• ১১ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৬শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পরীক্ষার ফল পরিবর্তনের আশ্বাস দিয়ে প্রতারণা

দখিনের সময়
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২১, ২২:৪৬ অপরাহ্ণ
পরীক্ষার ফল পরিবর্তনের আশ্বাস দিয়ে প্রতারণা
সংবাদটি শেয়ার করুন...

দখিনের সময় ডেক্স ॥

টাকা নিয়ে পরীক্ষার ফল পরিবর্তনের আশ্বাস দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে তরুণ গ্রেপ্তার। ফেল করা শিক্ষার্থীকে পাশ করানো আর পাশ করা শিক্ষার্থীর ফল আরও ভালোর নিশ্চয়তা।
স্কুল, কলেজ ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফেইসবুক গ্রুপে ফল পাল্টে দেয়ার এই প্রতিশ্রুতি দেয় বিশ-একুশ বছরের এক তরুণ। দ্রুত ইনবক্সে যোগাযোগ করতে বলা হয় আগ্রহীদের। সাড়া দেয় হাজারো শিক্ষার্থী। তাদেরকে টাকা পাঠাতে বলা হয় বিকাশ-রকেট নম্বরে। এরপর টাকা পাঠানো সবাইকে ফেইসবুকে ব্লক করে দেয়া হয়। এভাবে দুই বছরে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এক প্রতারক।
নরসিংদীর বিশ-একুশ বছরের এই তরুণের নাম সৈকত হোসেন ভূঁইয়া তপু। দুহাজার সতেরোতে এসএসসি পরীক্ষায় খারাপ করার পর ফেইসবুকে ফল পাল্টে দেয়ার পোস্ট দেখে যোগাযোগ করেন। ভাল ফলের আশায় দেন কয়েক হাজার টাকা।

কিন্তু ফল আর পাল্টায়নি। যেভাবে প্রতারিত হয়েছেন, একই কায়দা এবার আত্মস্থ করে তপু। পরের বছর থেকেই শুরু করে প্রতারণা। এজন্য জিমেইলে বিভিন্ন নামে প্রায় ত্রিশটি অ্যাকাউন্ট খোলে। সেসব ব্যবহার করে খোলে বিশটি ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট। প্রোফাইল পিকচারে ব্যবহার করা হয় শিক্ষামন্ত্রী, উপমন্ত্রী, পিএসসির চেয়ারম্যান এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবের ছবি।
প্রতারক সৈকত হোসেন ভূঁইয়া তপু বলেন, আমি শিক্ষামন্ত্রী কে চিনি, কিন্তু অন্যান্যদের নাম জানি না। অনেককেই দেখতাম তাদের নিয়ে ফেইসবুকে পোস্ট দিতে সেখান থেকেই তাদের ছবি নাম ব্যবহার করতাম।

শিক্ষার্থীদের বিশ্বাস অর্জনে নিজেরই অন্য আইডি থেকে ভরসা দেয় তপু। চাহিদা মত ফল পাল্টানোর প্রমাণ হিসেবে নানা জনের স্ক্রিনশট দেখায় সে। কিন্তু সেগুলো আসলে তারই মালিকানাধীন বিভিন্ন আইডি থেকে লেখা। তারপর আগ্রহীদের কাছ থেকে বিকাশ-রকেটে টাকা নেয়া হলেই তাদেরকে ফেইসবুকে ব্লক করে দেয়। এভাবে গত দুই মাসে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তপু।
প্রতারক তপু বলেন, আমি বিভিন্ন এডিট করা ছবিগুলো সংগ্রহ করে শিক্ষার্থীদের পাঠাতাম তাদের বিশ্বাস অর্জনের জন্য। এভাবে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতাম যদি কারও ফলাফল চেঞ্জ করতে হতো। তপুকে গ্রেপ্তারের পর গোয়েন্দা পুলিশ জানিয়েছে, এই তরুণের মত প্রতারক টিকে আছে শিক্ষার্থী ও তাদের বাবা-মায়ের লোভী মানসিকতার জন্য।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ গুলশান বিভাগের উপ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, এমন প্রতারকরা প্রতারণার উর্বর ক্ষেত্র পায় আমাদের কিছু লোভী অভিভাবকদের কাছ থেকে। তাদের সন্তানরাও তাদের মত লোভী হওয়ার কারণে মেধাশূন্য। তারা পড়াশুনা করে যোগ্যতা দেখিয়ে ভালো রেজাল্টের চেষ্টা করে না।

এ প্রতারণার তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ফল পাল্টানোর আশায় নিজের মেয়েকে প্রতারকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে প্রলুব্ধ করেছে কয়েকজন মা। এ ধরনের অভিভাবকদের আইনের আওতায় আনার চিন্তা করছে গোয়েন্দা পুলিশ।