দখিনের সময় ডেস্ক ॥
করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ কী আগামী শীতে আসবে।শীতের সময় একই সাথে শীতকালীন ইনফ্লুয়েঞ্জা আর করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশংকা করছেন অনেকে। বিজ্ঞানীরা আশংকা করছেন, শীতের অনুকুল পরিবেশে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ এবং নিয়মিত শীতকালীন ফ্লু – দুটো যদি একসঙ্গে হলে পরিস্থিতি প্রথম দফার চেয়ে অধিকতর ভয়াবহ হতে পারে।
উল্লেখ্য, মানবদেহের বাইরের পরিবেশ যখন ঠান্ডা – তখন সব ভাইরাসই অপেক্ষাকৃত ভালোভাবে বেঁচে থাকতে পারে। যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাসের জন্য বিশেষ করে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিশেষ অনুকুল বলে দেখা গেছে। গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরাস গবেষণা কেন্দ্রের ড. পাবলো মারসিয়া বলছেন, আমি বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগে আছি।
আর মাস তিনেকের মধ্যেই শীত আসছে। পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই এসময়টায় ঠান্ডা লাগা বা ফ্লু-র প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এ কারণে আশংকা দেখা দিয়েছে যে ঋতু পরিবর্তনের সময় করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাবে এবং বলা হচ্ছে, প্রথম দফায় সংক্রমণ যত ব্যাপক ছিল – দ্বিতীয় দফায় তা আরো মারাত্মক হতে পারে। বিষয়টি বেশ জটিল।
শুধু করোনাভাইরাসের প্রকৃতি নয়, অন্য নানা রকম শীতকালীন রোগজীবাণু, মানুষের আচরণ, সরকারী নীতির সাফল্য-ব্যর্থতা – এরকম অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আসলেই আসবে কিনা। তা ছাড়া বিজ্ঞানে এখন নতুন কিছু গবেষণা চলছে যাতে দেখা যায় যে একটি ভাইরাল সংক্রমণ হয়তো অন্য কোন ভাইরাসের সংক্রমণকে আটকে দিতে পারে। তবে করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে এর কোন প্রভাব পড়বে কিনা তা এখনো অজানা।
করোনাভাইরাস আছে মোট চার রকমের -যা সাধারণ সর্দিজ্বরের লক্ষণ সৃষ্টি করে। প্রতিটিই সহজে ছড়ায় শীতের সময়। ইনফ্লুয়েঞ্জা, রাইনোভাইরাস, এবং আরএসভি নামে আরেকটি ভাইরাস – এর সবগুলোরই আচরণ মোটামুটি একই রকম।
শীতের সময় একই সাথে শীতকালীন ইনফ্লুয়েঞ্জা আর করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশংকা করছেন অনেকে। তবে লন্ডন স্কুল অব হাইজিন এ্যান্ড ট্রপিক্যার মেডিসিনের ড. রেচেল লো বলছেন, এগুলো হয়তো মৌসুমি হতে পারে, কারণ অন্য কিছু ভাইরাস আছে যেগুলো শীতকালে সংক্রমণ বাড়তে দেখা যায়– কিন্তু আবহাওয়া নাকি মানুষের আচরণ, কোনটার প্রভাব এখানে বেশি এখনো তা বোঝার ক্ষমতা খুব সীমিত। দেখা গেছে, মানবদেহের বাইরের পরিবেশ যখন ঠান্ডা – তখন সব ভাইরাসই অপেক্ষাকৃত ভালোভাবে বেঁচে থাকতে পারে।
যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাসের জন্য বিশেষ করে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিশেষ অনুকুল বলে দেখা গেছে। সূর্যের আলোয় যে অতিবেগুনি রশ্মি থাকে তা ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। কিন্তু শীতের সময় অতিবেগুনি রশ্মির পরিমাণও কম থাকে। শীতপ্রধান দেশগুলোতে ঠান্ডার সময় লোকে ঘরের ভেতরেই বেশি থাকে। দরজা জানালা থাকে বন্ধ থাকে। বাতাস চলাচল করে কম। এবং এই পরিবেশই করোনাভাইরাস ছড়ানোর জন্য সহায়ক।