রিজন সর্দার ॥
ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ধীরগতিতে আবার বাড়ছে পেয়াজের দাম। পিয়াজ পট্টির মালিক সমিতির সভাপতি শংকর দত্ত জানিয়েছেন, বাজারে পর্যাপ্ত মাল সরবরাহ আছে, তবে বিক্রি গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম। দাম ওঠা-নামা ইন্ডিয়ার বর্ডারের ইনপোর্টারদের উপর নির্ভর করে। এদিকে পেয়াজের মূল্য বৃদ্ধির প্রবনতাকে এক ধরনের অশনী সংকেত হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
রবিবার (২৬জুলাই) বরিশাল নগরীর পোর্ট রোড পেয়াজ পট্টির বাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভারতীয় পেয়াজ গত সপ্তাহের থেকে এ সপ্তাহে প্রতি কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা বেড়েছে। অন্যদিকে দেশী পেয়াজের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে ৭ থেকে ৮ টাকা । এদিকে চায়না আদার দাম কেজিতে ১২ টাকা বেড়ে ১৩৫ টাকা হয়েছে। রাজশাহী এবং মুন্সিগঞ্জের আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ২৬ টাকা কেজি দরে।
বেনাপোলের ইনপোর্টার মোঃ আব্বাস মিয়ার কাছে ফোন কলে জানতে চাইলে তিনি জানান, মালের পর্যাপ্ত আমদানি আছে, চাহিদাও আছে, বিক্রিও মোটামুটি ভালোই। গত সপ্তাহের থেকে পিয়াজের দাম কেজিতে ৫/৬ টাকা বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত সপ্তাহে বাজার খারাপ থাকার কারনে আমরাও ৩ টাকা লোকসান করে মাল বিক্রি করেছি, আর মধ্যস্থ ব্যবসায়িরাও ২ টাকা করে কেজিতে লোকসান দিয়ে মাল বিক্রি করেছে। তবে এ সপ্তাহে সামান্য লাভে মাল বিক্রি করছি। পরবর্তীতে বাজার বাড়বে কি কমবে সেটা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছেনা। তবে স্থিতিশীল থাকার সম্ভবনাই বেশি ।
পিয়াজ পট্টির মালিক সমিতির সভাপতি শংকর দত্ত জানিয়েছেন, বাজারে পর্যাপ্ত মাল সরবরাহ আছে, তবে বিক্রি গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম। দাম ওঠা-নামা ইন্ডিয়ার বর্ডারের ইনপোর্টারদের উপর নির্ভর করে। তাদের কাছ থেকে বেশি দামে ক্রয় করলে আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। তবে এবার ব্যবসায়িরা লোকসানই বেশি দিচ্ছে। এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। পিয়াজ পট্টির পায়েল এন্টার প্রাইজের ম্যানেজার মো. ফারুক হোসেন জানান, ভারতীয় পিয়াজের দামটা এ সপ্তাহে একটু বেড়েছে। বর্ডার এলাকা থেকেই আমারদের একটু বেশি দাম দিয়ে কিনতে হয়। সেটার সাথে পরিবহন ও লেবার খরচ সংযোগ করে সামান্য লাভেই বিক্রি করতে হয় আমাদের। আর গত বছরের তুলনায় এবার পেঁয়াজের চাহিদা খুবই কম। দুরবর্তী ক্রেতা সাধারনের আগমনও খুব একটা লক্ষ্য করা যায়না। তিনি আরো জানান, গত বছরের ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে যে পরিমানে বিক্রি ছিলো এবছর তার অর্ধেকেরও কম।
পেয়াজ পট্টির খুচরা ব্যবসায়ী রিপন মিয়া জানান, করোনা মহামারি জনিত কারনে আমাদের ব্যবসা এবছর খুবই মন্দা, ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে বিক্রি বাড়বে বলে আশাবাদী ছিলাম। কিন্তু বিক্রি বাড়েনি। গত তিন/চার মাসেও তেমন বিক্রি ছিলোনা। যে কারনে ব্যবসা টিকিয়ে রাখাই দায় হয়ে দাড়িয়েছে। এমটাই জানিয়েছেন এই খুচরা ব্যবসায়ি।
পাইকারি বাজার পর্যবেক্ষন করে আরো জানাগেছে, মালের পর্যাপ্ত আমদানি থাকলেও নেই ক্রেতা সাধারণের তেমন আগমন, নেই ভালো বিক্রি। দুরবর্তী ক্রেতাদের আগম নেই এবার বরিশালের পেয়াজ বাজারে। আরো জানা যায়, চলতি সপ্তাহে নগরীর বিভিন্ন বাজারে দেশি ও আমদানি করা উভয় ধরনের পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৪ থেকে ৫ টাকার ওপরে।
বাজার দর
পাইকারি ও খুচরা বাজারদর তালিকাঃ পাইকারি প্রতিকেজিঃ দেশি পেয়াজ ৩৪-৩৫ টাকা ইন্ডিয়ান পেয়াজ ২০-২২ টাকা দেশী রোসন ৬৫-৭০ টাকা চায়না রোসন ৬০-৬৫ টাকা চায়না আদা ১৩৫ টাকা রাজশাহী আলু ২৬-২৬.৫০ টাকা মুন্সিগঞ্জে আলু ২৫-২৫.৫০ টাকা খুচরা প্রতিকেজিঃ দেশি পেয়াজ ৩৭-৪৫ ইন্ডিয়ান পেয়াজ ২৭-২৮ রোশন দেশী ৭০-৭২ রোসন চায়না ৭০-৭৫ আদা চায়না ১৪০-১৪২ টাকা আলু মুন্সিগঞ্জ ২৮-৩০ টাকা আলু রাজশাহী ২৯-৩০ টাকা হলুদ হিরোট ১০০-১১০ টাকা।