এক সময় দেশের সব ডিগ্রি কলেজ পরিচালিত হতো ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। ১৯৯২ সালে সরকারি কলেজগুলোকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত করে তৎকালীন বিএনপি সরকার। এরপর এ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিধিও বাড়ানো হয়। কিন্তু বিপুল সংখ্যক কলেজ সামলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে।
সময়মতো পরীক্ষা না নেওয়া বা বিলম্বে ফল প্রকাশ করায় দেখা দেয় দীর্ঘ সেশনজট। অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে দেখা দেয় স্থবিরতা। তখন সনদের মান নিয়েও প্রশ্ন ওঠায় সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামেন। ঠিক ওই সময় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হিসেবে নিয়োগ পান আরেফিন সিদ্দিকের চির প্রতিদ্বন্দ্বী অধ্যাপক হারুন।
২০১২ সালে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক যখন ঢাবির ভিসি তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (উপ-উপাচার্য) ছিলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ। ওই সময় তাদের দ্বন্দ্ব বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিল ওপেন সিক্রেট। অভিযোগ রয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থাকাকালে হারুনের ছেলেকে জিন প্রকৌশল বিভাগে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেননি আরেফিন। সিন্ডিকেট নির্বাচনে নীল দলের হার, বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন বিষয়ে মতানৈক্য ও দ্বন্দ্বের জেরে ২০১২ সালের ৫ জুন উপ-উপাচার্যের পদ থেকে পদত্যাগ করেন হারুন। ২০১৩ সালের মার্চে হারুন-অর-রশিদকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য করা হয়। এরপর দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের মধ্যে আরেফিন-হারুনপন্থি বিরোধ ছিল প্রকাশ্যে। হারুনের কাজ-ক্ষমতা ও পদচারণা কমাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সাত কলেজকে ঢাবির অধিভুক্ত করার প্রস্তাব দেন আরেফিন। একই সঙ্গে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সঙ্গে সুসম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে সেই সিদ্ধান্ত পক্ষে নিয়ে আসেন আরেফিন।