রাসেল হোসেন:
দৈনিক দখিনের সময় তৃতীয় বর্ষে পদার্পন করল আজ, ১ অক্টোবর। শুদ্ধ সাংবাদিকতার অঙ্গীকার নিয়ে ২০১৮ সালের আজকের এই দিনে যাত্রা শুরু করে দৈনিক দখিনের সময়। দুই বছরের বৈরী সময় অতিক্রমকালে করোনাকালও মোকাবিলা করেছে দৈনিক দখিনের সময়। এরপরও পরাভব মানেনি পত্রিকাটি।
আবেগ উচ্ছাস ভালোবাসার দৈনিক দখিনের সময় তৃতীয় বর্ষে পদার্পন করল আজ। কিন্তু এবার এই দিনটি আমাদের জন্য আনন্দের চেয়ে অধিকতর বেদনার। কারণ দক্ষিণ বঙ্গের অভিভাবক মন্ত্রী আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ গুরুতর অসুস্থ্য। তিনি রাজধানীর স্কোয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ কারণে দৈনিক দখিনের সময়-এর বর্ষপূর্তীর সকল অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে।
শুদ্ধ সাংবাদিকতার অঙ্গীকার নিয়ে ২০১৮ সালের আজকের এই দিনে যাত্রা শুরু করে আমাদের দৈনিক দখিনের সময়। এই তো সেদিন যাত্রা শুরু হল। দেখতে দেখতে কেটে গেল দুই বছর। সময়ের হিসেবে এই দুই বছর খুব কম বা বেশী সময়, যাই হোক না কেন, এই পথ চলা ছিল না একেবারে মসৃন। মিডিয়ার তথা প্রিন্ট মিডিয়ার ধসের এ যুগে পোড়াতে হয়েছে ব্যাপক কাঠখড়। বিশেষ করে করোনা মহামারীর তান্ডব। এরপরও হাল ছাড়েনি, ছাড়বেও না। শক্ত ভিতের উপরেই দাড়িয়ে আছে, থাকবে দৈনিক দখিনের সময়।
বরিশাল মিডিয়া পাড়ার বিভাজনে না জড়িয়ে দৈনিক দখিনের সময় আছে তার অবিচল লক্ষ্যে। শুদ্ধ সাংবাদিকতার অটল অবিচল দৈনিক দখিনের সময়, নূন্যতম কোন আপস না করেই পথ চলা। আর এর নায়ক কালজয়ী প্রবন্ধ গেদুচাচার খোলা চিঠির লেখক সিনিয়র সাংবাদিক কলামিস্ট আমাদের প্রধান সম্পাদক আলম রায়হান ।
করোনা মহামারীর তান্ডবে আর সব কিছুর মতোই ওলট পালট হয়ে গেছে মিডিয়া পাড়ার বাস্তবতা। বরিশাল কেবল নয়, ঢাকা থেকে প্রকাশিত দেশের প্রথম সাড়ির পত্রিকা, ইলেকট্রনিক মিডিয়াতেও কর্মী ছাটাইয়ের খবর শোনা গেছে। সাংবাদিকদের বেতন না পাওয়ার আর্তনাদ তো নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। কিন্তু ব্যতিক্রম দৈনিক দখিনের সময়। কর্মী ছাটাই তো দূরের কথা। এক টাকাও বেতন কমেনি বরং করোনা কালেও নিয়মিত ভাবে বাড়ানো হয়েছে বেতন। এমনকি আছে মাস খানেক অফিস না করা অসুস্থ সহকর্মীর বেতন বাসায় পৌছে দেয়ার দৃষ্টান্তও। মাস শেষে স্বয়ং প্রধান সম্পাদক নিজে গিয়ে বাসায় পৌছে দিয়েছেন বেতন। যার প্রত্যক্ষ সাক্ষী আমি। যা ঐ সহকর্মীর কাছে ছিল অমবস্যার চাঁদের মতই।
দৈনিক দখিনের সময় শুধু মাত্র একটি প্রতিষ্ঠান বা পত্রিকা নয়। এটি একটি পরিবার “ফ্যামিলি ফাস্ট”। কখনো মনে হয়নি আমি এই পত্রিকার একজন কর্মচারী বা কর্মকতা। সত্যিই আমি গর্বিত এই পরিবারের সদস্য হতে পেরে। শুধু আমি নয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতে অতীতে যারা ছিল ও বর্তমানে যারা আছেন সকল পাঠক, শুভাকাংখী, বিজ্ঞাপনদাতা সবাই দখিনের সময় পরিবারের সদস্য।
দখিনের সময় গতানুগতিক ধারা পত্রিকা নয়। এটি একটি প্ল্যাটফর্ম। দৈনিক দখিনের সময় মুক্তচিন্তার যে কেউ যুক্ত হতে পারেন। বিশেষ কলাম, খোলা কলামসহ চালু রয়েছে বেশ কয়েকটি কলাম। নিয়মতি লিখে যাচ্ছে সাংবাদিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। আছে সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণের জন্য দখিনের সময়ের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সাউথ মিডিয়া সেন্টার। সাংবাদিকদের প্রশিক্ষনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের কম্পিউটারের মাইক্রোসফট অফিস, এক্সেল, পাওয়ার পয়েন্ট, গ্রাফিক্সসহ বিভিন্ন প্রোগ্রামরে উপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। করোনা তান্ডবে কিছু দিন বন্ধ থাকার পরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবারও চালু হচ্ছে সাউথ মিডিয়া সেন্টার।
দৈনিক দখিনের সময় খারাপের ভালোর সাথে নয়, ভালোর ভালোর সাথে ছিল- আছে-থাকবে। দেশ জাতি ও মানুষের কল্যাণেই কাজ করছে দখিনের সময়। শিক্ষা, সাংস্কৃতির বিকাশ, ধর্মের অপব্যখ্যা বা অপব্যাবহার রোধ, স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিয়ে রয়েছে বিভিন্ন আয়োজন। শিক্ষার বিকাশে জন্য আছে সময়ের শিক্ষা নামের শিক্ষা পাতা, সাংস্কৃতির বিকাশে আছে রূপসী সময়ের সাহিত্য আসর নামের সাহিত্য পাতা, স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য সময়ের স্বাস্থ্য নামের স্বাস্থ্য পাতা, ধর্মের অপব্যবহার রোধে আছে ধর্ম জীবন নামের ধর্ম পাতা। এছাড়াও বিভিন্ন জনদুর্ভোগ, সংকট, সম্ভাবনার খবর তুলে ধরছে নিয়মিত। যাতে সংকট হতে পারে সমাধান আর নিত্য নতুন সম্ভাবনার দাড় যেন উন্মেচিত্ত হতে পারে।
নিরপেক্ষ নয় স্বাধীনতার স্বপক্ষে থেকেই বস্থুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করে, করবে দৈনিক দখিনের সময়। আমরা দৃঢ় কন্ঠে বলতে চাই, এক ঝাঁক তরুণদের নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাবোই ইনশাআল্লাহ। সকলের সহযোগিতা কাম্য।
বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানমালা স্থগিত
দৈনিক দখিনের সময় তৃতীয় বর্ষে পদার্পন উপলক্ষে অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছিলো। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে সতর্কতার সঙ্গে সাজানো হয়েছিলো অনুষ্ঠানমালা। কিন্তু দক্ষিণ বঙ্গের অভিভাবক মন্ত্রী আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পড়ায় দৈনিক দখিনের সময়-এর বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানমালা স্থগিত করা হয়েছে।