বাংলাদেশের বাজারে আবারও পুরোনো খেলা—বৃষ্টি, উৎসব, আমদানি বন্ধ কিংবা সামান্য ঘাটতি—যে কোনো অজুহাতেই দাম বাড়ানোর মহোৎসব! এবার টার্গেটে কাঁচামরিচ। দেশের বিভিন্ন জেলায় ১২০ থেকে ১৬০ টাকায় ক্রয় করা মরিচ রাজধানীতে এসে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকার ওপরে। টানা বৃষ্টির দোহাই দিয়ে ব্যবসায়ীরা নিজেদের পকেট ভারী করলেও কৃষকরা পাচ্ছেন না ন্যায্য দাম। বগুড়া, গাইবান্ধা, রংপুরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে চাষিরা লোকসানে মরিচ বিক্রি করছেন, আর ঢাকায় সিন্ডিকেট চক্র সেই একই মরিচ কয়েকগুণ দামে বিক্রি করছে—এ যেন “ঝাঁজের পেছনে জুলুমের হিসাব।”
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে রাজধানীর কারওয়ান বাজার, শ্যামবাজার, সূত্রাপুরে কাঁচামরিচের দাম এক পর্যায়ে কেজিপ্রতি ৩২০ টাকায় উঠে যায়। পরে সরবরাহ কিছুটা বাড়লেও দাম এখনো ২৫০ টাকার নিচে নামেনি। পাইকাররা বলছেন, ভারত থেকে মরিচ আমদানি বন্ধ থাকায় দাম বেড়েছে; তবে ভোক্তারা মনে করেন এটি পুরোটাই পরিকল্পিত সিন্ডিকেটের খেলা। তাদের অভিযোগ—বৃষ্টি বা উৎসবের মতো অজুহাত তৈরি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা বারবার বাজারকে অস্থিতিশীল করে তুলছেন। কৃষক বিক্রি করছেন ১২০ টাকায়, আর সেই একই মরিচ শহরে এসে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়—এই বৈষম্যই প্রমাণ করে লাভের পুরো বোঝা গরিব কৃষকের ঘাড় থেকে সরিয়ে ভোক্তার পকেটে চাপিয়ে দিচ্ছে একদল মুনাফাখোর।
কৃষি বিভাগ বলছে, এবার বৃষ্টির কারণে কিছু এলাকায় মরিচক্ষেত নষ্ট হলেও নতুন ফসল উঠতে আর বেশি দেরি নেই। স্থানীয়ভাবে হাইব্রিড জাতের মরিচ রোপণ শুরু হয়েছে, যা এক মাসের মধ্যেই বাজারে আসবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, প্রশাসনের নিয়মিত নজরদারি না থাকায় সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য থামছে না। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও কৃষি বিপণন বিভাগ যদি নির্ধারিত দামে বিক্রির ওপর কঠোর নজরদারি করে, তবে বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরতে সময় লাগবে না।