ট্রেড লাইসেন্সের বয়স মাত্র এক মাস। এ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ছিল না স্বাস্থ্য খাতে কাজের পূর্ব অভিজ্ঞতা। এমন একটি প্রতিষ্ঠানকে সম্প্রতি ২৯ কোটি ৭০ লাখ টাকার করোনা পরীক্ষার কিট সরবরাহের কার্যাদেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোর ডিপো বা কেন্দ্রীয় ঔষধাগার। এর আগে আরও তিনটি টেন্ডারে করোনা পরীক্ষার কিট সরবরাহের কাজ পায় প্রতিষ্ঠানটি। এ ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
এমন অনভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক গণমাধ্যমকে বলেন, এ প্রতিষ্ঠানটি অনেকটা নিজেদের মতো করেই কাজ করে। কেনাকাটার ক্ষেত্রে আমি বা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে হস্তক্ষেপ বা নির্দেশনা দেওয়া হয় না। তবে আমি মনে করি কেনাকাটার ক্ষেত্রে সরকারি নিয়ম মেনে চলা উচিত। এ ক্ষেত্রে যদি কোনো অনিয়ম হয়ে থাকে তার দায়িত্ব সংশ্লিষ্টদেরই নিতে হবে।
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে গত ৭ জুলাই ‘জিএস বায়োটেক’ নামের বিপরীতে একটি ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করা হয়। ব্যবসার ধরন হিসাবে যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে মেডিক্যাল ইকুইপমেন্ট ও মেডিক্যাল প্রডাক্ট আমদানিকারক ও সরবরাহকারী। স্বত্বাধিকারীর নাম সৈকত সাহা। প্রতিষ্ঠানটি ২০২০ সালের নভেম্বরে ৮ কোটি ২৫ লাখ টাকার একটি কাজ পায়, তখন কার্যাদেশে লেখা ছিল ‘জিএস বায়োটেক, সিস্টার কনসার্ন অব জিএস গার্মেন্টস’।
প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন গার্মেন্টস ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। কিন্তু গত বছরের ৩ জুন সিএমএসডির প্রশাসনে পরিবর্তন এলে তারা স্বাস্থ্যের মতো একটি সংবেদনশীল খাতের ঠিকাদারি শুরু করে। কোনো ধরনের অভিজ্ঞতা ছাড়াই এ পর্যন্ত প্রায় ১০০ কোটি টাকার আরটিপিসিআর টেস্ট কিট, পিপিইসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদির কাজ করেছেন। প্রায় ১ বছর সিএমএসডিতে কিটসহ অন্যান্য মালামাল সরবরাহ করা হয়েছে জিএস গার্মেন্টসের সিস্টার কনসার্ন হিসেবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকারি সরবরাহ কাজে কোনো প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করার ক্ষেত্রে তাদের অভিজ্ঞতার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে মূল্যায়ন করা হয়ে থাকে। তবে নতুন লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান জিএস বায়োটেকের করোনা কিটের রিয়েজেন্ট নিয়ে কাজ করার কোনো অভিজ্ঞতাই নেই। প্রতিষ্ঠানটি সরাসরি গার্মেন্টস ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এর আগেও প্রতিষ্ঠানটি একই পদ্ধতিতে পারসোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) ও আরটিপিসিআর কিট সরবরাহ করেছে।