• ৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভূমিকম্পে বড় বিপর্যয়ের শঙ্কায় পলিমাটির বরিশাল নগরী

দখিনের সময়
প্রকাশিত ডিসেম্বর ৫, ২০২৫, ২১:৫৪ অপরাহ্ণ
ভূমিকম্পে বড় বিপর্যয়ের শঙ্কায় পলিমাটির বরিশাল নগরী
সংবাদটি শেয়ার করুন...
দখিনের সময় ডেস্ক:
নরম পলিমাটি, ঘনবসতি ও অবহেলার কারণে বরিশাল এখন ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে সবচেয়ে দুর্বল শহরগুলোর একটি। একটি মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পই নগরজুড়ে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। বরিশাল মহানগরী বড় ধরনের ভূমিকম্পে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা জানিয়েছে নগর উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো।
প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) না মেনে নির্মিত হয়েছে ৩৫ হাজারেরও বেশি ভবন। এর বড় অংশই উপকূলীয় নরম পলিমাটির ওপর দাঁড়িয়ে থাকায় সামান্য কম্পনেও এগুলো ধসে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
তদন্তে উঠে এসেছে, নগরীর প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডে বহুতল ভবন নির্মাণে নিয়ম ভঙ্গ যেন এখন স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাটি পরীক্ষা ছাড়াই ভবন নির্মাণ, অনুমোদিত নকশার বাইরে অতিরিক্ত তলা, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার ও ভবনের ন্যূনতম দূরত্ব ও খোলা জায়গার ঘাটতি। দালালচক্রের মাধ্যমে দ্রুত অনুমোদন এসব কারণে বরিশাল এখন ভূমিকম্পে বিশেষ ঝুঁকির শহর হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সম্প্রতি ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে বরিশাল নগরীর বহু ভবনে ফাটল দেখা দেয়। দেয়াল, ছাদ ও পিলারে ক্ষতির চিহ্ন মিলেছে। সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা সিটি কর্পোরেশনের নগর ভবনের। ১৯৯০ সালে নির্মিত এই ভবনটি অনুমোদিত দুই তলার পরিবর্তে তিনতলা করা হয়। মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হলেও ভবনটি ধসে পড়ার আশঙ্কার কথা জানাচ্ছে বিসিসির প্রকৌশল বিভাগ। ইতোমধ্যে ভবনের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়েছে, বিম ও দেয়ালে ফাটল ধরেছে।
প্রতিদিন এই ভবনে সেবা নিতে আসেন অসংখ্য মানুষ। ৪২৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীও ঝুঁকি নিয়ে এখানেই কাজ করছেন। বিসিসির প্রধান প্রকৌশলী হুমায়ন কবির বলেন, এটি পৌর সময়ের ভবন, দুইতলার প্ল্যান থাকলেও পরে তিনতলা করা হয়েছে। মাঝারি ভূমিকম্পেও ধসের শঙ্কা রয়েছে। বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারী জানান, শুধু নগর ভবন নয় সম্প্রতি ভূমিকম্পে বরিশালের বেশ কিছু বেসরকারি ভবনেও ফাটল দেখা দিয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এসব ভবনে বসবাসকারীরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। সচেতন নাগরিকরা বলছেন, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো চিহ্নিত করে দ্রুত অপসারণ না করলে বড় বিপর্যয় ঠেকানো যাবে না। বরিশাল সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, মোট হোল্ডিং সংখ্যা: ৫৭,০০০, টিনশেড বাড়ি আছে ১৭,০০০, ভবন আছে ৪০,০০০ আর বহুতল ভবন আছে ২০০টির বেশি।