যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্কনীতি নিয়ে বাংলাদেশের রফতানিকারক মহলে উৎকণ্ঠা বাড়ছে, বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্প ও অন্যান্য প্রধান রফতানি পণ্যের বাজারে। এ প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দিয়ে শুল্ক হ্রাসের আহ্বান জানাবেন বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। রোববার (৬ এপ্রিল) বিকেলে ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, “আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই দুটি চিঠি পাঠানো হবে— একটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে, অন্যটি বাণিজ্য উপদেষ্টা ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভের (USTR) কাছে।” শফিকুল আলম আরও বলেন, “আমরা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশ সহজ করতে এবং বাণিজ্য বাড়াতে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক দুটি পথেই কাজ করছি।”
ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, “ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন শুল্কনীতিকে আমরা একপ্রকার সুযোগ হিসেবেই দেখছি।” তার মতে, ২০২৫ সালকে ‘সংস্কারের বছর’ হিসেবে ধরে নেওয়া হয়েছে এবং আসন্ন ইনভেস্টমেন্ট সামিটে নতুন বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশ্বের কাছে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছানো হবে। বিডার পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা এমন একটি কাঠামো তৈরির চেষ্টা করছে, যাতে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ে এবং দেশীয় শিল্পও বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম হয়।
এদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা যেসব পণ্যে শুল্ক ছাড় দেয়া সম্ভব, সেগুলোর সম্ভাব্য তালিকা তৈরির কাজ চলছে। প্রাথমিকভাবে দেখা গেছে, আমদানি করা কিছু পণ্যের ওপর শুল্কহার ২৬ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত, যার মধ্যে রয়েছে জেনারেটর, ভালভ, কৃষি পণ্য, কাঁচামাল ও কিছু যন্ত্রপাতি। তবে সামগ্রিকভাবে এসব পণ্যের গড় প্রভাবিত শুল্কহার ৫ শতাংশেরও নিচে বলে জানিয়েছে এনবিআর। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এনবিআর কর্মকর্তারা জানান, এমন সব পণ্যের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে, যেগুলোর ওপর শুল্ক হ্রাস করা হলেও রাজস্বে বড় ধাক্কা আসবে না।