মহামারি করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের হানায় অনেকটাই বিপর্যস্ত বাংলাদেশ। প্রতিদিনই হচ্ছে মৃত্যু আর শনাক্তের রেকর্ড। এসবের মধ্যেই এবার রাজধানীতে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। গত ১১ দিনে সারা দেশে ১৮৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। দ্রুত এ সংখ্যা বাড়তে থাকলে করোনার মধ্যে ডেঙ্গু পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে ধারণা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত দেশে মোট ৩৯১ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) একদিনেই ভর্তি হয়েছে ৮১ জন। তবে এ বছর এখনো ডেঙ্গুতে মারা যাওয়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
এ বছর শনাক্ত হওয়া ৩৯১ জনের মধ্যে শুধু জুনেই ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে ২৭১ জনের, যা চলতি বছরে মোট শনাক্তের ৬৯ শতাংশ। গত বছরের জুন মাসে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছিল ২০ জনের। সে হিসাবে এ বছরের জুন মাসে রোগী বেড়েছে সাড়ে ১৩ গুণ।
এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক ও মুখপাত্র অধ্যাপক মো. নাজমুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, গত কিছুদিন ধরে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে গেছে। তাই আমাদের সবাইকে বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখতে হবে। কোথাও যেন স্বচ্ছ পানি না জমে থাকে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশে জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসকে বর্ষা মৌসুম ধরা হয়। আর দেশে ডেঙ্গু প্রভাব বিস্তার করে সাধারণত এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত। তবে করোনাভাইরাস আর ডেঙ্গুর উপসর্গ কাছাকাছি হওয়ায় সবাইকে আরও বেশি সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের সব ধরনের তৎপরতা চালু আছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ডেঙ্গু জ্বর দেশে সকল রেকর্ড ভেঙেছিল ২০১৯ সালে। সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্যানুযায়ী সে বছর ডেঙ্গুতে প্রাণ হারিয়েছিলেন প্রায় ৩০০ জন মানুষ। যদিও সরকারি হিসেবে এ সংখ্যা ছিল ১৭৯। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, ওই বছর সারা দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল এক লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন।
এদিকে ডেঙ্গু শনাক্তে সব ধরনের পরীক্ষার সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডেঙ্গুর মূল পরীক্ষা এনএস১ সর্বোচ্চ খরচ ৫০০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।