিত গুণীজন সংবর্ধনা-২০২১ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দেশের শীর্ষ শিল্পোদ্যোক্তা পরিবার বসুন্ধরা গ্রুপ, বসুন্ধরা গোল্ড রিফাইনারি লিমিটেড ও আরিশা জুয়েলার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর বলেন, ভারত ৫০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি করলেও আমরা এখনো ১ শতাংশও করতে পারিনি। আমরা কেন রপ্তানি করতে পারব না? আগামীতে জুয়েলারি খাত অগ্রাধিকার শিল্প হিসেবে এগিয়ে যাবে। দেশে উৎপাদন করে রপ্তানি করলে জিডিপিতে কন্ট্রিবিউশন বাড়বে, এটা বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করবে। প্রায় ২ কোটি মানুষ বিদেশে আছেন।
নবীন-প্রবীণ সবাই মিলে বিদেশে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করি। তিনি বলেন, প্রাচীনকাল থেকেই সোনার গহনা মানুষের কাছে মূল্যবান সম্পদ। অনেকের কাছে আভিজাত্যের অংশ। ধনী বা গরিব কমবেশি আমরা সবাই ব্যবহার করি সোনার গহনা। অনেকে ভবিষ্যতের সম্পদ হিসেবেও রাখেন সোনার গহনা। আরিশা জুয়েলার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, বাংলাদেশসহ এশিয়ার দেশগুলোয় সোনার অর্থনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্ব রয়েছে। এ শিল্পে মূল্য সংযোজন অনেক বেশি হয়। হাতে তৈরি গহনার প্রায় ৮০ শতাংশ বাংলাদেশ ও ভারতে প্রস্তুত হয়। কিন্তু সোনার গহনা রপ্তানিতে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে। অথচ রপ্তানিতে রয়েছে বিশাল সম্ভাবনা।
বসুন্ধরা গোল্ড রিফাইনারি লিমিটেডের কর্ণধার বলেন, বিশ্ববাজারে হাতে তৈরি সোনার গহনার কদর বাড়ছে। এশিয়ার অনেক দেশ বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার সোনার গহনা রপ্তানি করে। ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, আমেরিকা ও কানাডার মতো উন্নত দেশে বাংলাদেশি গহনা রপ্তানির চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশি কারিগরদের হাতে তৈরি গহনা রপ্তানির বিশাল সম্ভাবনা কাজে লাগাতে প্রয়োজন নতুন নতুন উদ্যোগ। পাশাপাশি সোনার গহনা রপ্তানিতে সরকারের নীতিসহায়তা প্রয়োজন।
সায়েম সোবহান আনভীর বলেন, বর্তমানে সারা দেশে প্রায় ২০ হাজার নিবন্ধিত জুয়েলারি ব্যবসায়ী আছেন। এখন জুয়েলারি শিল্প গড়ে ওঠা উচিত। যা দেশের মোট দেশজ উৎপাদন প্রবৃদ্ধি বা জিডিপিতে ইতিবাচক অবদান রাখবে। বিদেশে আমাদের পোশাক শিল্পের যেমন সুনাম, তেমনি জুয়েলারি শিল্পেও সুনাম অর্জন করতে হবে। পোশাক শিল্পের চাইতে সোনার গহনা তৈরিতে মূল্য সংযোজন অনেক বেশি হয়। তিনি আরও বলেন, সারা দেশের জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের হাতে হাত রেখে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এটা করতে পারলে এ শিল্প বিকাশের পথে যে কোনো সমস্যা সমাধান সম্ভব হবে। আগামী দিনে নবীন ও প্রবীণ মিলে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা করছি।