হজযাত্রীর সর্বনিম্ন কোটা গত বছরের চারগুণ নির্ধারণ করায় হতাশ হয়ে পড়েছেন এজেন্সি মালিকরা। তারা বলছেন, গত বছর যেখানে আড়াইশ হজযাত্রী মেলাতে ও তাদের সেবা দিতেই হিমশিম খেতে হয়, সেখানে এবার এক হাজার হজযাত্রী একত্র করে ব্যবস্থাপনা করা খুবই কঠিন কাজ হবে এবং চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তারা এজেন্সি প্রতি হজযাত্রীর কোটা সর্বনিম্ন ১০০ জন করার দাবি জানিয়েছেন। তারা বলছেন, এতে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা রয়েছে।
এবার এজেন্সি মালিকরা হজযাত্রীদের সর্বনিম্ন কোটা নিয়ে চরম উদ্বেগ উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন। তারা বলেন, গত সরকারের আমল থেকেই এজেন্সি প্রতি হজযাত্রীদের সর্বনিম্ন কোটা বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়। মাত্র ৫৬ এজেন্সির মাধ্যমে হজ কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা নেয়া হয়। কিন্তু সে সময় সাধারণ হজ এজেন্সি মালিকদের বাধার মুখে সেটি পারেনি।
আগামী বছরের হজে এজেন্সি প্রতি হজযাত্রীর সর্বনিম্ন কোটা এক হাজার করা হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে চার গুণ বেশি। এত বেশি সংখ্যক হজযাত্রী কোনো একক এজেন্সির কাছেই নেই। এ জন্য এজেন্সিগুলোকে লিড এজেন্সি নির্ধারণ করে কমপক্ষে এক হাজার হজযাত্রী একত্র করার নির্দেশ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। আগামী ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে এ কাজ শেষ করার নির্দেশনা দিয়ে গত বুধবার এজেন্সিগুলোকে চিঠি দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, গত হজের মতোই আগামী বছরের হজে বাংলাদেশের জন্য এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের কোটা বরাদ্দ করেছে সৌদি সরকার। গত বছর কোটা পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। মাত্র ৮৫ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি গত বছর পবিত্র হজ পালন করেন। এ বছর হজ নিবন্ধন প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। গতকাল পর্যন্ত নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন প্রায় ৭৫ হাজার হজযাত্রী। আগামী ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিবন্ধনের শেষ সময় রয়েছে। সে পর্যন্ত আরো হজযাত্রী বাড়বে বলে এজেন্সি মালিকরা জানিয়েছেন।
হাবের সাবেক সহসভাপতি মাওলানা ফজলুর রহমান জানান, বিষয়টি নিয়ে এজেন্সি মালিকরা খুবই চিন্তায় আছে। তারা এটা কোনোভাবেই মানবে না। এবার বেশির ভাগ এজেন্সির অধীনে ৪০-৫০ জন করে হজযাত্রী আছে। একশ’র বেশি হজযাত্রী আছে সর্বোচ্চ ২০টি এজেন্সির। আড়াই শতাধিক হজযাত্রী আছে ৪-৫টি এজেন্সির। এক হাজার হজযাত্রী কোনো এজেন্সিরই নেই। ফলে একটি লিড এজেন্সির অধীনে ১৫-২০টি এজেন্সির হজযাত্রী দিতে হবে। এতে হজযাত্রীদের সেবায় চরম বিপর্যয় দেখা দেবে। হজযাত্রী অন্য এজেন্সির কিন্তু কোনো সমস্যা হলেই লিড এজেন্সিকে দায়ী করা হবে। এ জন্য কোনো এজেন্সিই এ দায় নিতে চায় না। সরকারের উচিত সর্বনিম্ন একশ’ জন করা, না হলে গত বছরের মতো আড়াইশ’ করা। এটি যদি সৌদি সরকারের সাথে বসে সরকার ঠিক করতে না পারে তাহলে হজে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে।