• ১লা জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বরিশাল বিএনপির এক নেতাকে বহিষ্কারের দাবিতে

দখিনের সময়
প্রকাশিত ডিসেম্বর ২৯, ২০২৪, ১৮:৩২ অপরাহ্ণ
বরিশাল বিএনপির এক নেতাকে বহিষ্কারের দাবিতে
সংবাদটি শেয়ার করুন...

স্টাফ রিপোর্টার:

বরিশালে বিএনপির এক নেতাকে গ্রেফতার ও দল থেকে বহিষ্কারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। রোববার বেলা ১১ টায় বরিশাল প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ জীবন। তিনি অভিযোগ করেছেন, অবৈধ ড্রেজার ব্যবসা ও স্পিডবোট ঘাট থেকে চাঁদা তোলার প্রতিবাদ করায় শুক্রবার রাতে চড়বাড়িয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল সিকদারকে হাতুড়ি পেটা ও কুপিয়ে যখম করে একই ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুরুজ আহমেদ। এই ঘটনায় বরিশাল মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানায় সুরুজ ও তার ভাই রমিজসহ ১৪ জনকে নামধারী এবং ৩ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি মামলা করেছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম সাজ্জাদ।

লিখিত বক্তব্যে চরবাড়িয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ জীবন বলেন, চরবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুরুজ আহমেদ বিএনপি’র রাজনীতির সাথে পূর্বে কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। সুরুজের উত্থান  সন্ত্রাসী পানামা ফারুকের হাত ধরে। ১৯৯৯ থেকে ২০০১ সালে তিনি চরবাড়িয়া ইউনিয়নে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। ২০০২ সালে যৌথ বাহিনীর হাতে অস্ত্রসহ আটক হন এই সুরুজ। জেল থেকে মুক্ত পেয়ে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে বিএনপির এক নেতার আশীর্বাদে চরবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পদ বাগিয়ে নেন সুরুজ। ওই কমিটি বিলুপ্ত হয়েছে অনেক আগেই।

মোহাম্মদ জীবন আরও বলেন, ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর চরবাড়িয়া ইউনিয়নে দখলদারিত্ব শুরু করেন সুরুজ আহমেদ। প্রথমেই তিনি তালতলী-পাতারহাট রুটের স্পিডবোট ঘাট দখলে যান। সেখানে ব্যাপক চাঁদাবাজি শুরু করেন। ওই রুটে চলাচলকারী স্পিডবোট চালক ও মালিকরা তার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর চাঁদাবাজির অভিযোগও দেন। চরবাড়িয়া ইউনিয়নে অবৈধ বালুর ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করত নিষিদ্ধ ঘোষিত বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সৈয়দ শামসুদ্দোহা আবিদ। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকলেও সেপ্টেম্বর মাস থেকে আবিদের ড্রেজার দিয়ে বালু ব্যবসা শুরু করেন সুরুজ আহমেদ।

একই সাথে বরিশাল জেলা প্রশাসনের তালতলী বন্দরে থাকা দুইটি পুকুর দখল করে তিনি মাছ চাষ শুরু করেন। এর প্রতিবাদ জানান চরবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবকদলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন। এতে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন সুরুজ আহমেদ। সুরুজ ও তার ভাই রমিজ বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার রাতে প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্রসহ তালতলি বন্দরে বেশ কয়েকবার মহড়া দেয় ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়। এসময় চরবাড়িয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল সিকদারকে ধরে নিয়ে হাতুড়িপেটা ও চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে বন্দরে ফেলে যায়। তিনি বর্তমানে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত বিএনপি নেতার বিচারসহ দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবি জানান ছাত্রদল নেতাকর্মীরা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চরবাড়িয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি সোহাগ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সজল আহমেদ, যুবদল আহ্বায়ক বশির হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দল সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।