• ১৩ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩০শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি জটিলতা বাড়বে: খুশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো

দখিনের সময়
প্রকাশিত অক্টোবর ৯, ২০২০, ২০:৫০ অপরাহ্ণ
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি জটিলতা বাড়বে: খুশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো
সংবাদটি শেয়ার করুন...
দখিনের সময় ডেক্স:
এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা না নিয়ে জেএসসি ও এসএসসির ফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করার সিদ্ধান্ত জানার পর শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা এখন ঘুরপাক খাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির দুশ্চিন্তায়। জানুয়ারিতে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে বড় অনিশ্চয়তা আছে।
আগামী ১৫ অক্টোবর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের সঙ্গে ইউজিসির বৈঠক আছে। সেখানে ভর্তি নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা যায়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) গুচ্ছপদ্ধতিতে ভর্তির কথা বললেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একাধিক উপাচার্য এখনো কেন্দ্রীয় ভর্তির ব্যাপারে মত দিয়েছেন। করোনার বর্তমান পরিস্থিতিতে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে কি না, তা নিয়েও রয়েছে চরম অনিশ্চয়তা।
এদিকে এবারের এইচএসসি ও সমমানের ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ জন পরীক্ষার্থীর সবাই পাস করায় খুশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। যেহেতু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন সীমিত, তাই আগের তুলনায় শিক্ষার্থী দ্বিগুণ বাড়ার আশা করছে তারা। বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সভাপতি শেখ কবির হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সরকার জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ভিত্তিতে এইচএসসির যে মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমরা একে স্বাগত জানাই। কারণ করোনার মধ্যে পরীক্ষা গ্রহণ আসলেই ঝুঁকিপূর্ণ। যেহেতু এবার সব শিক্ষার্থীই পাস করছে, এতে কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী বাড়বে বলেও আমার মনে হয়।’
এসএসসির পর যারা বিভাগ পরিবর্তন করে এইচএসসিতে ভর্তি হয়েছে, তাদের মূল্যায়নের জন্য একটি পরামর্শক কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তাদের মতামতের ভিত্তিতে এই শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন হবে। কিন্তু এই কমিটি এখনো কাজ শুরু করেনি বলে জানা গেছে।
এবার যেহেতু জেএসসি ও এসএসসির ফলের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে, তাই ওই দুটি পরীক্ষার একটিতে যারা অপেক্ষাকৃত খারাপ ফল করেছে, তাদের দুশ্চিন্তাও বাড়ছে। মেডিক্যালে ভর্তি পরীক্ষায় বিজ্ঞানের বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। আবার যেসব শিক্ষার্থী বিদেশে পড়তে যায়, তাদেরও বিষয়ভিত্তিক ভালো নম্বরের প্রয়োজন হয়। কিন্তু যারা এসএসসিতে তুলনামূলক ভালো না করে এইচএসসি দিয়ে তা পূরণের প্রস্তুতি নিয়েছিল, তারা বড় সমস্যায় পড়বে। কারণ তাদের এইচএসসির ফলও অনেকটা এসএসসির মতো হবে। এতে অনেকেই উচ্চশিক্ষার কাঙ্ক্ষিত বিষয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবে না। একইভাবে বিদেশে যেতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা প্রশ্নবিদ্ধ হবে কি না, সে সংশয় থেকে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা কিভাবে মূল্যায়িত হবে, এটা আমাদের নিজস্ব ব্যাপার। শিক্ষার্থীরা বিদেশে পড়তে গেলেও নম্বর নিয়েই যাবে।’
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘কিভাবে ভর্তির কাজটি হবে, সেটি এখনই বলা সমীচীন হবে না। আমরা আশা করছি, সমন্বিত বা গুচ্ছপদ্ধতিতেই সব ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা নিতে পারব। সেই পরীক্ষাগুলো কিভাবে হবে, গুচ্ছপদ্ধতি কেমন হবে, তখনকার কভিড পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে সে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কারণ এখনো তিন মাস বাকি আছে।’
গত বছর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুচ্ছপদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার পর সব বিশ্ববিদ্যালয়কে চারটি ভাগে ভাগ করে চলতি বছর থেকে পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করে ইউজিসি। কিন্তু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যরা কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তাব দেন। তাঁরা বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা এই তিন ভাগে ভাগ করে পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু ইউজিসি শেষ পর্যন্ত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, কৃষি, প্রকৌশল ও সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে চারটি ধাপে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজনের কথা জানায়। ইউজিসি ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এই ঠেলাঠেলির মধ্যেই করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। ফলে বিষয়টি নিয়ে এখনো সিদ্ধান্তহীনতা রয়েছে।