• ১৬ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যৌন নিপীড়ন ও ইভ টিজিংয়ের শাস্তি

দখিনের সময়
প্রকাশিত মার্চ ১৪, ২০২৫, ১৮:২২ অপরাহ্ণ
যৌন নিপীড়ন ও ইভ টিজিংয়ের শাস্তি
সংবাদটি শেয়ার করুন...
দখিনের সময় রিপোর্ট:
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের একটি ধারায় যৌন নিপীড়নের সংজ্ঞা ব্যাখ্যা করে এ অপরাধের শাস্তি উল্লেখ করা হয়েছে। ওই ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি অবৈধভাবে তার যৌন কামনা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে তার শরীরের যে কোনো অঙ্গ বা বস্তু দ্বারা কোনো নারী বা শিশুর যৌন অঙ্গ বা অন্য কোনো অঙ্গ স্পর্শ করে বা কোনো নারীর শ্লীলতাহানি করে তাহলে এই কাজ যৌন পীড়ন হবে।
এজন্য দায়ী ব্যক্তি অনধিক ১০ বছর, কিন্তু ন্যূনতম তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন। আইনজীবীরা বলছেন, যদি কোনো ব্যক্তি অন্যদের বিরক্তি সৃষ্টি করে, কোনো প্রকাশ্য স্থানে কোনো অশ্লীল কাজ করে অথবা প্রকাশ্য স্থানে কোনো অশ্লীল গান বা পদাবলি গায়, আবৃত্তি করে বা উচ্চারণ করে তাহলেও আইনে শাস্তির বিধান রয়েছে।
দণ্ডবিধির আইনের একটি ধারা অনুযায়ী অন্যদের বিরক্তি সৃষ্টিকারী ব্যক্তি তিন মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন বলে বলা হয়েছে। এই আইনের আরেকটি ধারায় বলা হয়েছে, যদি কেউ কোনো নারীর শ্লীলতাহানির উদ্দেশ্যে কথা, অঙ্গভঙ্গি বা কোনো কাজ করে, তাহলে দায়ী ব্যক্তিকে এক বছর পর্যন্ত যে কোনো মেয়াদের সাজা বা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে। তবে আইনের এসব ধারার প্রয়োগ একেবারেই নেই বললেই চলে বলে জানান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন। তিনি বলেন, ‘আইনজীবী হিসেবে আমার ১২ বছরের ক্যারিয়ারে আইনের এই দুই ধারার প্রয়োগ একটা মামলাতেও হতে দেখিনি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মেয়েদের ওপর দোষ চাপানো হয়।’
এছাড়া ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অধ্যাদেশেও ইভ টিজিং বা উত্ত্যক্তের বিষয়ে শাস্তির কথা বলা হয়েছে। এই অধ্যাদেশের একটি ধারার সংজ্ঞায় নারীকে অপমান বা বিরক্ত করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘যদি কেউ কোনো রাস্তায় বা পাবলিক প্লেস থেকে স্বেচ্ছায় এবং অশালীনভাবে নিজের শরীর এমনভাবে প্রদর্শন করে যে কোনো বাড়ি বা ভবনের ভেতর থেকে কোনো নারী দেখতে পায়, অথবা স্বেচ্ছায় কোনো রাস্তায় বা পাবলিক প্লেসে কোনো নারীকে অপমান বা বিরক্ত করে বা তার পথ রোধ করে।’ অথবা ‘কোনো রাস্তায় বা পাবলিক প্লেসে কোনো অশালীন ভাষা ব্যবহার করে, অশ্লীল আওয়াজ, অঙ্গভঙ্গি বা মন্তব্য করে কোনো নারীকে অপমান বা বিরক্ত করে, তবে সেই ব্যক্তি এক বছরের কারাদণ্ড দণ্ডিত হবেন, অথবা দুই হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন’ বলে এই পুলিশ অধ্যাদেশে বলা হয়েছে।
এই অধ্যাদেশের আরেকটি ধারায় সমাজে অশালীন বা উচ্ছৃঙ্খল আচরণের শাস্তি হিসেবে তিন মাস মেয়াদ পর্যন্ত কারাদণ্ড বা ৫০০ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের কথা বলা হয়েছে। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনানুযায়ী, ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে কোনো অপরাধ হয়ে থাকলে তখনই অপরাধ আমলে নিয়ে শাস্তি দেয়ার বিধান রয়েছে বলে জানান আইনজীবীরা। এই আইনে সর্বোচ্চ দুই বছর শাস্তি দেয়ার বিধান রয়েছে।