• ১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১লা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিজয় দিবসের নামে ইউএনও’র চাঁদাবাজি, বাদ যায়নি বাজারের মাছ বিক্রেতাও

দখিনের সময়
প্রকাশিত ডিসেম্বর ১৫, ২০২৫, ১৮:২৮ অপরাহ্ণ
বিজয় দিবসের নামে ইউএনও’র চাঁদাবাজি, বাদ যায়নি বাজারের মাছ বিক্রেতাও

ইউএনও তাপসী রাবেয়া

সংবাদটি শেয়ার করুন...

দখিনের সময় ডেস্ক:
মহান বিজয় দিবস উদযাপনের নাম করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাপসী রাবেয়ার বিরুদ্ধে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। সরকারি দপ্তর থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, মাছ বিক্রেতা, ইটভাটা মালিক কেউই এ থেকে রেহাই পাননি বলে অভিযোগ করেন তারা। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উদযাপনের কথা বলে উপজেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বাজার কমিটি ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট অংকের অর্থ আদায়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কোথাও মৌখিক চাপ, কোথাও তালিকা তৈরি করে প্রকাশ্যেই চাঁদা তোলা হয়।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের গাজীরবাজারে ইউপি সদস্য মুসা মেম্বার ও বাজার ব্যবসায়ী পরিচালনা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম মিয়ার নেতৃত্বে প্রতিটি দোকান থেকে বিজয় দিবসের আমন্ত্রণ কার্ড দিয়ে ২০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়। দোকানদারদের প্রতিবাদের মুখে বিষয়টি জানাজানি হলে পরে ইউএনওর নির্দেশে আদায়কৃত টাকা ফেরত দেওয়া হয়। গাজীরবাজার ব্যবসায়ী কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম মিয়া বলেন, ইউএনও ম্যাডামের অফিস সহকারী কামাল হোসেন ফোন করে বিজয় দিবস উদযাপনের খরচের কথা বলে টাকা তোলার কথা জানান। পরে ইউএনওর অফিস থেকে আমন্ত্রণ কার্ড পাঠানো হলে আমরা দোকানদারদের কাছ থেকে টাকা তুলি। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে টাকা ফেরত দেওয়া হয়।
এদিকে সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে পৌর শহরের সড়ক বাজারের সাবেক কাউন্সিলর ও কাপড় ব্যবসায়ী আতিকুর রহমানের নেতৃত্বে ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরি করে দোকানে দোকানে চাঁদা আদায় করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, মাছ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও ২০ টাকা থেকে শুরু করে ২০০, ৫০০ ও এক হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করা হয়েছে। উত্তর ইউনিয়নের ইটভাটা মালিক ইকবাল হোসেন জানান, আমাদের প্রতিটি ইটভাটা থেকে ৩০ হাজার টাকা করে চাঁদা নেওয়া হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি দপ্তরের কর্মচারী বলেন, আমাদের অফিসে ২০ হাজার টাকা চাঁদা ধার্য করা হয়েছিল। আমরা ১০ হাজার টাকা দিয়েছি।
এ বিষয়ে আতিকুর রহমান বলেন, রোববার ইউএনও ম্যাডাম আমাদের ডেকে বলেন—সরকারি বরাদ্দ নেই, ফান্ড নেই, বিজয় দিবস কীভাবে করব? এরপর ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সহযোগিতা চাওয়া হয়। সেই কারণেই আমরা চাঁদা তুলছি।

চাঁদা তুলার বিষয়টি স্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিজয় দিবস উদযাপন কমিটির সভাপতি তাপসী রাবেয়া বলেন, সরকারি বরাদ্দ খুবই কম। বিজয় দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচি করতে অনেক টাকা লাগে। তাই স্থানীয়দের সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে। তবে কাউকে জোর করা হয়নি। এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার জাহানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, চাঁদা তোলার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে ইউএনও যদি এমন কিছু করে থাকেন বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।