অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এটা জানা সম্ভব হয় না যে ঠিক কি কারনে তাদের ক্যান্সার হয়েছে। ইজঈঅ১ এবং ইজঈঅ২ জিন মিউটেশনকে স্তন ক্যানসারের কারন হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন বিজ্ঞানীরা। এই জিন মিউটেশন মা বাবা থেকে তাদের বাচ্চাদের শরীরে স্থানান্তরিত হতে পারে। বায়োলজিক্যালি ক্যান্সার এর জন্যে কোষের ক্ষতিগ্রস্ত ডিএনএ কেই দায়ী বিবেচনা করা হয়। কিন্তু কেন বা কিভাবে ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা এখনও অনেকাংশে অজানা।
ডিএনএ এর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণ এটি জেনেটিক কিংবা পরিবেশগত, অথবা উভয়ের সমন্বয়ে হতে পারে। যা হোক, স্তন ক্যান্সারের সাথে যুক্ত কিছু নির্দিষ্ট রিস্ক ফ্যাক্টর বা ঝুঁকির কারণ রয়েছে। স্তন ক্যান্সারের ঝুকি সমূহকে অপরিহারযোগ্য ও পরিহারযোগ্য এই দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়।
স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি সমুহ:
লিঙ্গ: সাধারনভাবে স্তন ক্যান্সার কেবল মাত্র মহিলাদের হয়ে থাকে বলে ধারণা করা হলেও এটা পুরুষদেরও হয়ে থাকে। তবে, পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের প্রায় ১০০ গুণ বেশি ঘটে।
বয়স: বয়স বৃদ্ধির সাথে একজন মহিলার স্তন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বাড়তে থাকে। ৪০ বছরের কম বয়সী মহিলাদের মধ্যে স্তন ক্যান্সারের হার কম। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত মহিলাদের কেবলমাত্র ৪ শতাংশের বয়স ৪০ এর নীচে। স্তন ক্যান্সারে আক্রান্তের হার ৪০ বছর বয়সের পরে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে এবং ৭০ বছরের বেশি বয়সী মহিলাদের মধ্যে সর্বোচ্চ। এক গবেষনায় দেখা গেছে আক্রমণাত্মক স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত তিনজনের মধ্যে দুইজন ৫৫ বছর বয়সের অধিক।
জাতি: জাতিভেদে স্তন ক্যান্সার এর ঝুকি কম বেশী হয়। অন্যান্য জাতির তুলনায় ককেশীয় মহিলাদের মধ্যে স্তন ক্যান্সার আক্রান্তের হার বেশী।
পারিবারিক ইতিহাস এবং জেনেটিক ফ্যাক্টর: যদি কোন মহিলার মা, বোন, বাবা বা সন্তানের স্তন বা ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারের ইতিহাস থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে তার স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। ৪০ বছরের কম বয়সী একজন নিকটাত্মীয়ের স্তন ক্যানসার থাকলে এই রোগের সম্ভাবনা বাড়ে।
ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যের ইতিহাস: যদি কারও একটি স্তনে ক্যান্সার ধরা পড়ে, তাহলে ভবিষ্যতে অন্য স্তনে ক্যান্সার ধরা পড়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
ঋতুস্রাব এবং সন্তান জন্মদান বিষয়ক: অল্প বয়সে (১২ বছরের কম) ঋতুস্রাব শুরু হওয়া, অধিক বয়সে মেনোপজ (৫৫ বছর এর পরে) শুরু হওয়া, অধিক বয়সে প্রথম সন্তান জন্ম দেয়া, অথবা সন্তান একেবারেই না হওয়া ইত্যাদি স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
ঘন স্তন টিস্যু: স্তন টিস্যু অধিকতর ঘন হলে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এর ফলে স্তনের লাম্প বা চাকা সনাক্ত করা কঠিন হয়ে যায়।
জেনেটিক পলিমরফিজম: কিছু জিনের জেনেটিক পলিমরফিজমের কারনে স্তন ক্যান্সার এর ঝুঁকি কম-বেশী হয়। এই জেনেটিক পলিমরফিজমের কারনে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে এমনকি একই জনগোষ্ঠীর বিভিন্নজনের মধ্যে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা কম বেশী হয়।