শতভাগ জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনে আইনি কাঠামো শক্তিশালী করার আহ্বান বিশেষজ্ঞদের
দখিনের সময়
প্রকাশিত নভেম্বর ৬, ২০২৫, ১৭:২৩ অপরাহ্ণ
সংবাদটি শেয়ার করুন...
দখিনের সময় ডেস্ক:
বাংলাদেশ সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে শতভাগ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিলেও, বর্তমান আইনের সীমাবদ্ধতা ও বাস্তবায়নে দুর্বলতা এ লক্ষ্য অর্জনের পথে বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আইন সংশোধন ও কঠোর বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ ও সাংবাদিকরা। রাজধানীর বিএমএ ভবনে আয়োজিত “বাংলাদেশে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন: অগ্রগতি, প্রতিবন্ধকতা ও করণীয়” শীর্ষক দুই দিনব্যাপী কর্মশালায় (৫ ও ৬ নভেম্বর) এসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই)-এর সহযোগিতায় প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) আয়োজিত এ কর্মশালায় বিভিন্ন গণমাধ্যমের ৩০ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন।
কর্মশালায় জানানো হয়, বর্তমানে দেশে জন্ম নিবন্ধনের হার মাত্র ৫০ শতাংশ এবং মৃত্যু নিবন্ধনের হার ৪৭ শতাংশ—যেখানে বৈশ্বিক গড় যথাক্রমে ৭৭ ও ৭৪ শতাংশ। বক্তারা বলেন, নিবন্ধন না থাকলে শিশুশ্রম, বাল্যবিবাহ ও পরিচয়হীন নাগরিকত্বের ঝুঁকি বাড়ে। জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন শুধু প্রশাসনিক প্রক্রিয়া নয়; এটি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, ভোটাধিকার, উত্তরাধিকার ও সামাজিক সুরক্ষার মতো মৌলিক অধিকারের ভিত্তি। তারা মনে করেন, নিবন্ধন একটি দেশের সুশাসন ও টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনার অপরিহার্য অংশ।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, বর্তমানে আইন অনুযায়ী জন্ম ও মৃত্যুর তথ্য প্রদানের দায়িত্ব পরিবারকে দেওয়া হলেও স্বাস্থ্য খাতের ভূমিকা ঐচ্ছিক রাখা হয়েছে, যা বড় সীমাবদ্ধতা। অথচ দেশের প্রায় ৬৭ শতাংশ শিশু স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জন্মগ্রহণ করে। তাই অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো বাংলাদেশেও জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন, ২০০৪ সংশোধন করে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের ওপর নিবন্ধনের আইনগত দায়িত্ব অর্পণ করা প্রয়োজন। কর্মশালায় বক্তারা আরও জোর দেন নিবন্ধনকারীদের দক্ষতা বৃদ্ধি, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং আন্তঃখাত সমন্বয় জোরদারের ওপর। জিএইচএআই বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মদ রূহুল কুদ্দুস বলেন, “২০৩০ সালের মধ্যে শতভাগ নিবন্ধন নিশ্চিত করতে হলে আইন সংস্কার ও বাস্তবায়ন দুটোই একসাথে জোরদার করতে হবে।”