দখিনের সময় ডেস্ক:
উপসর্গে সাদৃশ্য থাকার কারণে মাঙ্কি পক্সকে অনেকেই চিকেন পক্স ভেবে ভুল করছেন। বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ এর আতঙ্কের মাঝেই উদ্বেগ বাড়াচ্ছে মাঙ্কি পক্স। ভাইরাসটি পর্তুগাল, স্পেন, ইউরোপ ও আমেরিকার’সহ কয়েকটি দেশেও মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। গত ৭ মে লন্ডনে প্রথম এক ব্যক্তির শরীরে মাঙ্কি পক্সের ভাইরাস পাওয়া গিয়েছিলো। আক্রান্ত ওই ব্যক্তি নাইজেরিয়ায় গিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। সেখানেই কোনো ভাবে আক্রান্ত হন বলে ধারণা করা হয়েছিলো।
কী এই রোগ?
চিকিৎসকরা বলছেন, এটি এক বিশেষ ধরনের বসন্ত রোগ। প্রাণীদেহের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে, ইঁদুরের মাধ্যমে এই ভাইরাস দ্রুত ছড়াতে পারে।
কতটা সংক্রামক এই ভাইরাস?
মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে বাড়তে পারে সংক্রমণের আশঙ্কা। শ্বাসনালি, শরীরে তৈরি হওয়া কোনও ক্ষত, নাক কিংবা চোখের মাধ্যমেও অন্যের শরীরের প্রবেশ করতে পারে মাঙ্কি ভাইরাস। বিশেষজ্ঞরা প্রাথমিকভাবে এটাই ধারণা করেছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, সঙ্গমের মাধ্যমেও একে অপরের শরীরে হানা দিতে পারে এই ভাইরাস। আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির সঙ্গে শারীরিক মিলনেও মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
এই ভাইরাস চেনার উপায় কি?
কাঁপুনি দিয়ে জ্বর, মাথা যন্ত্রণা, পেশিতে ব্যথা, গায়ে হাত পায়ে ব্যথার মতো কিছু প্রাথমিক উপসর্গ তো রয়েছেই। এ ছাড়াও মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত হলে শরীরের বিভিন্ন লসিকা গ্রন্থি ফুলে ওঠে। শরীরে ছোট ছোট অসংখ্যা ক্ষতচিহ্নের দেখা যায়। ক্রমশ সেই ক্ষত আরও গভীর হয়ে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। গুটি বা জল বসন্তের সঙ্গে মাঙ্কি পক্সের উপসর্গের দিক থেকে সাদৃশ্য থাকায় অনেকেই প্রাথমিক পর্যায়ে এই রোগকে বসন্ত বা চিকেন পক্স বলে ভুল করছেন।
** লসিকা গ্রন্থি: গলা ও মাথার পেছন, কুচকি ও বগলে এই লসিকা গ্রন্থি থাকে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অংশ হিসেবে এই গ্রন্থি রোগ প্রতিরোধের কোষ জমা রাখে। ভাইরাসে আক্রান্ত হলে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা সক্রিয় হয়ে এই গ্রন্থিগুলো ফোলা শুরু করে।
মাঙ্কিপক্স থেকে চিকেন পক্স কতটা আলাদা?
ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস অনুসারে, মাঙ্কি পক্সকে অনেকেই চিকেন পক্স বলে ভুল করছেন। চিকেন পক্সের মতো মাঙ্কি পক্সের ক্ষেত্রেও শরীরে ছোট ছোট ফুসকুড়ি দেখা দিচ্ছে। ফ্লুইড যুক্ত এই ফুসকুড়িগুলি পরে ত্বকের দাগেরও সৃষ্টি করছে। উপসর্গগত সাদৃশ্য থাকলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাঙ্কি পক্স সম্পূর্ণ নতুন একটি ভাইরাস। চিকেন পক্সের মতো রোগের প্রতিকার থাকলেও এই বিরল রোগ নিরাময়ের এখনও পর্যন্ত কোনও সুনির্দিষ্ট চিকিৎসাপদ্ধতি নেই বলেই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা