বাস্তবতা হচ্ছে, রাসায়নিক সার ও বালাইনাশক ব্যবহারে ক্ষতি থেকে কোনো কিছুই রেহাই পাচ্ছে না। ফলে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মাটি, পানি, বায়ু ও উপকারী কীটপতঙ্গ। কৃষিজমি বিশেষ করে ধানের জমিতে একসময় শামুক-ঝিনুক ও ছোট মাছ দেখা যেত। এখন এগুলো একেবারেই অনুপস্থিত। ফসলের জমিতে পোকামাকড় খাওয়ার জন্য পাখপাখালির বিচরণ এখন অনেকটাই অতীতের গালগপ্পের মতো শোনায়। ফল-ফসলের মাঠে ব্যস্ত ভ্রমরের ভন ভন অথবা মৌমাছির গুঞ্জন নেই। এ ছাড়া বিলুপ্তপ্রায় কৃষি পরিবেশে নানারকম সরীসৃপ।
প্রসঙ্গত, রাসায়নিক সার উৎপাদন ও আমদানি ধারায় আছে। কিন্তু বাংলাদেশ ক্রপ প্রটেকশন অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যমতে, দেশে পেস্টিসাইডের বাজার ৫ হাজার কোটি টাকার। এর মধ্যে দানাদার বাদে তরল ও পাউডার পেস্টিসাইডের প্রায় পুরোটাই আমদানি করা হয়। আর এই ব্যবসার ৫৫ শতাংশই নিয়ন্ত্রণ করছে কয়েকটি বহুজাতিক কোম্পানি। আর কোণঠাসা হয়ে পড়ছে দেশীয় প্রায় সাড়ে ছয়শ প্রতিষ্ঠান।
প্রশ্ন হচ্ছে, রাসায়নিক সার ও কথিত বালাইনাশকের বালা-মসিবত থেকে আমরা পরিত্রাণ পাব কবে? আমরা কি শকুনের পথে হাঁটছি! আবিষ্কারক কুরি দম্পতি রেডিয়ামের ক্ষতিকর বিষয়ে উল্লেখ করেছিলেন। কিন্তু সর্বনাশ হওয়ার আগে তার সাবধানবাণীতে কান দেওয়া হয়নি। আমাদের দেশে রাসায়নিক সার ও বালাইনাশকের বিষয়ে ‘মিউ মিউ’ সাবধানবাণীতে কে কান দিচ্ছে? অবশ্য, রাজনীতির ঢোলের শব্দ দূষণ অতিক্রম করে বালাইনাশকের পরিবেশ দূষণের সাবধানবাণী কর্ণকুহরে প্রবেশ করার কথাও না!
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
# দৈনিককালবেলায়প্রকাশিত, ২৮/৭/২০২৫, শিরোনাম, “আমরা কি শকুনের পথে হাঁটছি!”